Advertisement
২২ ডিসেম্বর ২০২৪
Ayodhya Rammandir

রোজ বাংলা থেকে অযোধ্যা যাওয়ার বিশেষ ট্রেন! দলীয় কর্মীদের ভোটের আগেই রামলালা দর্শন চায় বিজেপি

কলকাতা থেকে অযোধ্যার দূরত্ব মোটামুটি ৮৭৫ কিলোমিটার। বাংলার ভোটে সেই দূরত্ব ঘোচাতে চায় বিজেপি। তাই বাংলার কর্মীদের নিয়ে যেতে চায় রামের অযোধ্যাধামে। তারই নানা উদ্যোগ শুরু হচ্ছে ভোটের বছরে।

বাংলা-অযোধ্যা ‘রাম-সেতু’ বানাতে চায় বিজেপি।

বাংলা-অযোধ্যা ‘রাম-সেতু’ বানাতে চায় বিজেপি। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

পিনাকপাণি ঘোষ
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৮ ডিসেম্বর ২০২৩ ১৭:২৬
Share: Save:

লোকসভা ভোটে বিজেপির প্রধান ‘সঙ্গী’ হবে অযোধ্যার মন্দির। তাই ভোটযুদ্ধে নামার আগে বাংলা থেকে দলের নেতা-কর্মীদের অযোধ্যা পাঠাতে চায় বিজেপি। রামমন্দিরে রামলালার দর্শন সেরে ফেরার পরেই শুরু হবে নির্বাচনী লড়াই। বুধবার রাজ্য বিজেপির বর্ধিত কার্যকারিণী বৈঠকে এ বিষয়ে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, রেল গোটা ফেব্রুয়ারি মাস জুড়েই পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন স্টেশন থেকে অযোধ্যাগামী বিশেষ ট্রেন চালাবে। সেই ট্রেনে চেপেই নেতা-কর্মীদের যেতে হবে অযোধ্যায়। শ্রীরামের ধাম দেখাতে নিয়ে যেতে হবে বুথ স্তরের কর্মী থেকে বিজেপি সমর্থকদেরও।

কলকাতা থেকে রেলপথে অযোধ্যাধামের (নতুন নাম) দূরত্ব ৮৭৫ কিলোমিটার। কলকাতা স্টেশন থেকে প্রতিদিন রাতে ছাড়ে জম্মু-তাওয়াই এক্সপ্রেস। পাশাপাশি, হাওড়া থেকে প্রতিদিন ছাড়ে দুন এক্সপ্রেস। রেলের বর্তমান পরিষেবায় বাংলা থেকে সরাসরি অযোধ্যা যেতে হলে এই দু’টি ট্রেনই রয়েছে। কিন্তু বিজেপি চায় আগামী ২২ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর হতে নতুন রামমন্দির উদ্বোধনের পরে বাংলা থেকে কয়েক লক্ষ মানুষ যাবেন অযোধ্যায় মন্দির দর্শনে। ফলে রেলের ওই দু’টি ট্রেন তাঁদের নিয়ে যাওয়ার জন্য পর্যাপ্ত হবে না। সেই কারণে রেলের কাছে ইতিমধ্যেই তারা বিশেষ ট্রেন চালানোর আর্জি জানিয়েছে। জানা গিয়েছে, রেলও বিষয়টি নিয়ে ভাবছে। শুধু বাংলা নয়, সব রাজ্য থেকেই এমন ট্রেন ছাড়ার পরিকল্পনা রয়েছে রেলের।

এই সব বিশেষ ট্রেনগুলিতে বিজেপি কর্মীদের পাশাপাশি সাধারণ যাত্রীরাও টিকিট কেটে তাঁদের গন্তব্যে যেতে পারবেন। তবে বিজেপি কর্মীদের ট্রেনের টিকিট ব্যক্তিগত ভাবে কাটতে হবে না তা দলের তরফে কেটে দেওয়া হবে, তা এখনও ঠিক হয়নি। বিজেপি নেতারা কেউই এ ব্যাপারে মুখ খুলতে রাজি নন। তবে ওই ট্রেনগুলি যাতে পশ্চিমবঙ্গ থেকে ফাঁকা না যায় এবং রেল যাতে ফেব্রুয়ারির পরেও ট্রেনগুলি চালিয়ে যায়, সে ব্যাপারে নেতা-কর্মীদের সক্রিয় হতে হবে বলে বুধবারের বৈঠকে বিজেপি রাজ্য নেতৃত্ব জানিয়েছেন। বৈঠকে উপস্থিত এক নেতা জানান, ‘‘দীর্ঘ লড়াইয়ের পরে অযোধ্যায় শ্রীরামের ভব্য মন্দির তৈরি হচ্ছে। আমরা সকলেই রামলালার দর্শন পেতে চাই। বিশেষ ট্রেনের ব্যবস্থা হলে তো ভালই হবে। নিজেরাই নিজেদের ভাড়া দিয়ে যেতে পারব। আর শ্রীরামের আশীর্বাদ নিয়েই হবে নিশ্চিত জয়ের লক্ষ্যে ভোটের লড়াই।’’

২২ জানুয়ারি উদ্বোধন হয়ে গেলেও অযোধ্যায় ২৪ জানুয়ারি পর্যন্ত পুণ্যার্থী আসার বিষয়ে নিয়ন্ত্রণ থাকবে। এর পর প্রতিটি রাজ্যের জন্য একটি করে ট্রেনের ব্যবস্থা করছে সঙ্ঘ পরিবারও। দীর্ঘ সময় ধরে যাঁরা রামমন্দির আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন সেই ট্রেনে তাঁদের নিয়ে যাওয়ার কথা। এর জন্য বিশ্ব হিন্দু পরিষদের তরফে বিভিন্ন রাজ্যের জন্য আলাদা আলাদা ট্রেনের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। পরিষদ সূত্রে জানা গিয়েছে, বাংলা থেকে সেই বিশেষ ট্রেনটি ছাড়বে ৫ ফেব্রুয়ারি। সেই ট্রেনটিই অযোধ্যায় দু’দিন থাকার পরে যাত্রীদের রাজ্যে ফিরিয়ে নিয়ে আসবে।

তবে বিজেপির উদ্যোগ পরিষদের থেকে আলাদা। তারা চাইছে রাজ্যের বিভিন্ন স্টেশন থেকে ট্রেন ছাড়ুক। উত্তর ও দক্ষিণবঙ্গের কোন কোন স্টেশন থেকে অযোধ্যাগামী ট্রেন চলবে, তা অবশ্য পুরোপুরিই নির্ভর করছে রেলের উপর। আপাতত বিজেপি কর্মীদের অযোধ্যার জন্য রাজ্য জুড়ে প্রচারে নামার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আগামী ১ থেকে ১৫ জানুয়ারি চলবে ‘নিমন্ত্রণ অভিযান’। বিজেপি কর্মীদের শহর এবং গ্রামে গিয়ে বাড়ি বাড়ি অযোধ্যায় যাওয়ার নিমন্ত্রণ পৌঁছে দিতে হবে। সেই নিমন্ত্রণপত্রের সঙ্গে অযোধ্যা থেকে আসা হলুদ চাল ‘অক্ষত’-ও বিলি করতে হবে।

বিজেপি চাইছে সরযূপারের অযোধ্যার হাওয়া লাগুক গঙ্গাপারের বাংলায়। তাই রামমন্দির উদ্বোধনের পরেই লোকসভা নির্বাচন পর্যন্ত গঙ্গা আর সরযূপারের যোগাযোগ স্থায়ী করতে রেলকে সেতু বানাতে চায় গেরুয়া শিবির। দলের আশা, সেই সেতু বেয়েই আসবে লোকসভা দখলের বিজয়রথ।

অন্য বিষয়গুলি:

Ayodhya Rammandir BJP
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy