Advertisement
১৮ নভেম্বর ২০২৪
Sukanta Majumdar

অভিষেকের দিকে ইঙ্গিত, দুর্নীতি নিয়ে সরব সুকান্ত

সুকান্তের অভিযোগগুলি উড়িয়ে দিয়ে রাজ্যসভায় তৃণমূলের সচেতক সুখেন্দুশেখর রায়ের বক্তব্য, ‘‘যাঁরা এ সব বলছেন, তাঁরা মূল সমস্যাকে আড়াল করতে চাইছেন।’’

Picture of Abhishek Banerjee and Sukanta Majumdar.

অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এবং সুকান্ত মজুমদার। ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ০৭:২৩
Share: Save:

আদানি কাণ্ড নিয়ে বিরোধীরা যখন সংসদে নরেন্দ্র মোদী সরকারকে কোণঠাসা করার কৌশল নিয়েছে, তখন পাল্টা আক্রমণে পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতিকে ‘হাতিয়ার’ করে লোকসভায় সরব হলেন বালুরঘাটের সাংসদ তথা বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার।

কারও নাম না-করে এই বিজেপি সাংসদের নিশানা, তৃণমূলের সেকেন্ড-ইন কমান্ডকেও আগামী দিনে জেলে যেতে হবে। অনেকের মতে, নাম না করলেও সুকান্ত ইঙ্গিত করেছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক তথা সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে। তৃণমূলের দাবি, এ সব ভিত্তিহীন অভিযোগ করে মূল সমস্যা আড়ালের কৌশল নিয়েছে বিজেপি। তৃণমূলের শীর্ষ নেতাদের গ্রেফতারির হুমকি দিয়ে রাজ্যে হতাশ, বসে যাওয়া কর্মীদের চাঙ্গা করতে চেয়েছেন সুকান্ত।

লোকসভায় রাষ্ট্রপতির বক্তৃতার উপরে ধন্যবাদজ্ঞাপন আলোচনায় অধিকাংশ বিরোধী দলের মতো আদানি শিল্প সংস্থার সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সম্পর্ক নিয়ে সরব হয়েছিল তৃণমূল। সেই সূত্র ধরে বলতে গিয়ে আজ সুকান্তের পাল্টা আক্রমণ, ‘‘যে দলের শিক্ষামন্ত্রী দুর্নীতির কারণে জেলে বন্দি রয়েছেন, সেই দলের কাছ থেকে দুর্নীতি নিয়ে কথা শুনতে হচ্ছে। রাজ্যে শিক্ষকদের নিয়োগ নিয়ে দুর্নীতি হচ্ছে। বর্তমানে শিক্ষক পদ বিক্রি করা হচ্ছে। সেই বেচাকেনায় কেবল শিক্ষামন্ত্রীই নয়, তাঁর দলবলের সকলেই জেলে যাবে। এমনকি তৃণমূলের সেকেন্ড ইন কমান্ড যিনি এখন জেলের বাইরে আছেন, আজ নয় কাল তাঁকেও জেলে যেতে হবে।’’

বঙ্গের শাসকদলকে দুর্নীতি নিয়ে আক্রমণ করতে গিয়ে একটি কাগজ দেখিয়ে সুকান্ত বলেন, ‘‘আমার কাছে একটি সংস্থার ব্যালেন্স শিট রয়েছে। সেই সংস্থার নাম লিপস অ্যান্ড বাউন্ডস প্রাইভেট লিমিটেড। ওই সংস্থার মালিক কে তা তৃণমূলের সকলেই ভাল করেই জানে।’’ তবে ওই সংস্থার মালিক কে তা প্রকাশ্যে জানাননি সুকান্ত। যদিও ঘরোয়া ভাবে বিজেপি শিবিরের বক্তব্য, বকলমে ওই সংস্থার মালিক যে অভিষেক তা রাজ্যবাসী জানেন। সুকান্তের অভিযোগ, ‘‘ওই সংস্থার টার্নওভার এক বছরে ৮৬ লক্ষ টাকা থেকে ৭ কোটি টাকা হয়েছে। এটা কী ধরনের ম্যাজিক!’’ অভিষেকের সঙ্গেই নাম না করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা ও তাঁর পরিবারকে আক্রমণ শানিয়েছেন এই বিজেপি সাংসদ। তাঁর কথায়, ‘‘যে দল আগে দাবি করত তাদের সর্ব্বোচ্চ নেত্রী সততার প্রতীক, কাগজে বার হচ্ছে সেই নেত্রীর পরিবার ৩৫টি প্লটের মালিক।’’

সুকান্তের কটাক্ষ, ‘‘কেবল ‘সোশ্যাল ওয়ার্ক’ করে যারা কয়েক কোটি টাকার সম্পত্তির মালিক হয়েছেন, তাঁরা ঋষিতুল্য প্রধানমন্ত্রীকে সততা শেখাতে চাইছেন!’’

সুকান্তের অভিযোগগুলি উড়িয়ে দিয়ে রাজ্যসভায় তৃণমূলের সচেতক সুখেন্দুশেখর রায়ের বক্তব্য, ‘‘যাঁরা এ সব বলছেন, তাঁরা মূল সমস্যাকে আড়াল করতে চাইছেন।’’

সুকান্তের অভিযোগ, পশ্চিমবঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে উপচার্য নিয়োগে ইউজিসির নিয়মকে অগ্রাহ্য করা হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘‘নিয়ম না মেনে কলেজের প্রিন্সিপ্যালকে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য করে দেওয়া হচ্ছে। নিয়ম অনুযায়ী কোনও অধ্যাপক দশ বছর বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষাকতা করলে, তবেই তিনি উপাচার্য হতে পারেন। পাশাপাশি তাঁর একাধিক গবেষণাপত্র থাকাও বাধ্যতামূলক।’’ সুকান্তের কটাক্ষ, ‘‘এমন ব্যক্তিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শীর্ষ পদে বসানো হয়েছিল যিনি এখন জেলে। যে উপাচার্যের হাত থেকে আমি শংসাপত্র পেয়েছি, তিনি এখন জেলে। বাংলা থেকে অতীতে অতীশ দীপঙ্কর তিব্বতে শিক্ষক হিসেবে গিয়েছিলেন। বাংলা থেকে বিশ্বের অন্যত্র পড়াতে যেতেন শিক্ষকেরা। এখন সেই শিক্ষকের চাকরি বিক্রিকরা হচ্ছে।’’

সুকান্তের তোলা শিক্ষায় দুর্নীতি নিয়ে সুখেন্দুর জবাব, আদানি সংস্থা কী ভাবে ৮টি সমুদ্রবন্দর, ৬টি বিমানবন্দর ও ডজনখানেক বিদ্যুৎসংস্থা, দেশ জুড়ে জাতীয় সড়ক নির্মাণের মতো সরকারি বরাত পেল সেই রহস্য আগে উন্মোচন হওয়া প্রয়োজন। এ জন্য প্রয়োজনে আদানি সংস্থার শীর্ষ কর্তাকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের দাবি তুলেছেন সুখেন্দুশেখর।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy