অভিযোগ, বিজেপি নেতা চেয়ার ছুড়ে মারায় আহত হন বিডিও। সিসিটিভি ফুটেজে এই ঘটনার ছবি দেখা গিয়েছে বলে দাবি। —নিজস্ব চিত্র।
সংখ্যাগরিষ্ঠ হওয়া সত্ত্বেও তৃণমূলের পঞ্চায়েত প্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা মুলতুবির অভিযোগে বিডিওকে মারধর করে চেয়ার ছুড়ে মারলেন এক বিজেপি নেতা। এর জেরে বিডিওর হাতে এবং মাথায় চোট লেগেছে বলেও অভিযোগ। ঘটনাস্থলে পুলিশ পৌঁছনোর আগেই বিজেপি কর্মী-সদস্যরা ব্লক অফিস ছেড়ে চলে যান। তবে সোমবার বালুরঘাট ব্লকের ডাঙ্গা পঞ্চায়েতের এই ঘটনায় আইনি পদক্ষেপ করবেন বলে জানিয়েছেন ওই বিডিও। তাঁর বিরুদ্ধে অনাস্থার বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার অভিযোগ করেছেন বিজেপি নেতারা। অন্য দিকে, একে ধিক্কার জানিয়েছে তৃণমূল।
ডাঙ্গা পঞ্চায়েতের মোট সদস্যসংখ্যা কুড়ি। তার মধ্যে দশ জন সদস্য নিয়ে পঞ্চায়েতের দখল নিয়েছিল তৃণমূল। অভিযোগ, সম্প্রতি এক দলীয় সদস্যের মৃত্যুর পরেও তাঁকে জীবিত দেখিয়ে কার্যত বলপূর্বক পঞ্চায়েত নিজেদের দখলে রেখে দিয়েছে শাসকদল। এই ঘটনায় বিডিও অনুজকুমার সিকদারের কাছে পঞ্চায়েতের বিরুদ্ধে অনাস্থার প্রস্তাব তোলে বিজেপি।
সোমবার অনাস্থা বৈঠকে বিজেপির দশ জন সদস্য সশরীরে অংশ নিলেও তৃণমূলের সদস্যরা অনুপস্থিত ছিলেন। এই পরিস্থিতিতে বিজেপি সদস্যদের ডাকা অনাস্থা মুলতুবি করে দেন বৈঠকে থাকা বিডিও অফিসের প্রতিনিধিরা। এই ঘটনায় উত্তেজনার সৃষ্টি হলে পঞ্চায়েত ভবন থেকে বিজেপি সদস্যদের বার করে দেয় পুলিশ। অভিযোগ, এর পরেই ক্ষুব্ধ বিজেপি কর্মী-সদস্যরা ব্লক অফিসে বিডিওর ঘরে ঢুকে তাঁকে চেয়ার ছুড়ে মারেন। সুভাষ সরকার নামে এক বিজেপি নেতা বিডিওকে আক্রমণ করেছেন বলেও অভিযোগ। তিনি চেয়ার ছুড়ে মারায় আহত হন বিডিও। সিসিটিভি ফুটেজে ওই ঘটনার ছবি ছড়িয়ে পড়ে। যদিও তার সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন।
যদিও বিজেপির ডাকা অনাস্থা মুলতুবির অভিযোগ এবং কী কারণে তাঁর উপর হামলা সে সবের কারণ সম্পর্কে কিছুই জানেন না বলে দাবি করেছেন বিডিও। তাঁর কথায়, ‘‘সবে লাঞ্চ করে উঠেছি। সে সময় অফিসে ঢুকে চেয়ার ছুড়ে মারলেন এক বিজেপি সদস্য। এর বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ করব।’’ তৃণমূলের মৃত সদস্যকে কি জীবিত বলে দেখানো হচ্ছে? এই প্রশ্নের উত্তরে বিডিওর দাবি, তিনি এ বিষয়ে কিছুই জানেন না।
গোটা ঘটনায় বিডিওকেই কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছেন জেলা বিজেপি নেতৃত্ব। বালুরঘাট জেলা বিজেপি সভাপতি স্বরূপ চৌধুরী বলেন, ‘‘ডাঙ্গা পঞ্চায়েতে অনাস্থা এনেছিলাম আমরা। বিজেপির দশ জন উপস্থিত ছিলেন। অনাস্থা চলার সময় বিডিওর উপরে মহিলা সদস্যদের উপর চরম অত্যাচার করা হয়েছে। তাঁদের হাতের শাঁখা ভেঙে দিয়েছে। অনাস্থা চলাকালীন প্রশাসনিক দায়িত্ব ছিল বিডিওর। কেন সে দিকে লক্ষ রাখেননি তিনি? আমরা এ নিয়ে বিডিওর বিরুদ্ধে নালিশ করব। উনিশ জনের মধ্যে দশ জন উপস্থিত থাকলে তৃণমূলের পঞ্চায়েত পড়ে যাওয়ার কথা। বিডিও বিষয়টা ধামাচাপা দেওয়ার জন্য এটা করছেন। তিনি পরিস্থিতি পাল্টানোর চেষ্টা করছেন। সিসিটিভিতে যা-ই দেখানো হোক না কেন, জনপ্রতিনিধিদের উপর অত্যাচার হয় কী করে?’’
এই ঘটনাকে দুঃখজনক বলেছেন জেলা তৃণমূল সভাপতি মৃণাল সরকার। তিনি বলেন, ‘‘এটা খুবই দুঃখজনক ঘটনা। সরকারের আধিকারিকের উপর এ ধরনের ঘটনা মেনে নেওয়া যায় না। দলগত ভাবে এর ধিক্কার জানাব। অনাস্থায় নিজেদের সদস্যদের হাজির করতে পারেনি বিজেপি। সেটা তাদের ব্যর্থতা। হয়তো হেরে যাওয়ায় তাদের ক্ষোভ বিডিওর উপরে দেখাতে চাইছে বিজেপি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy