তথাগত-দিলীপ তরজা নতুন মাত্র পেল। ফাইল চিত্র
বিজেপির ঘরোয়া যুদ্ধ মিটছে না। একের পর এক নেতা রাজ্য নেতৃত্বের বিরুদ্ধে যখন ক্ষোভ প্রকাশ করে চলেছেন তখন দুই প্রাক্তন রাজ্য সভাপতির মধ্যে লড়াই চলছে। টুইটারে তথাগত রায় যেমন সরব তেমনই সংবাদমাধ্যমে পাল্টা মন্তব্যে আক্রমণ শানিয়ে চলেছেন দিলীপ ঘোষ। সেই বাগ্যুদ্ধ নতুন মাত্রা পেল বৃহস্পতিবার। তথাগতর আক্রমণের প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে দিলীপের দাবি, সেই সময়ে দলীয় দফতরকে পানশালা বানানো হয়েছিল। অতীতে তথাগত পানাসক্ত বলে ঘনিষ্ঠ মহলে অনেক সময়েই সমালোচনা করতে দেখা গিয়েছে দিলীপকে। কিন্তু এই প্রথম প্রকাশ্যে সেই আক্রমণ করলেন। গত কয়েকদিন ধরে তাঁকে তথাগত ‘ফিটার মিস্ত্রি’ বলে সম্বোধন করা প্রসঙ্গে দিলীপ বলেন, ‘‘যাঁরা লোকের পায়ে ধরে চাকরি পেয়েছেন, যাঁরা বিজেপি পার্টি অফিসকে পানশালা বানিয়ে দিয়েছিলেন, জীবনে ফুর্তি ছাড়া কিছু করেননি, যাঁরা সিপিএম ও তৃণমূলের থেকে সব সুবিধা নিয়েছেন, তাঁদের উদ্দেশ্য ছিল বিজেপি যাতে কোনও দিনই চার শতাংশের বেশি ভোট পায় না। সেই সব আহাম্মকদের কথা কে শোনে?’’
বিজেপির দুই প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ও তথাগতর মধ্যে ‘মধুর’ সম্পর্কের কথা রাজনৈতিক মহলের কারও অজানা নয়। গত বিধানসভা নির্বাচনের পরে দিলীপ ছাড়াও কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয়কে আক্রমণ করতে শুরু করেন তথাগত। টুইটারে নানা মন্তব্য করেন দলের আরও দুই কেন্দ্রীয় নেতা শিবপ্রকাশ এবং অরবিন্দ মেনন প্রসঙ্গে। তথাগতর আক্রমণ চরমে পৌঁছলে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব তথাগতকে ডেকে সতর্কও করেন। উত্তর-পূর্বের বিভিন্ন রাজ্যের প্রাক্তন রাজ্যপালের সঙ্গে কথা বলেন স্বয়ং সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নড্ডা। তাতে তথাগতর আক্রমণ কিছুদিন স্তিমিত হলেও গত কয়েকদিনে তা ফের শুরু হয়।
এই পর্বে শুরুটা অবশ্য করেন তথাগতই। গত সোমবার একটি টুইটে তিনি লেখেন ‘কেডিএসএ (কৈলাস, দিলীপ, শিবপ্রকাশ, অরবিন্দ) টিম পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির জেতা গেম হারিয়ে দিয়েছে এবং সেই প্রক্রিয়ার মধ্যে কামিনী-কাঞ্চন আকণ্ঠ উপভোগ করেছে। আমার জীবনে এ রকম রাজনৈতিক ভাবে নিজের পায়ে কুড়ুল মারা আমি কখনও দেখিনি বা শুনিনি। এই কথাটা প্রকাশ্যে বলা প্রয়োজন ছিল। কারণ তা না হলে এরা যেরকম চালাচ্ছিল তাই চালিয়ে যেত।’ আসানসোল ও বালিগঞ্জের উপনির্বাচনের ফল নিয়েও একই ভাবে আক্রমণ করেন তথাগত। লেখেন, ‘উপনির্বাচনে বিজেপির যা ফল হল তা তো অপ্রত্যাশিত নয় ! শুধু শুধু দুটো মেয়েকে এই উৎকট গরমের মধ্যে ঘুরিয়ে অপমান করানো হল। বেবুন এবং ফিটার মিস্ত্রি যা মজা লুটবার তা তো লুটে নিয়েছে। বিজেপির শোচনীয় ফল— সেটা মজা লোটারই পরিণাম। কর্মীদের মনোবল তলানিতে। পেট্রল-গ্যাসের দাম গৌণ কারণ।
এর পরেই জবাব দেন দিলীপ। তথাগত প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসু এবং তৃণমূলের থেকেও সুবিধা নিয়েছেন বলে সংবাদমাধ্যমে দাবি করেন। এর পরেই পাল্টা আক্রমণ শানান তথাগত। দিলীপকে ‘ফিটার মিস্ত্রি’ বলে কটাক্ষ করেন। মেদিনীপুরের সাংসদ দিলীপের শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে টুইটারে তথাগত লেখেন, ‘যে ফিটার মিস্ত্রিটি ২০১৬ সালের নির্বাচনের আগে মিথ্যা এফিডেভিট করে নিজেকে ঝাড়গ্রাম পলিটেকনিকের ডিপ্লোমাপ্রাপ্ত বলে লিখেছিলেন, এবং যা ওই পলিটেকনিক অস্বীকার করেছে, তার কাছে ক্ষমা চাওয়ার প্রশ্ন নেই। কারণ, মিথ্যা এফিডেভিট করা একটি দণ্ডযোগ্য অপরাধ।’
বৃহস্পতিবার তারই জবাব দিলেন দিলীপ। দলীয় দফতরকে পানশালা বানানোর অভিযোগ ছাড়াও তথাগতকে কটাক্ষ করে দিলীপ বলেন, ‘‘বয়সের দোষ। ৭২ হয়ে গেলে মাথা কাজ করে না।’’ বৃহস্পতিবার বিকেল পর্যন্ত দিলীপের এই বক্তব্যের জবাব দেখা যায়নি তথাগতর টুইটার হ্যান্ডলে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy