সোমবার আসছেন সুনীল বনসল। ফাইল চিত্র
রাজ্য বিজেপির নতুন পর্যবেক্ষক সুনীল বনসলের নাম ঘোষণা হয়েছিল ১০ অগস্ট। এর মধ্যেই রাজ্যে চলে আসার কথা থাকলেও বিজেপি সূত্রে জানা যায়, করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। অবশেষে সোমবার কলকাতার আসছেন তিনি। সোমবার থেকেই কলকাতার বৈদিক ভিলেজে শুরু হচ্ছে রাজ্য বিজেপির প্রশিক্ষণ শিবির। সেখানেই সব রাজ্যনেতার সঙ্গে পরিচয় হবে দলে ‘উত্তরপ্রদেশ জয়ের কারিগর’ হিসাবে পরিচিত সুনীলের। কিন্তু সেই শিবিরে দলীয় শৃঙ্খলা মেনে সকলে আসবেন তো? সব নেতারা টানা তিন দিন শিবিরেই থাকবেন তো? এমন চিন্তায় রয়েছে গেরুয়া শিবির। এ নিয়ে প্রকাশ্যে কেউ কিছু না বললেও রাজ্য বিজেপির এক নেতা বলেন, ‘‘সুনীলজি প্রথম বার আসছেন। সেই কর্মসূচিতে সকলের হাজিরা ও দলীয় শৃঙ্খলা মেনে চলা দেখাতে না পারলে সেটা অবশ্যই অস্বস্তির হবে। সেই কারণে রবিবার সকলের সঙ্গে যোগাযোগ করা চলছে। শেষ মুহূর্তেও কেউ সিদ্ধান্ত বদল করলেন কি না সেটা নিশ্চিত করার জন্যই এই উদ্যোগ।’’
শনিবারই কলকাতায় কেন্দ্রীয় মন্ত্রী প্রকাশ জাভড়েকরের উপস্থিতিতে এক অনুষ্ঠান চলাকালীন বিজেপির দু’টি গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষ লেগে যায়। যার ফলে বেশ অস্বস্তিতে পড়তে হয় বিজেপিকে। তবে দলীয় প্রশিক্ষণ শিবির নিয়ে তেমন গোলমালের চিন্তা নেই নেতাদের। বরং, সকলে শিবিরের নিয়ম মেনে চলবেন কি না, তা নিয়ে চিন্তা রয়েছে।
সোম থেকে বুধ কলকাতায় যে প্রশিক্ষণ শিবির হচ্ছে তা বিজেপিতে নতুন কিছু নয়। কিন্তু বিজেপি সাংসদ, বিধায়ক তো বটেই দলের দায়িত্বপূর্ণ পদে এমন অনেকেই রয়েছেন যাঁরা অন্য দল থেকে এসেছেন। তাঁরা সকলে আসছেন কি না এবং এলেও গোটা সময়টা শৃঙ্খলা মেনে শিবিরে থাকছেন কি না সেটাই চিন্তার। বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, বিভিন্ন অসুবিধার কথা জানিয়ে ইতিমধ্যেই অনেকে শিবিরে না থাকতে পারার কথা রাজ্য নেতৃত্বকে জানিয়েছেন। কলকাতার কাছাকাছি থাকেন যাঁরা, তাঁদের অনেকে দিনে শিবিরে থাকলেও রাতে বাড়ি চলে যেতে পারেন বলে জানিয়েছেন।
এই শিবিরে রাজ্যের নতুন পর্যবেক্ষক সুনীল ছাড়াও থাকার কথা সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) বিএল সন্তোষের। বিভিন্ন বিষয়ে সাংসদ, বিধায়ক ছাড়াও রাজ্যে নেতাদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। ডাকা হয়েছে জেলা সভাপতি ও ইনচার্জদের। সকালে যোগাভ্যাস থেকে রাতে সহভোজন, নিজেদের অংশগ্রহণে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হওয়ার কথা প্রথম দু’দিন। তৃতীয় দিনে বক্তৃতা করবেন সন্তোষ। এ ছাড়াও ভাষণ দেওয়ার কথা সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষ, রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার ও বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর। অন্যতম বক্তা হবেন সুনীলও।
সুনীলকে নিয়ে বাড়তি উৎসাহ রয়েইছে রাজ্য বিজেপিতে। সুনীলকে ২০১৪ সালে ভোটের দায়িত্ব দিয়ে পাঠানো হয়েছিল উত্তরপ্রদেশে। সে বার লোকসভা নির্বাচনে উত্তরপ্রদেশের মোট ৮০টি আসনের মধ্যে ৭২টিতে জিতেছিল বিজেপি। যে ক’টিতে হেরেছিল, সেগুলিও এসপি নেতা মুলায়ম সিংহ ও গাঁধী পরিবারের সদস্যরা পারস্পরিক বোঝাপড়ায় জিতেছিলেন। সেই নির্বাচনে সাফল্যের পরে স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ‘সেনাপতি’ বলেছিলেন অমিত শাহকে। দলও শাহকে সর্বভারতীয় সভাপতি করেছিল। কিন্তু উত্তরপ্রদেশ বিজেপির অন্দরে এটা সকলেই জানেন যে, নেতৃত্বে অমিত থাকলেও আড়ালে থেকে তৃণমূল স্তরে সফল সংগঠন চালিয়েছিলেন সুনীল। ২০১৪-র লোকসভার পরে ২০১৭ সালের বিধানসভা, ২০১৯ সালের লোকসভা এবং ২০২২ সালের বিধানসভা নির্বাচনেও একের পর এক সাফল্য দেখিয়েছেন তিনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy