দিলীপ ঘোষ। — ফাইল চিত্র।
দিলীপ ঘোষ মানেই উৎসব। তাঁর উপস্থিতি সব সময়েই জমিয়ে রাখে সাংবাদিক বৈঠক থেকে দলের সভা। ফি বছর বিজেপির রাজ্য দফতরে ঘটা করে ভাইফোঁটা পালন শুরু করেছিলেন তিনি। রাজ্য সভাপতি হওয়ার পরে প্রতি বছরের রুটিন কর্মসূচি হয়ে গিয়েছিল এটি। মহিলা মোর্চার নেত্রীরা ফোঁটা দিতেন তৎকালীন রাজ্য সভাপতি দিলীপকে। সঙ্গে অন্য নেতারাও ফোঁটা নিতে আসতেন। ফোঁটা দিয়েছেন লকেট চট্টোপাধ্যায়, অগ্নিমিত্রা পালেরাও। শেষে মিষ্টিমুখ থেকে উপহার বিনিময় সবই চালু করেন দিলীপ।
এ বার একেবারে উল্টো চিত্র। রাজ্য বিজেপি দফতরে ভাইফোঁটার কোনও অনুষ্ঠানই নেই। সুকান্ত মজুমদার রাজ্য সভাপতি হওয়ার পরেও সে রীতি চালু ছিল। কিন্তু বরাবরই মধ্যমণি হতেন দিলীপ। সেই দিলীপ এ বার বাড়ি থেকেই বার হননি। এক রকম ঘরে খিল দিয়ে বসে রয়েছেন। প্রতি বছর তাঁকে যাঁরা ফোঁটা দেন সেই দিদি, বোনদের আগে থাকতেই তিনি জানিয়ে দিয়েছেন, এ বার ভাইফোঁটা উৎসবে নেই।
নিজের কোনও দিদি বা বোন নেই দিলীপের। চার ভাইয়ের পরিবারে অবশ্য জ্যাঠতুতো, খুড়তুতো দিদিরা ফোঁটা দিতেন দিলীপ এবং বাকি ভাইদের। পরে সঙ্ঘের (আরএসএস) প্রচারক হওয়ার পরেও দিলীপ এই দিনটি ঘটা করেই পালন করতেন। সঙ্ঘের কার্যকর্তাদের কন্যা বা বোনদের থেকে ফোঁটা নিতেন। যখন যেখানে দায়িত্বে ছিলেন সেখানেই দিলীপকে ঘিরে ভাইফোঁটায় আলাদা উন্মাদনা তৈরি হত। তুতো বোনদের ফোঁটা নিতে কোনও কোনও বছর যেতেন গোপীবল্লভপুরেও। দিলীপের বিজেপিতে আগমনের পরে তা উৎসবের চেহারা পায়। কিন্তু এ বার নয় কেন? দিলীপ বললেন, ‘‘ফোঁটা নেওয়ার সময় দিদি বা বোনেরা যেমন ভাইয়ের মঙ্গলকামনা করেন, তেমন দাদা বা ভাইকেও প্রতিশ্রুতি দিতে হয়। রক্ষা করার প্রতিশ্রুতি। কিন্তু বাংলার যা অবস্থা, একজন দাদা বা ভাই হয়ে কোনও প্রতিশ্রুতি দিতে পারব না। তাই বাড়ি থেকে বেরই হইনি।’’
এটা কি তবে আরজি কর-কাণ্ডের জেরে উৎসব বয়কট? দিলীপ বলেন, ‘‘বয়কট নয়। ধর্মীয় রীতি-রেওয়াজের সঙ্গে আমি প্রতিবাদকে গুলিয়ে ফেলার পক্ষপাতী নই। কিন্তু মন ভাল নেই। মনে আনন্দ না থাকলে বাহ্যিক লোকদেখানো আনন্দের কোনও অর্থ হয় না।’’ রাজনৈতিক ভাবে বিজেপিতে ভাইফোঁটা সবচেয়ে বেশি জমকালো ছিল লকেট যখন রাজ্য মহিলা মোর্চার সভানেত্রী ছিলেন। এ বার ভাইফোঁটায় তালড্যাংরায় উপনির্বাচনের প্রচারে রয়েছেন লকেট। তিনি বলেন, ‘‘এখানে যাঁরা চেয়েছেন তাঁদের আমি ফোঁটা দিয়েছি। কিন্তু শুধুই রীতি মানা হয়েছে। দিলীপদা যেটা বলেছেন সেটা তো ঠিকই। বাংলায় এখন সত্যিই উৎসবের চেহারায় ভ্রাতৃদ্বিতীয়া পালনের পরিবেশ নেই।’’ এই প্রসঙ্গে তৃণমূলের মুখপাত্র ঋজু দত্ত বলেন, ‘‘নারীসুরক্ষার বিষয়টি সব রাজনৈতিক মতের ঊর্ধ্বে। তবে দিলীপ ঘোষের উচিত যোগী আদিত্যনাথ, নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহদেরও ভ্রাতৃদ্বিতীয়া বয়কট করতে বলা। কারণ, বিজেপি শাসিত রাজ্যেও বোনদের সুরক্ষা সবচেয়ে কম।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy