কেন এলেন না দিলীপ? —ফাইল চিত্র
বিজেপির ‘এগরা চলো’ মিছিল হল। কিন্তু দিলীপ ঘোষের মানভঞ্জন করা গেল না। নিজের লোকসভা এলাকায় দলীয় মিছিলে পা মেলালেন না মেদিনীপুরের সাংসদ দিলীপ। মিছিলে শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে দিলীপের উপস্থিত থাকার কথা থাকলেও শেষ বেলায় তা নিয়ে বিরোধী দলনেতা এবং বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভপতির দ্বন্দ্ব শুরু হয়ে যায়। যা মিটিয়ে ফেলতে রাজ্য নেতৃত্ব তো বটেই স্বয়ং শুভেন্দুও উদ্যোগ নেন বলে জানা যায়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত দিলীপের মানভঞ্জন হল না। বাজি কারখানায় বিস্ফোরণের ঘটনায় রাজ্য সরকারের ভূমিকার প্রতিবাদে ‘এগরা চলো’ ডাক হয়ে গেল শুভেন্দুর ‘একলা’ মিছিল।
দিলীপ যখন বিজেপির রাজ্য সভাপতি ছিলেন, তখন শুভেন্দুর সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক যে খুব একটা ‘মসৃণ’ ছিল না, তা সকলেই জানতেন। এখনও সে সম্পর্ক ‘মধুর’ হয়নি বলেই দাবি করেন গেরুয়া শিবিরের অনেক নেতাই। সেই দাবি যে অমূলক নয় তা, স্পষ্ট হয়ে গেল মঙ্গলবার।
এগরায় মঙ্গলবার বিজেপি যে বড় আকারের মিছিল করবে তা অনেক আগেই ঠিক করে রাজ্য বিজেপি। এগরা শুভেন্দুর জেলা পূর্ব মেদিনীপুরে। আবার দিলীপের লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত। তাই দল ঠিক করেছিল, মিছিলের সামনে থাকবেন শুভেন্দু ও দিলীপ। সেই মতো পোস্টারও তৈরি হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু শেষবেলায় সেই পোস্টার বদলে যায়। দিলীপের নাম বাদ দিয়ে শুধুই শুভেন্দু উপস্থিত থাকবেন বলে জানানো হয়। তখন থেকেই দিলীপ অনুগামীরা বলতে শুরু করেন, ‘‘এটা দাদাকে অসম্মান। নিজের সংসদীয় এলাকায় প্রাক্তন রাজ্য সভাপতির নাম বাদ দেওয়াটা গুরুতর অন্যায়।’’ তাঁরা এমনটাও দাবি করেন যে, দিলীপ থাকলে তিনি মিছিলে থাকবেন না বলেও জেলা সংগঠনকে জানিয়েছেন শুভেন্দু। এ নিয়ে বিজেপির পক্ষে আনুষ্ঠানিক ভাবে কিছু বলা না হলেও জল্পনা শুরু হয়, আদৌ মিছিলে দিলীপ যোগ দেবেন কি!
দিলীপ যে মিছিলে যোগ না-ও দিতে পারেন, সেটা সোমবারই লিখেছিল আনন্দবাজার অনলাইন। বিজেপির কাঁথি সাংগঠনিক জেলার নেতারা প্রথমে জানিয়েছিলেন, দিলীপ মঙ্গলবার উত্তরবঙ্গ সফরে থাকবেন বলে মিছিলের পোস্টার থেকে নাম বাদ দেওয়া হয়েছে। যদিও গত রবিবারই বিজেপির রাজ্য কর্মসমিতির বৈঠকে ঠিক হয়ে যায় উত্তরবঙ্গ নয়, দিলীপ মেদিনীপুর ও ঘাটাল জেলার কর্মসমিতির বৈঠকে যোগ দেবেন মঙ্গলবার। দুপুরে দাসপুরে এবং বিকেলে বেলদায় ছিলেন দিলীপ। মাত্র ২০ কিলোমিটার দূরের বেলদায় থাকলেও যাননি এগরায়। এ নিয়ে কথা বলতে একাধিক বার দিলীপের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও কথা বলা সম্ভব হয়নি। তাঁর এক সহকারী জানান, দিলীপ দলীয় বৈঠকে রয়েছেন।
দিলীপ যাতে মিছিলে যান তার জন্য কম চেষ্টা করেননি বিজেপির রাজ্য নেতৃত্ব। গেরুয়া শিবির সূত্রে খবর, মানভঞ্জনের জন্য একাধিক নেতা তাঁকে ফোন করেছিলেন। ‘যাব না’ বলেননি কাউকেই। তবে ‘যাবেন’ও বলেননি। বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, দিলীপ যাতে মিছিলে আসেন, তার জন্য কাঁথি জেলার বিজেপি নেতারা তো বটেই স্বয়ং শুভেন্দুও উদ্যোগ নেন। তবে এ বিষয়ে শুভেন্দু কোথাও কোনও মন্তব্য করেননি। এ দিন মিছিলে হাঁটার পরে তিনি বরং রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধেই সরব হয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় বাজি উদ্ধার আসলে মানুষকে ভুল বোঝানোর চেষ্টা।’’ এগরা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘অনেক আগেই মুখ্যমন্ত্রীর আসা উচিত ছিল। ওঁর তো হেলিকপ্টার রয়েছে, তবুও তিনি যখন আসবেন তত দিনে শ্রাদ্ধ-শান্তি সব শেষ হয়ে যাবে।’’ যদিও বিজেপির মঙ্গলবারের কর্মসূচির মূল আলোচ্য হয়ে থাকে দিলীপের অনুপস্থিতি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy