মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিধায়কদের বেতন বাড়ালে তা নিতে চাননি বিজেপি বিধায়করা। —ফাইল চিত্র।
৭ সেপ্টেম্বর বিধানসভায় বিধায়কদের বেতন বৃদ্ধির সিদ্ধান্তের কথা ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গেই বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী জানিয়েছিলেন, বর্ধিত বেতন নেবেন না গেরুয়া শিবিরের বিধায়কেরা। কিন্তু খোঁজখবর নিয়ে বিজেপির পরিষদীয় দল জেনেছে, বৃদ্ধি হওয়া বেতন না নেওয়ার কোনও আইন বা নিয়ম বিধানসভায় নেই। তাই ইচ্ছা না থাকলেও বর্ধিত বেতন নিতেই হবে বিধানসভার প্রধান বিরোধী দলের বিধায়কদের। বিজেপির পরিষদীয় দলের বেশির ভাগ সদস্যই প্রথম বারের বিধায়ক। হাতেগোনা এমন কিছু বিধায়ক রয়েছেন যাঁরা আগেও বিধানসভার সদস্য ছিলেন। তাঁরাও এই বিষয়ে অবগত ছিলেন না। কিন্তু গত সপ্তাহে মুখ্যমন্ত্রী বেতন বৃদ্ধির সিদ্ধান্তের কথা ঘোষণা করার পর, যখন বিরোধী দলনেতা তা প্রত্যাখ্যান করার ঘোষণা করেন, তার পরেই বিধানসভার বেতন সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে কয়েক জন বিধায়ক খোঁজখবর নেন। কী ভাবে বর্ধিত বেতন ফেরত দেওয়া যায়, সে কথাই মূলত জানতে চাওয়া হয়। কিন্তু, বিধানসভার সচিবালয় থেকে ওই বিধায়কদের জানিয়ে দেওয়া হয় বর্ধিত বেতন ফিরিয়ে দেওয়ার কোনও নিয়ম নেই। তাই বর্ধিত বেতন নিতেই হবে।
উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রী জানান, মন্ত্রী থেকে বিধায়ক সব স্তরেই ৪০ হাজার টাকা করে বেতন বৃদ্ধি করছে সরকার। সরকারের বেতন কাঠামো অনুযায়ী, বিধায়কদের বেতন প্রতি মাসে ১০ হাজার টাকা থেকে বেড়ে হল ৫০ হাজার টাকা। রাজ্যের প্রতিমন্ত্রীরা এত দিন মাসে ১০ হাজার ৯০০ টাকা করে পেতেন। এখন থেকে তাঁরা পাবেন ৫০ হাজার ৯০০ টাকা। এ ছাড়া, রাজ্যে যে পূর্ণমন্ত্রীরা আছেন, তাঁদের বেতন ছিল ১১ হাজার টাকা। তাঁরা বেতন বাবদ এ বার থেকে ৫১ হাজার টাকা পাবেন।
রাজ্যের বিরোধী দলনেতা এবং প্রতিমন্ত্রী, পূর্ণমন্ত্রীরা এত দিন বেতন এবং ভাতা মিলিয়ে ১ লক্ষ ১০ হাজার টাকা পেতেন। এ বার থেকে তাঁরা পাবেন প্রায় দেড় লক্ষ টাকা। ঘটনাচক্রে, মুখ্যমন্ত্রী যখন এই ঘোষণা করেছিলেন তখন বিধানসভার অধিবেশন কক্ষত্যাগ করে বেরিয়ে গিয়েছিলেন বিজেপি বিধায়কেরা। তাই সেই ঘোষণার পর বিরোধী দলনেতা শুভেন্দুর কাছে এই সংক্রান্ত বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে, তিনি বৃদ্ধি হওয়া বেতন নেবেন না বলে জানিয়ে দেন। তবে আগামী অক্টোবর মাস থেকেই বৃদ্ধি হওয়া বেতন ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে পাবেন পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার নির্বাচিত সদস্যেরা। এ প্রসঙ্গে বিধানসভার এক আধিকারিক জানিয়েছেন, যে হেতু মুখ্যমন্ত্রী বেতন বাড়িয়েছেন, তাই বেতন সব বিধায়ককে নিতে হবে। যদি বেতন না বাড়িয়ে ভাতা বৃদ্ধি করা হত, তবে কৌশলে ভাতা না নিতে পারতেন বিজেপি বিধায়কেরা। এ ক্ষেত্রে সেই সুযোগ নেই বিজেপি বিধায়কদের কাছে।
উল্লেখ্য, এর আগে ২০১৭ সালের মার্চ মাসে বাজেট অধিবেশনে বিধায়কদের বেতন বৃদ্ধি করা হয়েছিল। সেই সময়েও বৃদ্ধি হওয়া বেতনের অংশ না নেওয়ার কথা ঘোষণা করেছিলেন তৎকালীন যাদবপুরের সিপিএম বিধায়ক তথা বাম পরিষদীয় দলনেতা সুজন চক্রবর্তী। প্রতিবাদে চিঠি লিখে বর্ধিত বেতন না নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন বাম বিধায়কেরা। কিন্তু শেষ পর্যন্ত নিয়ম না থাকায় বৃদ্ধি হওয়া বেতন নিতে হয়েছিল বাম বিধায়কদের। সেই সময় বামেদের যুক্তি না মেনে তৎকালীন পরিষদীয় মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় তাদের কটাক্ষই করেছিলেন। সরকার পক্ষের দাবি ছিল, বিধানসভার এনটাইটেলমেন্ট কমিটিতে বাম বিধায়কেরা ছিলেন। সেই কমিটি বেতন বৃদ্ধির সুপারিশ করার পরে বিধানসভায় প্রতিবাদ যুক্তিহীন। কিন্তু এ বার কোনও কমিটির সুপারিশ নয়, একক সিদ্ধান্তে বিধায়কদের বেতন বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত নিয়েছেন মমতা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy