Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Locket chatterjee

আমায় গুরুত্বপূর্ণ ভাবছে না বলেই কি প্রচারের তালিকায় নাম নেই, লকেটের গলায় ক্ষোভ

১২ এপ্রিল রাজ্যে জোড়া উপনির্বাচন। বালিগঞ্জ বিধানসভা এবং আসানসোল লোকসভা আসনে। কিন্তু সেই প্রচারে অংশ নেবেন না লকেট চট্টোপাধ্যায়।

লকেট চট্টোপাধ্যায়।

লকেট চট্টোপাধ্যায়।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৫ মার্চ ২০২২ ১২:৩২
Share: Save:

১২ এপ্রিল রাজ্যে জোড়া উপনির্বাচন। বালিগঞ্জ বিধানসভা এবং আসানসোল লোকসভা আসনে। কিন্তু সেই প্রচারে অংশ নেবেন না বিজেপি-র সাংসদ তথা রাজ্যের অন্যতম সাধারণ সম্পাদক লকেট চট্টোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার রাজ্য বিজেপি-র পক্ষে এই দুই আসনের নির্বাচনে কারা প্রচারে অংশ নেবেন, তার তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। কিন্তু ৪০ জনের সেই তালিকায় নাম নেই লকেটের। এতেই অভিমান অভিনেত্রী সাংসদের। তিনি আনন্দবাজার অনলাইনকে বলেন, ‘‘তালিকায় নাম নেই মানে আমাকে দল গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছে না। সুতরাং, ইচ্ছা থাকলেও আমি আর প্রচারে অংশ নেব না।’’ সংসদের অধিবেশন চলায় লকেট এখন দিল্লিতে রয়েছেন। তিনি জানান, প্রচারে অংশ নেওয়ার ব্যাপারে তাঁর সঙ্গে দলের অপর রাজ্য সম্পাদক জ্যোতির্ময় সিংহ মাহাত এবং রাজ্য সহ-সভাপতি অর্জুন সিংহের সঙ্গে কথাও হয়েছিল। দুই সাংসদকেই তিনি জানিয়েছিলেন, সংসদে অধিবেশন চললেও ছুটির দিনগুলিতে তিনি কলকাতা ও আসানসোলে গিয়ে প্রচারে নামবেন। কিন্তু দল যখন এর পরেও তালিকায় নাম রাখেনি, তখন তিনি নিজেকে ব্রাত্য মনে করছেন।

লকেটের এই বক্তব্য শুনে অর্জুন বলেন, ‘‘আমার কাজ ছিল প্রচারের জন্য সকলকে বলা। সেই কাজটা আমি করেছি। এর পরে কার নাম তালিকায় আছে বা নেই, সেটা আমার এক্তিয়ারে নয়। আর কেউ যদি প্রচারে না নামতে চান, তাতেও আমার কিছু বলার নেই।’’

প্রসঙ্গত, এ বার বালিগঞ্জে প্রার্থী হয়েছেন রাজ্য বিজেপি-র অন্যতম মুখপাত্র কেয়া ঘোষ। অন্য দিকে, আসানসোলের প্রার্থী লকেটের সঙ্গেই রাজ্যের সাধারণ সম্পাদক হওয়া বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পাল। দুই প্রার্থীই আগে মহিলা মোর্চার নেত্রী ছিলেন। আর তখন মহিলা মোর্চার রাজ্য সভানেত্রী ছিলেন লকেট। কিন্তু সেই লকেটই কেয়া ও অগ্নিমিত্রার প্রচারে আসতে নারাজ। লকেট এ দিন বলেন, ‘‘আমাদের দলে ইচ্ছা মতো কিছু করা যায় না। সব কিছুতেই দলীয় নির্দেশ মান্য করতে হয়। আমার নাম তালিকায় নেই মানে, নেতৃত্বের কোনও নির্দেশ নেই। তাই আমি নিজের থেকে প্রচারে নামতে পারি না। তবে আমার খুবই ইচ্ছা ছিল। যাই হোক, নেতৃত্ব যখন আমায় গুরুত্বপূর্ণ মনে করছেন না তখন আর প্রচারে অংশ নিচ্ছি না।’’

লকেটকে নিয়ে ইদানীং কালে রাজ্য বিজেপি-র মধ্যে নানা জল্পনা তৈরি হয়েছে। এ বার তা আরও বাড়তে পারে বলেই মনে করছেন গেরুয়া শিবিরের অনেক নেতা। তাঁদের বক্তব্য, গত পুরসভা নির্বাচনের সময়ে লকেট রাজ্যে কোনও প্রচারেই অংশ নেননি। সেই সময়ে উত্তরাখণ্ড বিধানসভা নির্বাচনের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল তাঁকে। কিন্তু উত্তরাখণ্ডের ভোটপর্ব মিটে গেলেও লকেট বাংলায় আসেননি। সেই কারণেই সম্ভবত তাঁকে এ বার আর তালিকায় রাখা হয়নি। আবার বিজেপি-র বিক্ষুব্ধ নেতাদের সঙ্গে লকেটের নিয়মিত যোগাযোগ রয়েছে বলেও মনে করে রাজ্য বিজেপি-র শাসক গোষ্ঠী। সম্প্রতি বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেওয়া জয়প্রকাশ মজুমদার থেকে বিক্ষুব্ধ সায়ন্তন বসু, রীতেশ তিওয়ারিদের সঙ্গে একাধিক বৈঠকে দেখা গিয়েছে লকেটকে। দলের সাংগঠনিক বৈঠকেও নেতৃত্বের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তুলতে দেখা যায় তাঁকে। এই সব কারণে রাজ্য বিজেপি নেতৃত্বের সঙ্গে খানিক দূরত্ব তৈরি হয়েছে লকেটের। এ বার দুই উপনির্বাচনের প্রচার নিয়ে তৈরি হওয়া বিতর্ক সেই দূরত্ব আরও বাড়াবে বলেই মনে করা হচ্ছে।

শুধু লকেট নয়, বিজেপি-র ভোট-প্রচারক তালিকায় নাম নেই সম্প্রতি রাজ্য নেতৃত্বের সঙ্গে দূরত্ব তৈরি হওয়া সায়ন্তন বসু, রাজু ভট্টাচার্যদেরও। বগটুই আন্দোলন থেকেই দূরেই রাখা হয়েছে এই নেতাদের। তালিকায় নাম নেই রাজ্য বিজেপি-র প্রধান মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্যেরও। এই প্রসঙ্গে শমীক বলেন, ‘‘তালিকা তৈরি করাটা সাংগঠনিক বিষয়। এই বিষয়ে আমার কথা বলার এক্তিয়ার নেই। আর আমার কাছে দলের যে কোনও সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত। আমাকে যে দায়িত্ব দল দিয়েছে, তাতেই আমি খুশি এবং ব্যস্ত। আমি মনে করি, নেতৃত্ব যেটা ঠিক মনে করেছেন সেটাই করেছেন।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy