শুক্রবার বৈঠকে অনন্ত মহারাজ ও নরেন্দ্র মোদী। —নিজস্ব চিত্র।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে সাক্ষাতের ন’দিনের মাথায় বুধবার দিল্লিতে অমিত শাহের সঙ্গে বৈঠকে বসেন কোচবিহার অনন্ত মহারাজ। তার ঠিক দু’দিন পরে শুক্রবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে বৈঠক করলেন বিজেপির রাজ্যসভা সাংসদ। তবে কী নিয়ে পর পর দুই বৈঠক, তা নিয়ে কিছু বলতে রাজি নয় তিনি। বৈঠকের কথা স্বীকার করে অনন্ত বলেন, ‘‘দু’জনের সঙ্গেই সৌজন্যমূলক সাক্ষাৎ হয়েছে। আর যে বিষয়েই আলোচনা হয়ে থাকুক সেটা সফল হয়েছে।’’
প্রসঙ্গত, কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস দুর্ঘটনায় আহতদের দেখতে শিলিগুড়ি যাওয়ার পরে সেখান থেকে কোচবিহারে যান মমতা। গত ১৮ জুন কোচবিহারে মদনমোহন মন্দিরে পুজো দিয়েই মমতা যান চকচকায়। সেখানেই বাড়ি অনন্তের। মমতাকে স্বাগত জানাতে অনন্ত রাজবংশী উত্তরীয় আর ঐতিহ্যবাহী গুয়াপান দেন মুখ্যমন্ত্রীর হাতে। এর পরেই নানা জল্পনা তৈরি হয়। বিজেপি এমন আশঙ্কাও করে যে, অনন্ত তৃণমূলে চলে যেতে পারেন। ২১ জুলাই তৃণমূলের ‘শহিদ দিবস’ পালন মঞ্চে অনন্তকে দেখা যেতে পারে বলেও জল্পনা তৈরি হয়। এ দিন সেই জল্পনা উড়িয়ে দিয়ে অনন্ত বলেন, ‘‘এ সব জল্পনার কোনও উত্তর হয় না। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী আমার বাড়িতে গিয়েছিলেন। আমি স্বাগত জানিয়েছি। এর বেশি তো কিছু নয়।’’ একই সঙ্গে শাহ ও মোদীর সঙ্গে সাক্ষাৎ নিয়ে তিনি বলেন, ‘‘আমি দেশের প্রধানমন্ত্রী এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেছি। এক জন বিজেপি কর্মী এবং সাংসদ হিসাবে এতে নতুন কী রয়েছে? এর সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর আমার বাড়িতে যাওয়ার কোনও সম্পর্কই নেই।’’ একই সঙ্গে তিনি প্রশ্নের সুরে বলেন, ‘‘একুশে জুলাই তৃণমূলের কর্মসূচিতে আমি যেতে যাব কেন?’’
প্রসঙ্গত, লোকসভা নির্বাচনের আগে আগে অনন্তের ইন্ধনে ‘পৃথক রাজ্য না হলে বিজেপিকে ভোট নয়’— কোচবিহারে এমন প্রচার শুরু হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছিল। তার প্রেক্ষিতে শাহ ফোন করেন, অনন্তকে ‘ধমক’ দিয়ে ওই প্রচার বন্ধ করতে বলেন। সেই সময়েই অনন্ত বাজেট অধিবেশনের অবসরে শাহের সঙ্গে দেখা করার কথা জানিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন, ‘‘এখানকার মানুষ পৃথক রাজ্যের দাবি নিয়ে ক্ষুব্ধ। বাজেট অধিবেশনের সময়েই আমি শাহের সঙ্গে দেখা করে বিষয়টা উত্থাপন করেছিলাম। তখন উনি বিষয়টা দেখবেন বলে জানান। কিন্তু তার পরে এখনও পর্যন্ত কিছু হয়নি। এটা নিয়ে কারও মধ্যে ক্ষোভ জন্মেছে বা ভোট বয়কটের ডাক উঠেছে বলে আমি শুনিনি। সেটা হলেও আমার সঙ্গে তার কোনও যোগাযোগ নেই। শাহ আমাকে প্রচার বন্ধ করতে বলছেন। কিন্তু আমি যেটা জানিই না, সেটা বন্ধ করব কী করে?’’
প্রসঙ্গত, অনন্তের ‘খাস’ এলাকা কোচবিহারে এ বার হেরেছে বিজেপি। অনন্তকে পাশে নিয়ে ২০১৯ সালে ৫৪ হাজার ভোটে জয়ী নিশীথ প্রামাণিক হেরেছেন ৩৯ হাজারের ব্যবধানে। ভোটের প্রচারে অনন্তকে দেখাও যায়নি। আর ভোটপর্ব মিটতেই মমতার সঙ্গে সাক্ষাৎ নিয়ে নানা প্রশ্ন ওঠে। তবে সে সবকে যে তিনি গুরুত্বই দিচ্ছেন না বলে জানান অনন্ত। পৃথক রাজ্য নিয়েই বিজেপি তথা কেন্দ্রীয় সরকারের দুই প্রধান মোদী ও শাহের সঙ্গে কথা হয়েছে কি না, সে প্রশ্নেরও উত্তর দিতে চাননি অনন্ত।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy