শোভন চট্টোপাধ্যায় ও বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়।
আর দ্বিধা নয়। জানুয়ারিতেই পুরোদমে বিজেপি-র হয়ে নির্বাচনী প্রচারে নামছেন কলকাতার প্রাক্তন মেয়র তথা রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী শোভন চট্টোপাধ্যায়। কবে কোন এলাকায় প্রচারে যাবেন, বিজেপি দফতরে বসে তার তালিকাও প্রকাশ করলেন বৃহস্পতিবার। কিন্তু সেই তালিকায় নেই তাঁর নিজের পাড়া, নিজের ওয়ার্ড, নিজের বিধানসভা এলাকা। তাঁর বিধানসভা কেন্দ্র বেহালা-পূর্ব আপাতত ‘ব্রাত্য’। বেহালা পশ্চিমও তা-ই। কিন্তু কেন? সাংবাদিক বৈঠকে প্রশ্ন শুনে সামান্য ক্ষুন্ন শোনাল শোভনকে। বললেন, ‘‘৫১টা কেন্দ্রের হিসেবে বেহালা পূর্ব ও পশ্চিম ২৫ ভাগের এক বা দু’ভাগ। সেখানেও যাব। আর যেদিন যাব, সেদিনের জন্য এখনই আমন্ত্রণ জানিয়ে রাখলাম। ’’
প্রায় দেড় বছর আগে বিজেপি-তে যোগ দিলেও খাতায়কলমে শোভন এখনও বেহালা পূর্বের তৃণমূল বিধায়ক। একই সঙ্গে তিনি ছিলেন বেহালা পশ্চিম বিধানসভা এলাকার ১৩১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলার। ওই ওয়ার্ডেই তাঁর বাড়ি। সেখানেই সন্তানদের নিয়ে থাকেন শোভন-জায়া রত্না চট্টোপাধ্যায়। ওই ওয়ার্ডের তৃণমূলের কো-অর্ডিনেটরও রত্না। কলকাতার মেয়র, দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলা সভাপতি, রাজ্যের মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করলেও বেহালা নিশ্চিত ভাবেই শোভনের ‘কর্মভূমি’। নিজের এলাকা। উল্লেখযোগ্য ভাবে, বিজেপি-র হয়ে প্রচারের প্রথম পর্বে সেই বেহালা ‘ব্রাত্য’ শোভনের সূচিতে। সেই প্রসঙ্গে প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘‘আমি এখন ৫১টা বিধানসভা কেন্দ্রের দায়িত্বে। পৌরসভা নির্বাচন শুধু নয়, সাত-সাতটা নির্বাচনে আমার একটা বড় ভূমিকা ছিল। সে দিন এই প্রশ্ন আসেনি। যখন ৪২টা (বিধানসভা) কেন্দ্রে আমি নির্বাচন পরিচালনা করতাম (তৃণমূলে থাকার সময়) তখন কোনও প্রশ্ন আসেনি। বেহালা-পূর্ব বা বেহালা-পশ্চিম ৫১টা কেন্দ্রের হিসেবে ২৫ ভাগের এক বা দু’ভাগ।’’
৪ জানুয়ারি কলকাতায় শোভন-বৈশাখীর যে মিছিল হওয়ার কথা ছিল, সেই মিছিলের রুটেও বেহালা ছিল না। সেই মিছিলে শোভন-বৈশাখী অংশ নেননি। তবে তার আগেই রত্না আনন্দবাজার ডিজিটালকে বলেছিলেন, ‘‘ওঁকে র্যালি নিয়ে বেহালায় আসতে অনুরোধ করুন। বেহালায় এলে ওঁকে আমরা স্বাগত জানাতে পারতাম।’’ রাজ্য বিজেপি-র কলকাতা জোনের পক্ষে অবশ্য জানানো হয়েছে, শুরুতেই বেহালা না থাকলেও পরবর্তী সময়ে শোভন ওই দুই বিধানসভা এলাকাতেও প্রচারে যাবেন। তবে নিজের এলাকায় শোভনের প্রচারে বান্ধবী বৈশাখীও সঙ্গী হবেন কি না, সে প্রশ্নের জবাব মেলেনি।
আরও পড়ুন : চূড়ান্ত ভোটার তালিকা আগামিকাল, বয়স্কদের জন্য বাড়িতে পোস্টাল ব্যালটের ভাবনা
আরও পড়ুন : ফেসবুকে বিক্ষুব্ধ সাংসদ শতাব্দী, শনিবারবেলায় তাকিয়ে তৃণমূল
সম্প্রতি রাজ্য বিজেপি-র পক্ষে কলকাতা জোনের দায়িত্ব পেয়েছেন শোভন। তার পরে গত ৪ জানুয়ারি আলিপুর থেকে মিছিল করে তাঁর আসার কথা ছিল মুরলীধর সেন লেনে দলের রাজ্য দফতরে। কিন্তু সেই মিছিলে আসেননি তিনি। এর পরে গত রবিবার হেস্টিংসে বিজেপি-র নির্বাচনী কার্যালয়ে প্রথমবার বান্ধবী বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে পা রাখেন শোভন। পর দিন সোমবার দক্ষিণ কলকাতায় মিছিলে অংশ নেন শোভন-বৈশাখী। তার পর বৃহস্পতিবার থেকেই কলকাতা জোনের কাজ শুরু করে দিলেন তাঁরা। দলীয় দফতরে জোনের অন্য নেতাদের নিয়ে বৈঠকও করেন শোভন-বৈশাখী। তার আগে সাংবাদিক বৈঠক করে জানান পুরো জানুয়ারি মাসের কর্মসূচি। শোভন জানান— দক্ষিণ ২৪ পরগনা, কলকাতা ও উত্তর ২৪ পরগনার একাংশ নিয়ে তৈরি কলকাতা জোনের নির্বাচনী প্রচারের কর্মসূচির নাম দেওয়া হয়েছে ‘সমাধান’। তারই অঙ্গ হিসেবে শোভনের প্রথম মিছিল ও সমাবেশ ১৮ জানুয়ারি দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার বিষ্ণুপুর বিধানসভা এলাকায়। এর পরে ২১ জানুয়ারি ওই জেলারই রায়দিঘি এবং ২২ জানুয়ারি উত্তর কলকাতায়। ২৭ এবং ২৮ জানুয়ারি তাঁর কর্মসূচি যথাক্রমে বারুইপুর ও দমদম এলাকায়। মন্ত্রিত্ব ও কলকাতার মেয়র পদ ছাড়ার পরে দলবদল করেন শোভন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy