গরমে চোখ-মুখ ফুলে যায় অনেকের। দীর্ঘ সময় রোদে ঘোরাঘুরি করলে বা বদ্ধ জায়গায় বেশি ক্ষণ থাকলে প্রদাহের কারণে মুখে ফোলা ভাবে দেখা দেয়। আবার যাঁরা একটানা গ্যাসের কাছে দাঁড়িয়ে রান্না করেন, তাঁদের মুখেও ফোলা ভাব লক্ষ করা যায়। অনেক সময়ই সঠিক খাওয়াদাওয়ার অভাবে, অতিরিক্ত ওজন, ঘুম না হওয়া-সহ একাধিক কারণে মুখ-চোখে ফোলা ভাব দেখা যায়। এমনটা হলে দেখতে মোটেই ভাল লাগে না। কী ভাবে এই সমস্যা থেকে রেহাই পাওয়া যাবে, তার কিছু উপায় জেনে নিন।
গরমে মুখ ফুলে যায় কেন?
তীব্র গরমে শরীরে জলের মাত্রা কমে গেলে রক্তজালিকাগুলি সঙ্কুচিত হয়। তখন আশপাশের কোষে ‘ফ্লুইড লিক’ করতে থাকে। সে কারণে প্রচণ্ড প্রদাহ তৈরি হয়। তখন ত্বকের কোষ ফুলেফেঁপে ওঠে, ফলে মুখে ফোলা ভাব দেখা দেয়। আবার কেউ যদি বেশি নুন খান, বাইরের খাবার বেশি খান, তা হলে তাঁরও এমন সমস্যা হতে পারে।
আরও পড়ুন:
গরমে জলশূন্যতা বা ডিহাইড্রেশনের সমস্যা বেশি হয়। শরীরে জলের মাত্রা কমে গেলে পিএইচের ভারসাম্য বিগড়ে যায়। তখন ফোলা ভাব দেখা যায়। আবার ঠিকমতো ঘুম না হলে, অতিরিক্ত উদ্বেগে ভুগলেও মুখ-চোখ ফোলা দেখায়।
বরফ ঘষলে ফোলা ভাব কমবে?
মুখের ফোলা ভাব দূর করতে বরফ কার্যকরী হতে পারে। ‘আইস ফেশিয়াল’ খুব তাড়াতাড়ি মুখের ফোলা ভাব দূর করতে পারে। পাশাপাশি, মুখের কালচে দাগছোপও তুলতে পারে। রোদে ঘোরাঘুরি করলে ত্বকে যে ট্যান পড়ে, তা দূর করতেও বরফ খুব উপযোগী। চোখে-মুখে ক্লান্তির ছাপ দূর হয়। ব্রণ বা ফুস্কুড়ি হলে ত্বকে যে ক্ষতের দাগ থেকে যায়, তা-ও নিরাময় হয়। বরফ ঘষলে ত্বকের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রিত হয়, ত্বকে থাকা তৈলগ্রন্থির ক্ষরণ কমে, ফলে রোমকূপ ঠান্ডায় সঙ্কুচিত হয়, তখন ফোলা ভাব কমে। আইস ফেস প্যাক রক্তসঞ্চালন বাড়ায়, চোখের নীচের ফোলা ভাব, বলিরেখা কমায়। তারুণ্য ধরে রাখে। কিন্তু বরফ লাগাতে হবে নিয়ম মেনে। সুতির কাপড় বা তোয়ালেতে বরফের টুকরো নিয়ে আলতো করে গোটা মুখে বুলিয়ে নিতে হবে। এক জায়গায় বেশি ক্ষণ ধরে রাখলেই সেখানকার ত্বকে পোড়া দাগ হয়ে যেতে পারে।
মুখে বরফ ঘষলে অল্প সময়ের জন্যই তা করতে হবে। বরফ ঘষার পরেই মুখে ময়েশ্চারাইজ়ার মেখে নিতে হবে। যদি দেখা যায়, বরফ লাগালেই ত্বক ফুলে উঠছে বা লালচে দাগ পড়ে যাচ্ছে, তা হলে বরফ না ব্যবহার করাই ভাল।
পেশাদারেরা ড্রাই আইস ব্যবহার করে ক্রায়োজেনিক ট্রিটমেন্টের মাধ্যমে তিল, আঁচিল ইত্যাদি নিরাময় করেন। পার্লার ক্রায়ো টুলসের মাধ্যমে ঠান্ডা আবেশ এনে ত্বক তরুণ ও স্বাস্থ্যোজ্জ্বল করে তোলা হয়। বাড়িতে আইস প্যাক ছাড়াও নানা রকম আইস কিউব বানিয়ে নিতে পারেন। যেমন আইস ট্রে-তে গোলাপজল, অথবা গ্রিন টি রেখে দিন। গোলাপজলের আইস কিউব বা গ্রিন টি কিউব ত্বকের জন্য ভাল। কফি বা অ্যালো ভেরা দিয়েও আইস কিউব বানানো যেতে পারে। এই ধরনের আইস কিউব ত্বক টানটান রাখে, কোলাজেন তৈরি করে।