Advertisement
২৫ ডিসেম্বর ২০২৪
TMC-BJP

তৃণমূলের ‘কেন্দ্রের বঞ্চনা’ মঞ্চে বিজেপি বিধায়ক, হাতে মাইক নিয়ে নিজের ‘রায়’ জানালেন সত্যেন

তৃণমূলের সভামঞ্চের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় গাড়ি থেকে নেমে সোজা মঞ্চে উঠে যান দক্ষিণ দিনাজপুরের গঙ্গারামপুরের বিধায়ক। তার পর মাইক হাতে নিয়ে করলেন দীর্ঘ বক্তৃতাও।

তৃণমূলের সভামঞ্চে মাইক হাতে সত্যেন রায়।

তৃণমূলের সভামঞ্চে মাইক হাতে সত্যেন রায়। —নিজস্ব চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
গঙ্গারামপুর শেষ আপডেট: ০৬ অগস্ট ২০২৩ ১৬:৪৩
Share: Save:

কেন্দ্রীয় বঞ্চনার প্রতিবাদে ডাকা তৃণমূলের বিক্ষোভ সমাবেশে আচমকাই হাজির বিজেপি বিধায়ক সত্যেন রায়। তৃণমূলের সভামঞ্চের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় গাড়ি থেকে নেমে সোজা মঞ্চে উঠে যান দক্ষিণ দিনাজপুরের গঙ্গারামপুরের বিধায়ক। তার পর মাইক হাতে নিয়ে করলেন দীর্ঘ বক্তৃতাও। প্রাক্তন তৃণমূল নেতা সত্যেনের এ ভাবে শাসকদলের মঞ্চে উঠে পড়া নিয়ে জল্পনা তৈরি হয়েছে জেলার রাজনীতিতে। তৃণমূলের দাবি, দলীয় কর্মসূচিতে এসে তাদের দাবিকে মান্যতা দিয়েছেন সত্যেন। পাল্টা বিধায়কের বক্তব্য, তিনি কারও দাবিকে মান্যতা দেননি। বরং শাসকদলের যা প্রশ্ন ছিল, তার উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করেছেন।

রবিবার কেন্দ্রীয় বঞ্চনার বিরুদ্ধে রাজ্য জুড়ে ব্লক স্তরে প্রতিবাদ কর্মসূচি নিয়েছে তৃণমূল। সেই মতো দক্ষিণ দিনাজপুরের গঙ্গারামপুর থানা এলাকায় ঠাঙাপাড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের বাতাসকুরি মোড়ে মঞ্চ বেঁধে বক্তৃতা করছিলেন শাসকদলের নেতারা। সেই সভামঞ্চ থেকে ঢিল ছোড়া দূরত্বেই সত্যেনের বাড়ি। স্থানীয় সূত্রে খবর, রবিবার সকালে বিধায়ক গঙ্গারামপুরের পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণের একটি বৈঠকে যোগ দিয়েছিলেন। দুপুর নাগাদ ফেরার সময় তিনি দেখেন, বাড়ির সামনে তৃণমূলের সভা হচ্ছে। গাড়ি নিয়ে যাওয়ার সময় তাঁকে ঘিরে ‘জয় বাংলা’ স্লোগানও দেন শাসকদলের কর্মী-সমর্থকেরা। সেই সময়েই আচমকা গাড়ি দাঁড় করিয়ে নেমে সোজা মঞ্চে উঠে প়ড়তে দেখা যায় সত্যেনকে। কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে রাজ্যের প্রাপ্য টাকা আটকে দেওয়া নিয়ে যে অভিযোগ তোলা হচ্ছিল, তার পাল্টা জবাব দিতে গিয়ে শাসকদলের নেতা-নেত্রীদের সঙ্গে বিধায়ককে কথা কাটাকাটিতে জড়িয়ে পড়তেও দেখা যায়।

এই ঘটনাকে ‘নৈতিক জয়’ হিসাবেই দেখতে চাইছে শাসকদল। তাদের দাবি, কেন্দ্রীয় সরকার বাংলার প্রতি যে বঞ্চনা করছে, তা মেনে নিয়েছেন বিধায়ক। তৃণমূলের জেলা সভাপতি মৃণাল সরকার বলেন, ‘‘এটা আমাদের নৈতিক জয়। বিধায়ক মঞ্চে উঠে এসে তৃণমূলের দাবিকেই মান্যতা দিলেন। উনি কেন্দ্রীয় বঞ্চনার কথা স্বীকারও করেছেন।’’ এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন সত্যেন। তাঁর বক্তব্য, রাজনৈতিক সৌজন্যের খাতিরেই তিনি তৃণমূলের মঞ্চে গিয়েছিলেন। বিধায়কের কথায়, ‘‘ওদের অনেক প্রশ্ন ছিল। তার উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করেছি। কেন্দ্রীয় সরকারের কাজের খতিয়ান তুলে ধরেছি। চেষ্টা করেছি ওদের অভিযোগগুলো খণ্ডন করার।’’

২০১১ সালে প্রথম বার নির্বাচনে দাঁড়িয়ে গঙ্গারামপুর থেকে তৃণমূলের বিধায়ক হয়েছিলেন সত্যেন। বিধায়ক হবার পরই তৎকালীন জেলা সভাপতি বিপ্লব মিত্রের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করে বিপ্লব বিরোধী গোষ্ঠীতে ‘নাম’ লিখিয়েছিলেন এই নেতা। বিপ্লবের পর অর্পিতা ঘোষ জেলা সভাপতি হলে তার সঙ্গেও ‘সু-সম্পর্ক’ তৈরি হয়নি সত্যেনের। এর পর ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে গঙ্গারামপুর থেকে প্রার্থী হয়ে হেরে যান এই রাজবংশী নেতা। অভিযোগ ওঠে, গঙ্গারামপুরের এক প্রভাবশালী নেতার ‘ইশারাতেই’ তাঁর পরাজয় হয়। সত্যেনকে হারিয়ে সেই বার বিধায়ক হয়েছিলেন বাম-কংগ্রেস জোটের প্রার্থী গৌতম দাস। পরে যিনি তৃণমূলে যোগ দিয়ে জেলা সভাপতিও হন। এতেই ‘ক্ষুব্ধ’ হয়েছিলেন সত্যেন। দলের বিরুদ্ধে নানা রকম ‘বিরূপ’ মন্তব্য করতেও দেখা যেত তাঁকে। এর পর ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে বিজেপিতে যোগ দেন সত্যেন। তাঁকে আবার পুরনো দলের সভামঞ্চ উঠতে দেখে ‘প্রত্যাবর্তনের’ জল্পনা জোরদার হয়েছে জেলায়।

সত্যেন অবশ্য একে গুরুত্ব দিতে নারাজ। তিনি বলেন, ‘‘রাজনৈতিক সৌজন্য দেখাতে গিয়েছিলাম। পারলে ওঁদের চা-ও খাওয়াতাম।’’

অন্য বিষয়গুলি:

TMC BJP Satyen Roy
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy