রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের বয়সও পঞ্চাশের আশপাশে।
বিজেপি-র যুব মোর্চার নতুন রাজ্য সভাপতি হয়েছেন ইন্দ্রনীল খাঁ। বয়স বত্রিশ বছর। এ বার তিনি যে কমিটি বানাবেন তাতে ৩৫-এর বেশি কাউকে রাখতে পারবেন না। এমনটাই নির্দেশ দিলেন বিজেপি-র কেন্দ্রীয় নেতা বিএল সন্তোষ। সোমবার নতুন রাজ্য কমিটি ও জেলা সভাপতিদের নিয়ে কলকাতায় জাতীয় গ্রন্থাগারের ভাষা ভবনে বৈঠক করেন দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) সন্তোষ। বিজেপি সূত্রে খবর, ওই বৈঠকে সন্তোষই জানিয়ে দিয়েছেন কোন কমিটিতে কোন বয়সের নেতাদের রাখা যাবে।
এ বিষয়ে সবচেয়ে বেশি কড়াকড়ি যুব শাখায়। সন্তোষের নির্দেশ অনুযায়ী, যুব মোর্চার জেলা নেতাদের বয়স হতে হবে ৩২ বছরের মধ্যে। আর মণ্ডল (শহর) স্তরের কমিটিতে রাখা যাবে ৩০ বছরের নীচে বয়স, এমন যুবদেরই। শুধু যুব মোর্চার ক্ষেত্রেই নয়, মূল বিজেপি-তেও থাকছে বয়সের কড়াকড়ি। ইতিমধ্যেই বিজেপি-র ৪২ জন জেলা সভাপতির নাম ঘোষণা করেছে। সোমবার তাঁদের নির্দেশ দিয়ে বলা হয়েছে, আগামী ৯ জানুয়ারির আগে জেলা কমিটি তৈরি করে ফেলতে হবে। আর জানুয়ারি মাসের মধ্যে তৈরি করতে হবে মণ্ডল কমিটি। তবে খেয়াল রাখতে হবে, কোনও মণ্ডল সভাপতির বয়স যেন ৪৫ বছরের বেশি না হয়।
তবে কি প্রবীণরা বিজেপি-র কোনও কমিটিতে জায়গা পাবেন না? এমন প্রশ্নেরও উত্তর দিয়েছেন সন্তোষ। রাজ্য নেতৃত্বকে তিনি জানিয়েছেন, জেলা, মণ্ডল বা বুথ কমিটিতে বয়সের কোনও বিধিনিষেধ থাকছে না। শুধুমাত্র মণ্ডল সভাপতির ক্ষেত্রেই বয়সের ঊর্ধ্বসীমা বেঁধে দেওয়া হল। সোমবারের রুদ্ধদ্বার বৈঠকে উপস্থিত রাজ্য বিজেপি-র এক শীর্ষ নেতা জানিয়েছেন, বিধানসভা নির্বাচনে আশানুরূপ ফল না হওয়ায় কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব রাজ্যের সংগঠনকে ঢেলে সাজাতে চাইছেন। মণ্ডল স্তরের নেতৃত্ব যাতে আরও বেশি করে কর্মসূচিমুখী হন, সেটাও নিশ্চিত করতে চাইছেন। সেই কারণেই অল্প বয়সের বিষয়টি ভাবনার মধ্যে রয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত বুধবার রাজ্য বিজেপি-র যে কমিটি ঘোষণা হয়েছে, সেখানেও কমবয়সিদের গুরুত্ব বেড়েছে। রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের বয়সও পঞ্চাশের আশপাশে। তাঁর কমিটিতে যে পাঁচ সাধারণ সম্পাদককে রাখা হয়েছে, তাঁদের সকলেরই বয়স পঞ্চাশের নীচে। এ ছাড়াও কমিটির অন্যান্য পদে অনেক কম বয়সের নেতা জায়গা পেয়েছেন। বাদ গিয়েছেন প্রবীণ রাজকমল পাঠক, প্রতাপ বন্দ্যোপাধ্যায়েরা। রাজ্য কমিটির গড় বয়স কম রাখাই শুধু নয়, সদ্য ঘোষিত জেলা সভাপতিদের ক্ষেত্রেও অল্পবয়সিদের প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। এ বার সব ক্ষেত্রেই বয়সের কড়াকড়ির নির্দেশ দেওয়া হল।
বিজেপি সূত্রে এটাও জানা গিয়েছে যে, এখন থেকে সংগঠনকে মজবুত করতে রাজ্য স্তরের আন্দোলনের থেকে জেলা ও মণ্ডল স্তরে যাতে বেশি করে কর্মসূচি পালন করা হয়, সে বিষয়ে নজর দিতে নির্দেশ দিয়েছে সন্তোষ। সোমবার ঠিক হয়েছে, কেন্দ্রীয় সরকারের বিভিন্ন প্রকল্প নিয়ে প্রশংসার পাশাপাশি রাজ্য সরকারের ব্যর্থতা নিয়ে মণ্ডল স্তরে লাগাতার কর্মসূচি হবে। রাজ্য নেতৃত্বের মুখাপেক্ষী না হয়ে মণ্ডল ও জেলা স্তরের নেতারাই সে সব আন্দোলনের মুখ হবেন। স্বাধীনতার ৭৫ বছর, নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর জন্মের ১২৫ বছর এবং ঋষি অরবিন্দের ১৫০ তম জন্মজয়ন্তী নিয়ে ২০২২ সালে সারা বছর রাজ্যে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করবে বিজেপি। ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর পাকিস্তানের সঙ্গে যুদ্ধে জয় পায় ভারত। বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ভারতীয় সেনার জয়কে উদ্যাপনের জন্য ‘বিজয় দিবস’ পালন করবে বিজেপি। ওই ঘটনার ৫০ বছর পূর্তিকে কাজে লাগিয়ে বাংলায় সংগঠন মজবুত করার নির্দেশও দিয়েছেন বিজেপি-র কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব।
বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, জানুয়ারি মাসের ৯ ও ১০ তারিখ কলকাতায় আসবেন দলের সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নড্ডা। তার আগেই রাজ্যের সর্বত্র জেলা কমিটি তৈরি করে ফেলার সিদ্ধান্ত হয়েছে। আর জানুয়ারি মাসের চতুর্থ সপ্তাহে উত্তরবঙ্গে আসবেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। সেই সফরের আগে মণ্ডল স্তরের কমিটিও তৈরি করে ফেলার লক্ষ্য রয়েছে। তবে যে কমিটিই তৈরি হোক, তার আয়ু বেশি দিন হবে না। কারণ, ২০২২ সালের সেপ্টেম্বর থেকে বিজেপি-র সাংগঠনিক নির্বাচন শুরু হওয়ার কথা। সেই সময়ে শুরু হয়ে কয়েক মাসের মধ্যে বুথ, মণ্ডল এবং জেলা সভাপতি নির্বাচন হবে। দলীয় সংবিধান মেনে এর পরে নির্বাচনে জিতে আসতে হবে সুকান্ত মজুমদারকে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy