বিজেপি সাংসদে জয়ন্ত রায়। —ফাইল ছবি।
বানভাসি তিস্তা নদীকে নিয়ন্ত্রণে আনার ‘দায়িত্বভার’ নিয়ে এ বার নতুন বিতর্ক বাধতে চলেছে জলপাইগুড়ির বিজেপি সাংসদের একটি দাবি ঘিরে। রবিবার তিনি দাবি করেছেন, রাজ্য সরকার না পারলে তিস্তায় বন্যা, ভাঙন আটকানোর কাজ কেন্দ্রের ‘ব্রহ্মপুত্র বোর্ড’ করে দেবে। এমনই একটি প্রস্তাব নাকি রাজ্যের সেচ দফতরকেও পাঠানো হয়েছে বলে সাংসদের দাবি। তিনি জানান, ‘ব্রহ্মপুত্র বোর্ডে’র কাছ থেকে এ নিয়েলিখিত প্রস্তাবও পাঠানো হয়েছে রাজ্যের সেচ দফতরে। যদিও রাজ্যের এক সেচ কর্তার পাল্টা দাবি, এমন কোনও প্রস্তাবের কথা সরকারি ভাবে তাঁদের জানা নেই। বরং ওই শীর্ষ সেচ কর্তার মন্তব্য, “ব্রহ্মপুত্র বোর্ডের বৈঠকে তিস্তা তিস্তা বলে আমাদের গলা ব্যথা হয়ে যায়। অথচ, বরাদ্দ মেলে না। ব্রহ্মপুত্র বোর্ড একাই কাজ করে দেবে, সে কথা শুনে রূপকথার মতো মনে হচ্ছে!”
গত বছর সিকিমে বিপর্যয়ের পরে তিস্তা নদী গতিপথ বদলেছে। তিস্তার নদীখাতও উঁচু হয়ে গিয়েছে। ফলে এ বছর বর্ষার গোড়া থেকেই তিস্তার বিভিন্ন এলাকায় বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। ভেঙেছে তিস্তার বাঁধ এবং একাধিক স্পার। একাধিক এলাকায় নদীগর্ভে বসত বাড়ি ও চাষজমি তলিয়ে গিয়েছে। গত বৃহস্পতিবার সংসদে তিস্তা নিয়ে সরব হয়েছিলেন সাংসদ জয়ন্ত রায়। তিনি সংসদে দাবি করেছিলেন, তিস্তা নিয়ে কেন্দ্রের টাকায় বন্যা আটকানোর জন্য কাজ হচ্ছে না। বরং টাকা অপচয় হচ্ছে বলে অভিযোগ করে কেন্দ্রকে তিস্তা নিয়ে উদ্যোগী হওয়ার আর্জি জানিয়েছিলেন। সংসদে জয়ন্ত বলেছিলেন, “তিস্তার ভাঙন নিয়ে স্থায়ী ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন।” এ দিন জয়ন্তের দাবি, “ব্রহ্মপুত্র বোর্ডের পদাধিকারীদের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। রাজ্য সরকার না পারলে কেন্দ্রীয় বোর্ডই তিস্তায় কাজ করবে। আর্থিক বরাদ্দও করবে। সে ক্ষেত্রে রাজ্যের ছাড়পত্র বা সম্মতি প্রয়োজন।”
কিছুদিন আগে ‘ব্রহ্মপুত্র বোর্ডে’র প্রতিনিধিরা জলপাইগুড়ি ও কোচবিহারে এসে তিস্তার পরিস্থিতি সরেজমিনে দেখেও গিয়েছেন। চলতি মাসেই ‘বহ্মপুত্র বোর্ডে’র বৈঠক হয়েছে। সেখানে রাজ্যের সেচ দফতরের কর্তারাও ছিলেন। তাঁদের দাবি, ব্রহ্মপুত্র তিস্তায় কাজ করতে চায়, এমন কোনও উল্লেখ তারা সে দিন বৈঠকে করেনি। রাজ্যের সেচ দফতরের বক্তব্য, তারাই তিস্তা-সহ কয়েকটি নদীতে ড্রেজ়িং করতে প্রায় ৬৫০ কোটি টাকার প্রকল্প জমা দিয়েছে। সেই বরাদ্দ কোথা থেকে মিলবে তা নিয়েও সংশয় রয়েছে।
উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী উদয়ন গুহ এ প্রসঙ্গে বলেন, “এই যে এককেন্দ্রীয় মন্ত্রী বলছেন, উত্তরবঙ্গকে উত্তর-পূর্বের আওতায় আনলে নাকি উন্নয়ন হবে। এত দিন তো ডুয়ার্স-তরাই ব্রহ্মপুত্র বোর্ডের আওতাতেই ছিল। এক টাকাও পেয়েছে কি?’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘২২-২৩ অর্থবছরে ব্রহ্মপুত্র বোর্ড ৮৯০০ কোটি টাকা পেয়েছিল। তা থেকে এক টাকাও তিস্তা বা উত্তরবঙ্গের জন্য খরচ হয়নি। সবটাই কেন্দ্রের বাংলাবিরোধী মানসিকতা।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy