ফাইল চিত্র।
কলকাতায় বিজেপির পুজো উদ্বোধন হওয়ার কথা ছিল ষষ্ঠীর সন্ধ্যায়। কিন্তু কে করবেন? দিলীপ ঘোষ, শুভেন্দু অধিকারীরা জেলায়। সুকান্ত মজুমদারও বেলার বিমানে বাগডোগরা চলে যাবেন। তা হলে? শেষে সুকান্তই নমো নমো করে উদ্বোধন সারলেন। তার পরে বিমান ধরে সোজা উত্তরবঙ্গে। তাঁকে যে যেতে হবে মেখলিগঞ্জে, পুজো উদ্বোধনে।
দুর্গাপুজোয় এ বারে এই ভাবেই মফস্সল এবং গ্রামগঞ্জে নজর দিয়েছে বিজেপি। কেন? বিজেপি সূত্রে বলা হচ্ছে, পঞ্চায়েত ভোটের বেশি দেরি নেই। তাই গ্রামাঞ্চলে ভিত শক্ত করতে পুজোর মরসুমে জন-সংযোগকে রাজনৈতিক ভাবে কাজে লাগাতে চাইছে দল। বিজেপি নেতারা এ বারে তাই গ্রামে, পাড়ায় গিয়ে পুজো উদ্বোধনেও ছুঁৎমার্গ দেখাননি। বিজেপি সূত্রে দাবি, গ্রামাঞ্চলের অনেক পুজোই সরকারি অনুদানের তালিকায় নেই। সেই সব পুজোয় ‘পৌঁছতে চেয়েছেন’ তাঁরা।
তৃণমূল অবশ্য বিজেপির এই জন-সংযোগকে পাল্টা কটাক্ষ করে বলেছে, পুজো করতে গেলেও তো ওঁদের সরকারি হল ভাড়া করতে হয়!
পুজোয় জন-সংযোগে অবশ্য গেরুয়া শিবিরের থেকে এখনও বহু যোজন এগিয়ে রয়েছে শাসক দল। নির্ধারিত পুজোগুলি ছাড়াও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভার্চুয়ালি বেশ কয়েকটি পুজোর উদ্বোধন করেছেন এ বারে। সেগুলি মূলত মফস্সলের। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, বিজেপিও একই ভাবে পুজো উদ্বোধনকে জন-সংযোগের পথ হিসাবেই দেখেছে এ বারে। উদ্বোধকের তালিকায় সামনের সারিতে আছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী ও দলের রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। শনিবার, ষষ্ঠীর দিনেও শুভেন্দু ১১টি পুজোর উদ্বোধন করেন। অধিকাংশই তমলুক, নন্দীগ্রাম বিধানসভা কেন্দ্রের। এ ছাড়াও হলদিয়া, ভগবানপুরে একাধিক পুজোর উদ্বোধনে হাজির থাকছেন শুভেন্দু। পাশের জেলা শহর মেদিনীপুরেও পুজো উদ্বোধনে গিয়েছিলেন তিনি।
উত্তরবঙ্গের বহু পুজো উদ্বোধনে ডাক পড়েছে সুকান্তের। নিজের জেলা দক্ষিণ দিনাজপুর ছাড়াও মালদহ, উত্তর দিনাজপুর, জলপাইগুড়িতে ‘সুকান্তদা’কে দিয়ে পুজো উদ্বোধনের আবেদন ছিল প্রচুর। শনিবারও মেখলিগঞ্জ ছাড়া তাঁর যাওয়ার কথা ছিল ধূপগুড়ি, ময়নাগুড়ি এবং জলপাইগুড়ির কয়েকটি পুজোয়। সুকান্ত এ দিন বলেন, ‘‘শনিবার কয়েকটি পুজো উদ্বোধন করেছি। দক্ষিণ দিনাজপুরের কয়েকটি মণ্ডপে পুজোর সময় যাব।’’ দু’জনের তুলনায় মেদিনীপুরের সাংসদ দিলীপ ঘোষ সংখ্যার দিক থেকে হয়তো কিছুটা পিছিয়ে। কিন্তু তিনিও হাওড়া সদর ও গ্রামীণ, বসিরহাট ও বারাসত সাংগঠনিক জেলা, মালদহ উত্তর সাংগঠনিক জেলায় পুজো উদ্বোধন করেছেন। রবিবার তাঁর যাওয়ার কথা পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুরে। তাঁর কথায়, ‘‘তৃণমূল যে টাকা দিয়ে পুজোগুলি কিনে নিতে চাইছে, তাতে অনেকে বিরক্ত। অনেকে টাকা পাননি, কেউ কেউ টাকা নেননি। তাঁরা বিকল্প হিসাবে বিজেপিকে বেছে নিয়েছেন।’’
পরিসংখ্যান বলছে উত্তরবঙ্গ, নদিয়া, বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, পূর্ব মেদিনীপুরের গ্রাম লাগোয়া আসনগুলিতে গত লোকসভা ও বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি জিতেছিল। গেরুয়া শিবির সূত্রের দাবি, সরকারি অনুদান পায়নি, এমন গ্রামীণ পুজো কমিটিগুলিই স্থানীয় জনপ্রতিনিধি হিসাবে বিজেপি সাংসদ ও বিধায়কদের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন।
তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, ‘‘মায়ের আরাধনা যে যে ভাবে পারবেন, করবেন। তা নিয়ে কিছু বলার নেই। কিন্তু নেতাদের যদি নিজেদের পাড়ায়, প্রতিবেশীদের সঙ্গে সম্পর্কই থাকবে, তা হলে তাঁদের সরকারি হল ভাড়া করে পুজো করতে হচ্ছে কেন?’’ তাঁর খোঁচা, ‘‘বোঝা যাচ্ছে, জন-সংযোগের পরিকল্পনা বা তার পরিণতি কী!’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy