প্রতীকী চিত্র।
শনিবার দলবদল করে বিজেপিতে এসেছিলেন ওঁরা পাঁচ জন। ঠিক ছিল, সোমবার দিন হাজির হবেন জলপাইগুড়ির ময়নাগুড়িতে ধর্মপুর গ্রাম পঞ্চায়েত দফতরে। কিন্তু এ দিন সকাল থেকে স্থানীয় লোকজন লাঠিসোঁটা এবং বিজেপির পতাকা নিয়ে সেই পঞ্চায়েত দফতরের সামনে এসে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। অভিযোগ তোলেন, এত দিন যাঁরা তৃণমূলে থেকে কাটমানি খেতেন, তাঁদের দলে এনে ঢোকানো হয়েছে। এই নিয়ে জেলা বিজেপির মধ্যেকার তীব্র দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে চলে আসে। যার জেরে দল থেকে বহিষ্কার করা হয় নব্য বিজেপি নেতা শিবশঙ্কর দত্তকে, যিনি আবার নিজেকে ‘মুকুল রায়ের লোক’ বলে পরিচয় দেন।
বিজেপি সূত্রের খবর, গোলমালের সূত্রপাত সেই পঞ্চায়েত ভোটের আগে। শিবশঙ্কর দত্ত তাঁর দলবল নিয়ে সে সময়ে বিজেপিতে যোগ দেন। সেই ভোটে ধর্মপুর গ্রাম পঞ্চায়েতে ১৩টির মধ্যে ৬টি আসনে জেতে বিজেপি। সেই দলে শিবশঙ্করের স্ত্রীও রয়েছেন। উল্টো দিকে ৭টি আসনে জিতে বোর্ড গঠন করে তৃণমূল। গত শনিবার সেই ৭-এর মধ্যে ৫ জন বিজেপিতে যোগ দেন। তার পরেই শিবশঙ্করেরা বলতে শুরু করেন, তৃণমূলে যাঁরা কাটমানি খেতেন, তাঁদেরই বিজেপিতে নিয়ে আসা হচ্ছে।
এ দিন শিবশঙ্করের লোকজনেরা পঞ্চায়েত দফতরের সামনে বিক্ষোভ দেখায়। বেগতিক দেখে বিজেপিতে নতুন যোগ দেওয়া ৫ জন আর দফতরমুখো হননি। এর পরে জেলা বিজেপি নেতৃত্ব পাল্টা অভিযোগ করেন, দলে নতুন যোগ দেওয়া কিছু নেতা নিজেদের মুকুল রায়ের ঘনিষ্ঠ পরিচয় দিয়ে দেদার কাটমানি খাচ্ছেন এবং টাকা খেয়ে তৃণমূলের লোকজনকে দলে নিয়ে আসছেন। একই সঙ্গে শিবশঙ্করকে বহিষ্কারেরও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বিজেপির জেলা সভাপতি দেবাশিস চক্রবর্তী বলেন, “শিবশঙ্কর দত্তের দলের সদস্যপদ আছে কি না জানি না। ওঁর সঙ্গে দলের কোনও যোগাযোগ আর নেই।” তাঁর আরও অভিযোগ, “কিছু লোক ব্লকে ব্লকে স্বঘোষিত বিজেপি নেতা হয়েছেন। এঁদের বিরুদ্ধে কাটমানি খাওয়া, টাকা নিয়ে দলে বেনোজল ঢোকানোর অভিযোগও রয়েছে।” তাঁর কথায়, এই নেতাদের চিহ্নিত করার কাজ শুরু হয়েছে। এঁদের সঙ্গে দলের সম্পর্ক নেই সে কথা বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানানো হবে।
অন্য দিকে শিবশঙ্কর দত্তের দাবি, “আমি প্রকাশ্যেই বলি, মুকুল রায় আমার নেতা।” তাঁর অভিযোগ, “এত দিন তৃণমূলের হয়ে প্রধান-সহ যে সদস্যেরা দেদার কাটমানি খেয়েছেন বলে বাসিন্দারা অভিযোগ করেছে, তাদেরই দলে আনা হয়েছে। এটা দলের রীতির বিরোধী।” এই নিয়ে মুকুল রায়কে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, ‘‘প্রথমত, কোথাকার ঘটনা, তা-ই জানি না। দ্বিতীয়ত, কে আমার লোক, তা-ও জানি না। তাই এই নিয়ে কিছুই বলতে পারব না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy