বিধানসভার সামনে ধর্নায় বিজেপি বিধায়কেরা। — নিজস্ব চিত্র।
কোচবিহার এবং চোপড়ার ঘটনার প্রতিবাদে বিধানসভার সামনে ধর্নায় বসলেন বিজেপির মহিলা বিধায়কেরা। বিজেপি বিধায়ক তথা মহিলা মোর্চার নেত্রী অগ্নিমিত্রা পালের নেতৃত্বে চলছে ধর্না কর্মসূচি। তাঁদের দাবি, শাসকদলের নেতৃত্বে রাজ্যে সন্ত্রাস চলছে। অবিলম্বে পদক্ষেপের দাবি জানাচ্ছে বিজেপি। অন্য দিকে, চোপড়ার ঘটনায় রাজ্যের পরিস্থিতিতে উদ্বেগপ্রকাশ করেছেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। রাজভবন সূত্রের খবর, এই ঘটনায় নবান্নের স্বরাষ্ট্র দফতরের কাছে রিপোর্ট তলব করেছেন তিনি।
কোচবিহারের মাথাভাঙা-২ ব্লকে বিজেপির সংখ্যালঘু নেত্রীকে বিবস্ত্র করে মারধরের অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তাল হয়ে ওঠে রাজ্য-রাজনীতি। শাসকদল তৃণমূলের বিরুদ্ধে আসরে নামে বিজেপি। এ বার সেই সঙ্গে জুড়ল চোপড়ার ঘটনা। রবিবার দুপুরেই তৃণমূলের চোপড়ার নেতা তাজম্মুল ওরফে ‘জেসিবি’র একটি ভিডিয়ো প্রকাশ্যে আসে। সেই ভিডিয়োয় দেখা যায় এক তরুণীকে রাস্তার মধ্যে ফেলে এক ছড়া কঞ্চি দিয়ে বেধড়ক মারছেন জেসিবি। মার খেতে খেতে গুটিয়ে যাওয়া মেয়েটিকে চুলের মুঠি ধরে টেনে এনে ধাক্কা দিয়ে মাটিতে ফেলা হচ্ছে। তার পরে আবার শুরু হচ্ছে মার। একই সঙ্গে এক তরুণকেও একই ভাবে মারতে দেখা যায় (ভিডিয়োটির সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন)। তবে ওই ভিডিয়ো প্রকাশ্যে আসার পরই শুরু হয়েছিল বিতর্ক। একে একে মুখ খুলতে শুরু করেছিলেন রাজ্যের বিরোধী দলের নেতারা।
কোচবিহারের ঘটনা নিয়ে সোমবারই বিধানসভায় সরব হবে বিজেপি তা আগেই জানিয়েছিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। সেই মতো বিধানসভায় ধর্না দেওয়ার অনুমতি চেয়েছিলেন বিজেপির মহিলা বিধায়কেরা। তবে সেই অনুমতি না মেলায় সোমবার সকালে বিধানসভার গাড়িবারান্দার সামনে বিক্ষোভে বসেন অগ্নিমিত্রা। তাঁর সঙ্গে রয়েছেন শিখা চট্টোপাধ্যায়, চন্দনা বাউড়ি, সুনীতা সিংহ। সকলের গলায় ঝোলানো প্ল্যাকার্ড। তাঁদের দাবি, রাজ্যে পর পর মহিলারা আক্রান্ত হচ্ছেন। এমন অবস্থায় মহিলা মুখ্যমন্ত্রী হয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চুপ কেন?
অগ্নিমিত্রা বলেন, “কোচবিহারে বিজেপির প্রতিনিধিদল যাওয়ার পর পুলিশ নির্যাতিতার বয়ান নিল। আর সেই ঘটনার পরেই আমরা দেখলাম চোপড়ায় তৃণমূল নেতা এক জন মহিলার উপর প্রকাশ্যে অত্যাচার করছেন। আমরা রাজ্যে নারী নির্যাতনের প্রতিবাদে ধর্না অবস্থান করছি।”
বিজেপি বিধায়কদের ধর্না প্রসঙ্গে বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমি বিজেপি বিধায়কদের ধর্নার অনুমতি দিইনি। তার পরও তাঁরা বসেছেন। আমি মার্শালকে বলেছি পরবর্তী পদক্ষেপ করার জন্য।’’ যা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অগ্নিমিত্রা। তাঁর কথায়, ‘‘তৃণমূল ধর্না দিচ্ছে তাতে আপত্তি নেই, আমাদের জন্য কেন?’’ তিনি আরও জানান, কোচবিহারের নির্যাতিতাকে নিয়ে রাজভবনে যাবেন বিজেপির মহিলা বিধায়কেরা। প্রয়োজনে রাষ্ট্রপতির দ্বারস্থ হবেন তাঁরা।
অগ্নিমিত্রাদের ধর্নার ভিডিয়ো এক্স (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডলে পোস্ট করেন শুভেন্দু। সেখানে তিনি লেখেন, ‘‘রাজ্যে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মহিলাদের উপর তৃণমূল নেতাদের বর্বর মধ্যযুগীয় অত্যাচার জাতীয় স্তরে নিন্দনীয়। সেটা কোচবিহার হোক বা চোপড়া কিংবা ইসলামপুর। এ ধরনের ঘটনা ব্যতিক্রম নয়। এটাই পশ্চিমবঙ্গের করুণ ছবি।’’
কোচবিহারের ঘটনায় রাজ্যে এসেছে জাতীয় মহিলা কমিশন। কথা বলেছেন নির্যাতিতার সঙ্গে। শনিবার হাসপাতালে নির্যাতিতাতে দেখতে কোচবিহারে যান অগ্নিমিত্রা। সেখানে দাঁড়িয়ে তিনি শাসকদল এবং স্থানীয় প্রশাসনের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছিলেন। একই সঙ্গে সিবিআই তদন্তের দাবি করেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy