বাবুল-দিলীপ নতুন তরজা। ছবি: সংগৃহীত।
কিছু দিনের বিরতির পর, বাবুল সুপ্রিয় বনাম দিলীপ ঘোষের তরজা আবার শুরু। এ বার বিষয় পূর্ব বর্ধমানের শক্তিগড়ে খুন হওয়া রাজেশ ঝা ওরফে রাজুর বিজেপিতে যোগদান পর্ব। শনিবার সন্ধ্যায় শক্তিগড়ে খুন হন আসানসোল-রানিগঞ্জ কয়লা খনি এলাকায় পরিচিত নাম রাজেশ ঝা ওরফে রাজু। তার পর পরই রাজুর বিজেপিতে যোগদান নিয়ে দলের প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ এবং বাংলার কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয়কে আক্রমণ করেন রাজ্যের মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়। এ বার তার জবাব দিতে গিয়ে বাবুলকে পাল্টা আক্রমণ করলেন দিলীপ। বাবুল বিজেপিতে থাকার সময় দিলীপের সঙ্গে তাঁর লড়াই প্রায় রোজকার বিষয় ছিল। শেষ বেলায় যা তুঙ্গে ওঠে। রাজু খুনের ঘটনায় সেই লড়াই ফিরে এল বাংলার রাজনীতিতে।
রাজু যখন বিজেপিতে যোগ দেন, বাবুল তখন আসানসোলের সাংসদ। এই যোগদানে তিনি রাজি ছিলেন না দাবি করে শনিবার সন্ধ্যাতেই টুইট করেন বাবুল। লেখেন, ‘‘যে কোনও মৃত্যুই দুর্ভাগ্যজনক। আইন ভাঙলে আদালতেই তার বিচার হওয়া উচিত। এটা লিখছি কারণ, এই রাজু ঝাকে নিয়েই আমার সঙ্গে রাজ্য বিজেপির যারা আজ বড় বড় কথা বলছে, তাদের চূড়ান্ত মতবিরোধ হয়। রাজুকে ঘটা করে বিজেপিতে যোগদান করায় দিলীপ ঘোষ এবং কৈলাস বিজয়বর্গীয়। এ বার এরা বলবে ‘চিনি না’!’’
শনিবার এ নিয়ে কিছু না বললেও রবিবার মন্তব্য করেছেন দিলীপ। আনন্দবাজার অনলাইনকে তিনি বলেন, ‘‘চিনি না বলছি না তো! উনি (বাবুল) আগে থেকেই আমি কী বলব ভেবে নিচ্ছেন কেন? সেই সময়ে অনেকেই বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন। তাঁদের মধ্যে রাজুও ছিলেন। কে চোর, কে ডাকাত সব সময়ে তার খোঁজ রাখা যায় না। অপরাধ করার জন্য কাউকে বিজেপিতে আশ্রয় দেওয়া হয়নি।’’
বাবুল রবিবারেও আবার টুইটারে সরব। একটিতে লিখেছেন, ‘‘যে সব কয়লা মাফিয়ারা বিজেপিতে যোগদান করেছিল, সিবিআই, ইডি কেন তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত করছে না? সমস্ত রাজ্যে, সব বিরোধী দলের নেতাদের বিরুদ্ধেই সিবিআই, ইডি হচ্ছে। আমার বর্তমান দলের বিরুদ্ধেও হচ্ছে কিন্তু কী ‘মন্ত্রে’ বিজেপির সব নেতা ‘শুদ্ধ’ হচ্ছে? আর আসানসোলের মাফিয়াদের নাম তো আমিই দিয়েছিলাম।’’
রাজু যখন বিজেপিতে যোগ দেন তখন মঞ্চে ছিলেন বারাকপুরের সাংসদ অর্জুন সিংহ। খাতায়কলমে বিজেপি সাংসদ হলেও অর্জুন এখন তৃণমূলে। তিনি রবিবার সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘‘রাজু আমার ছোট ভাইয়ের মতো। অতীতে কী করেছে জানি না, তবে এখন ভাল ব্যবসা করছিল। অন্যরা ওর সঙ্গে যোগসূত্রে এড়িয়ে যাবেন কি যাবেন না জানি না, তবে আমি বলছি, ও আমার ছোট ভাইয়ের মতো ছিল।’’ তবে অর্জুনের বর্তমান দলের বিধায়ক তথা রাজ্যের পর্যটনমন্ত্রী বাবুল ‘মাফিয়া’ পরিচয়ই দিচ্ছেন রাজুকে। রবিবার তিনি টুইটারে লিখেছেন, ‘‘মনে হচ্ছে আজ যেন ইডি, সিবিআই দু’টি রাজনৈতিক দলে পরিণত হয়েছে। যারা কেন্দ্রে বিজেপির সঙ্গে জোট সরকারে রয়েছে। তাই তাদের নিশানা শুধুমাত্র বিরোধীরা। সব রাজ্যের বিরোধী নেতাদের ব্যাপারেই এই কথা খাটে কেন? বিজেপিকে তার জবার দিতেই হবে। কেন আইনের এই অপব্যবহার?’’
তৎকালীন কয়লামন্ত্রীদের কাছে যাদের বিরুদ্ধে অনেক 'তথ্য' দিয়েছিলাম তাদের অনেকেই আজ @BJP4Bengal এ• আমার প্রশ্ন simple•CBI-ED হচ্ছে হোক কিন্তু শুধু বিরোধীদের বিরুধ্যে কেন?স্বয়ং কয়লমন্ত্রীর সঙ্গে যারা কয়লা মাফিয়াদের আলাপ করাচ্ছে, FB-এ তার ছবি ঘুরছে, তারা 'শুদ্ধ' হচ্ছে কিভাবে? https://t.co/FKdG5XTdWI
— Babul Supriyo (@SuPriyoBabul) April 2, 2023
বাবুলকে পাল্টা আক্রমণ শানিয়ে দিলীপ বলেন, ‘‘আমাদের দলে কোনও চোর, জোচ্চর নেই। উনি যখন আমাদের দলে ছিলেন, মন্ত্রীও ছিলেন তখন ওঁর আপ্তসহায়ককে কেন ডেকেছিল সিবিআই? উনি কি সেই কারণেই বিজেপি থেকে পালিয়ে গিয়েছিলেন? আর এখন যে দলে গিয়েছেন তারও নেতা, মন্ত্রীদের বার বার ডাকছে কেন্দ্রীয় সংস্থা। অনেকে জেলেও রয়েছেন। বোঝাই যাচ্ছে, কে কেমন সঙ্গ পছন্দ করেন।’’ রাজুকেও সিবিআই অতীতে তলব করেছিল বলে দাবি করেন দিলীপ। সেই সঙ্গে বলেন, ‘‘সিবিআই বা ইডি কাকে ডাকবে আর কাকে ডাকবে না, সেটা তাদের ব্যাপার। এটা নিয়ে আমার কিছু বলার নেই।’’
রবিবার একটি টুইটে বাবুল রাজু খুনের বিষয়ে বিজেপির বিরুদ্ধে লড়তে বাম, কংগ্রেসের জোটও চেয়েছেন। লিখেছেন, ‘‘মন থেকে চাইব, অধীররঞ্জন চৌধুরী, মহম্মদ সেলিমের মতো নেতারা এটা নিয়ে সরব হন। আপনারা যাঁদের বিরোধিতা করেন তাঁদের বিরুদ্ধে তো এজেন্সি সক্রিয় কিন্তু বিজেপির এই দাগী ‘নেতাগুলো’ বেঁচে যাচ্ছে কী মন্ত্রে?’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy