বুধবার আক্রমণ করেছেন অভিষেক। বৃহস্পতিবার পাল্টা শুভেন্দুর। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
বিজেপির নবান্ন অভিযান কর্মসূচির পর থেকে রাজ্য রাজনীতিতে ‘ব্যক্তি আক্রমণের’ যে ধারা শুরু হয়েছিল, তা বজায় রইল বৃহস্পতিবারও। বুধবারই শুভেন্দু অধিকারীকে ‘পুরুষ পছন্দ-করা নেতা’ বলে আক্রমণ করেছিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার শুভেন্দুর সাংবাদিক বৈঠকে সেই মন্তব্য নিয়ে প্রশ্ন উঠতেই পাল্টা আক্রমণ করলেন বিরোধী দলনেতা। লড়াই রাজনৈতিক ময়দানে হওয়া উচিত বলে মন্তব্য করলেও তিনি বলেন, ‘‘ভাষা সন্ত্রাস উচিত নয়। বাংলার মানুষ এ সব সমর্থন করেন না। যাঁরা এ সব শুরু করেছেন, তাঁরা হারিয়ে যাবেন। যিনি শুরু করেছেন, তাঁর কোনও রাজনৈতিক অতীত নেই। তিনি শাসক হিসাবেই প্রতিষ্ঠা পেয়েছেন।’’
প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার বিজেপির নবান্ন অভিযান কর্মসূচি শুরুর আগেই তৈরি হয়েছিল বিতর্ক। পুলিশের হাতে আটক হয়ে বচসায় জড়ান শুভেন্দু। সে সময় এক মহিলা পুলিশকর্মীর উদ্দেশে শুভেন্দুকে বলতে শোনা যায়, ‘‘ডোন্ট টাচ মাই বডি!’’ এর পর ঘটনাস্থলে উপস্থিত কলকাতা পুলিশের ডেপুটি কমিশনার আকাশ মাঘারিয়াকে শুভেন্দু বলেন, ‘‘এখানে সব লেডি পুলিশ আমার গায়ে হাত দিচ্ছেন! এটা তাঁরা করতে পারেন না। আপনাদের বিরুদ্ধে আমি আদালতে যাব।’’ এর পর শুভেন্দু দাবি করেন, মহিলা পুলিশ অফিসাররা তাঁকে ‘নিগ্রহ’ করেছেন। তাঁকে ‘ফাঁদে ফেলা’র চেষ্টা হয়েছিল বলেও তিনি বুধবার অভিযোগ করেন।
অন্য দিকে, মঙ্গলবার প্রহৃত পুলিশ কর্তা দেবজিৎ চট্টোপাধ্যায়কে দেখতে এসএসকেএম হাসপাতালে গিয়ে বুধবার অভিষেক বলেন, ‘‘গত কালের (মঙ্গলবারের) ঘটনা দেখে আমার বিলম্বিত বোধোদয় হয়েছে। এক জন মহিলা পুলিশকর্মী ওঁকে (শুভেন্দু) অনুরোধ করে ভ্যানে উঠতে বলেছিলেন। উনি শুনে বলেন, ‘আমি মেলস! আপনি মহিলা। ডোন্ট টাচ মি!’ এখন বুঝতে পারছি, সুদীপ্ত সেন যদি পুরুষ না হয়ে মহিলা হতেন, অর্থাৎ সুদীপ্তা হতেন, তা হলে ওঁর কাছ থেকে তিনি টাকা নিতেন না। বা নারদ স্টিং কাণ্ডে ম্যাথু স্যামুয়েল না গিয়ে যদি অ্যাঞ্জেলিনা স্যামুয়েল যেতেন তা হলেও উনি টাকা নিতেন না।’’
বৃহস্পতিবার সেই প্রসঙ্গই ওঠে শুভেন্দুর সাংবাদিক বৈঠকে। তখনই তিনি কটাক্ষের সুরে বলেন, ‘‘উনি আমার কম্পিটিটর (প্রতিযোগী) নন। উনি যাঁর আলোয় আলোকিত, সেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আমি নন্দীগ্রামে ১,৯৫৬ ভোটে হারিয়েছি। ওঁদের কোম্পানির মালিক যাঁর কাছে হেরেছে, সেই কোম্পানির ম্যানেজিং ডিরেক্টর আমার কম্পিটিটর নন।’’ শুভেন্দু আরও বলেন, ‘‘লড়াই রাজনৈতিক হওয়া উচিত। আইনি লড়াই হওয়া উচিত।’’ এরই পাশাপাশি শুভেন্দু বলেন, ‘‘৭০ বছরের বুড়ো। তৃণমূলের মহাসচিব। হাঁটুর নীচে বয়সি মেয়েদের সঙ্গে... কী আর বলব! ওঁর তো ব্রুনেইয়ের সুলতানের চেয়েও বেশি বান্ধবী!’’
নারদ-কাণ্ডের প্রসঙ্গ তোলায় শুভেন্দু সাফ জানান, তাঁর বিরুদ্ধে খবরের কাগজ নেওয়া ছবি ছাড়া কোনও কিছু প্রমাণ করতে পারেননি। প্রসঙ্গত, নারদের গোপন ক্যামেরা অভিযানে দেখা গিয়েছিল, শুভেন্দু খবরের কাগজে মুড়ে টাকা নিচ্ছেন। যা অভিষেক এবং তৃণমূলের অন্য নেতারা নিয়মিত বলেন। তাঁরা এ-ও বলেন যে, বিজেপিতে যোগ দেওয়ার ফলেই নারদ-কাণ্ডে শুভেন্দুকে আর তলব করে না সিবিআই। তবে শুভেন্দুর কথায়, ‘‘ও সব দিয়ে কিছু হবে না। আমাকে তো ডেকেছিল। বলে এসেছি, ভাইপো করিয়েছে কে ডি সিংহকে দিয়ে। ওটা করাপশন (দুর্নীতি) নয়, কনস্পিরেসি (ষড়যন্ত্র)। গিয়ে বলে এসেছি। তাই আর ডাকে না!’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy