রাজভবনের সিঁড়িতে বসে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন বিজেপি বিধায়কেরা। — নিজস্ব চিত্র।
রাজ্যের অন্তর্বর্তী বাজেট এবং সন্দেশখালি পরিস্থিতি নিয়ে উত্তেজনা ছড়াল বিধানসভায়। ওয়াক আউট করলেন বিজেপি বিধায়কেরা। বিধানসভা থেকে মিছিল করে তাঁরা রাজভবনে গিয়েছেন। সেখানে রাজ্যপালের দফতরে সন্দেশখালির পরিস্থিতি নিয়ে একটি স্মারকলিপি জমা দেওয়ার কথা বিজেপির।
বৃহস্পতিবার বিধানসভায় রাজ্যের অন্তর্বর্তী বাজেট পেশ করেছেন অর্থ প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। আগেই সেই বাজেটের সমালোচনা করেছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। শনিবার সেই বাজেট নিয়ে বিধানসভায় আলোচনার সময়ে শুভেন্দুকে ‘চোর’ বলে আক্রমণ করেন তারকেশ্বরের তৃণমূল বিধায়ক রামেন্দু সিংহ রায়। সেই আক্রমণের পাল্টা দেন শুভেন্দুও। তাঁর বিরুদ্ধে কুরুচিকর আক্রমণের অভিযোগ উঠেছে। শুভেন্দুর কথা শুনে তাঁর দিকে তেড়ে যান রামেন্দু। মন্ত্রী অরূপ এবং বিজেপি পরিষদীয় দলের মুখ্যসচেতক মনোজ টিগ্গা পরিস্থিতি সামাল দিয়ে তাঁকে তাঁর জায়গায় ফিরে যেতে বলেন। বিধানসভার পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় দুই বিধায়ককেই সতর্ক করেন। বিধানসভার মর্যাদা বজায় রাখতে অনুরোধ করেন।
শুভেন্দুর বিরুদ্ধে কুরুচিকর আক্রমণের অভিযোগ জানিয়ে স্পিকারের কাছে গিয়েছিলেন বিধায়ক রামেন্দু। পরে তিনি বলেন, ‘‘বাজেট নিয়ে সকলে নিজেদের বক্তব্য জানাচ্ছিলেন। আমি কেন্দ্রকে চোর বলেছি। উনি তার উত্তরে আমাকে কুরুচিকর আক্রমণ করেন। খারাপ ভাষায় কথা বলেন। আমি তাই উত্তেজিত হয়েছি। আমি তো কোনও শালীনতা লঙ্ঘন করিনি। উনি বাংলাকে কলুষিত করছেন। আমি স্পিকারের কাছে এর প্রতিবাদ করেছি। স্পিকার জানিয়েছেন, এ ভাবে চলতে থাকলে কারও বক্তব্য আর শোনা হবে না।’’
শনিবার শুভেন্দু রাজ্য বাজেটের একাধিক ত্রুটি তুলে ধরেন বিধানসভায়। সেই সঙ্গে দলের তরফে দাবিগুলি জানান অর্থ প্রতিমন্ত্রীকে। তাঁর দাবি, কেন্দ্রীয় হারে ডিএ দিতে হবে রাজ্যের সরকারি কর্মচারীদের। অসমের মতো মহিলাদের ২,৫০০ টাকা দিক বাংলার সরকারও। রাজস্থানের মতো ৪৫০ টাকায় গ্যাস দেওয়ার কথাও বলেন তিনি। সেই সঙ্গে জানান, উত্তরপ্রদেশের মতো সাধারণ মানুষকে সরকারের তরফে একটি করে সিলিন্ডার বিনামূল্যে দেওয়ার কথা ঘোষণা করুক সরকার। শুভেন্দুর ভাষণের শেষে বিজেপির তরফ থেকে স্লোগান ওঠে, ‘‘আগলি বার ৪০০ পার’’।
তৃণমূল বিধায়ক পার্থ ভৌমিক এই প্রস্তাবগুলি প্রধানমন্ত্রীর দফতরে জমা দেওয়ার পরামর্শ দেন। এর পরেই সভায় বলতে ওঠেন মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস। বিজেপি বিধায়কেরা বিধানসভা থেকে ওয়াক আউট করেন। বাইরে গিয়ে তাঁরা বিক্ষোভ দেখান। সন্দেশখালির পরিস্থিতি নিয়ে একাধিক অভিযোগ তুলে ধরেন শুভেন্দুরা। সেখানে মহিলাদের উপর অত্যাচার করা হচ্ছে বলে দাবি করেন তাঁরা। সেই সংক্রান্ত স্মারকলিপি নিয়ে রাজভবনে যায় বিজেপির মিছিল। রাজ্যপাল বর্তমানে রাজ্যের বাইরে আছেন। তাঁর দফতরে স্মারকলিপি জমা দেওয়া হয়। তার পর রাজভবনের সিঁড়িতে বসে প্ল্যাকার্ড হাতে বিক্ষোভ দেখায় বিজেপি।
রাজভবনের বাইরে শুভেন্দু সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বলেন, ‘‘সন্দেশখালিতে মহিলাদের উপর অত্যাচার করেছে তৃণমূলের লোকেরা। ওঁরা সংবাদমাধ্যমের সামনেই সব কথা বলেছে। আমরা সে সব কথা সারা বাংলায় পৌঁছে দেব। এই সরকারকে উৎখাত করব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy