গত এক বছরের বেশি সময় ধরে কম ঝড় যায়নি জিতেন্দ্রর উপর দিয়ে। একের পর এক হার দেখতে হয়েছে নিজের এলাকায়। তৃণমূল থেকে বিজেপিতে যোগ দিতে চাওয়ার সময় প্রথম বাধা যাঁর থেকে এসেছিল সেই বাবুল সুপ্রিয় এখন তৃণমূলের বিধায়ক। অন্য দিকে, নিজের খাসতালুক পাণ্ডবেশ্বরে পদ্ম প্রতীক নিয়ে বিধানসভা ভোটে হারের পরে আসানসোল পুরভোটেও বিজেপির উপরে আস্থা রাখেনি মানুষ। হার হয়েছে লোকসভার উপনির্বাচনেও।
হঠাৎ কেন সরব জিতেন্দ্র? ফাইল চিত্র
শুক্রবার সন্ধ্যায় অমিত শাহের বৈঠকে হাজির ছিলেন আসানসোলের বিজেপি নেতা জিতেন্দ্র তিওয়ারি। আর রবিবার দুপুরে হঠাৎ টুইটারে জিতেন্দ্র লিখলেন, ‘বাংলা জিততে চান? আসুন, আগে বাংলার মানুষের মন জিতি।’ এই টুইট দেখেই রাজনৈতিক মহলে শুরু হয় জল্পনা। তবে কি তৃণমূল থেকে বিজেপিতে আসা পাণ্ডবেশ্বরের প্রাক্তন বিধায়ক তথা আসানসোলের প্রাক্তন মেয়র বেসুরো? তবে জিতেন্দ্র সে সব মানতে রাজি নন। আনন্দবাজার অনলাইনকে তিনি বলেন, ‘‘এটা আমার ব্যক্তিগত মত। আমরা বাঙালির মন জিততে পারিনি বলেই ভোটে জিততে পারিনি।’’ কিন্তু এক বছর আগের পরাজয় নিয়ে শাহের সফরের পরেই এমন টুইট কেন? জিতেন্দ্র বলেন, ‘‘ওই সফরের সঙ্গে এই টুইটের কোনও সম্পর্ক নেই। আত্মসমালোচনা যে কোনও সময়েই করা যায়। সত্যিই তো আমরা যদি সংখ্যাগরিষ্ঠ বাঙালির মন জিততে পারতাম, তবে এমন ফল হত কি? আমিই কি হারতাম?’’
গত একটা বছরের বেশি সময় ধরে কম ঝড় যায়নি জিতেন্দ্রর উপর দিয়ে। একের পর এক হার দেখতে হয়েছে নিজের এলাকায়। বিধানসভা নির্বাচনের আগে আগে তৃণমূল থেকে বিজেপিতে যোগ দিতে যাওয়ার সময় প্রথম বাধা যাঁর থেকে এসেছিল সেই বাবুল সুপ্রিয় এখন তৃণমূলের বিধায়ক। অন্য দিকে, নিজের খাসতালুক পাণ্ডবেশ্বরে পদ্ম প্রতীক নিয়ে বিধানসভা ভোটে হারের পরে আসানসোল পুরভোটেও বিজেপির উপরে আস্থা রাখেনি মানুষ। স্ত্রী চৈতালী জিতলেও বেশির ভাগ ওয়ার্ডেই পরাজিত হয় বিজেপি। শেষ ধাক্কাটা এসেছে আসানসোল লোকসভা আসনের উপনির্বাচনে। এই প্রথমবার জিতেছে তৃণমূল। আসানসোলে ‘দোর্দণ্ডপ্রতাপ’ হিসেবে পরিচিত জিতেন্দ্র থাকার সময়ে যা পারেনি বাংলার শাসক দল। পর পর দু’বার বাবুলের কাছে পরাজিত হন জিতেন্দ্র। দলবদলেও শত্রুঘ্ন সিন্হার কাছে পরাজিত হন অগ্নিমিত্রা পাল। আর সেটাও বড় ব্যবধানে। পশ্চিম বর্ধমান জেলার রাজনৈতিক মহল বলে, এই হার আসলে জিতেন্দ্রর। রাজ্য বিজেপিতে একের পর এক নেতার গলায় সম্প্রতি বিদ্রোহের সুর দেখা গিয়েছে। তা মেটাতে রাজ্য সফরে এসে বার্তাও দেন শাহ। কিন্তু সেই সমস্যা যে মিটছে না, সেটাই ফুটে উঠল জিতেন্দ্রর টুইটে।
Want to win Bengal?
— Jitendra Tiwari * জিতেন্দ্র তিওয়ারি (@JitendraAsansol) May 8, 2022
Let us win the hearts of the people of Bengal!!
নির্বাচনে জিততে না পারলেও বিজেপি সাংগঠনিক ক্ষেত্রে গুরুত্ব দিয়েছে জিতেন্দ্রকে। সুকান্ত মজুমদার রাজ্য সভাপতি হওয়ার পরে তাঁকে বীরভূম জেলার পর্যবেক্ষকের দায়িত্ব দেওয়া হয়। সেই পদাধিকারেই শাহের বৈঠকে ডাক পেয়েছিলেন জিতেন্দ্র। সদ্যই কেন্দ্রীয় সরকারের নীতির বিরোধিতা করে পুরনো দল তৃণমূলে ফেরার জল্পনা তৈরি করেছেন ব্যারাকপুরের বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিংহ। সেই জল্পনা কি জিতেন্দ্রকে নিয়েও তৈরি হবে? জবাবে আসানসোলের বিজেপি নেতা বলেন, ‘‘আমি তো দলবিরোধী কিছু লিখিনি। আমার যেটা মনে হয়েছে সেটা টুইটারের মাধ্যমে প্রকাশ করেছি শুধু। এ নিয়ে দলবদলের কথা আসছে কেন?’’ তবে কি রাজ্য বিজেপি নেতৃত্বের বাঙালি মন জয়ের লক্ষ্য নেই বলে মনে হচ্ছে? সরাসরি সেই প্রশ্নের উত্তর এড়িয়ে জিতেন্দ্র বলেন, ‘‘কী করা দরকার সেটাই আমি বলেছি। বলতে চেয়েছি, বাংলার মানুষের মন জয় করতে হবে। এটা আমার মত। কী ভাবে জয় করতে হবে সেটা তো আমার একার ভাবার বিষয় নয়।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy