Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Light Pollution

Kali Puja 2021: আলোর উপদ্রবে বিপন্ন পাখি আর পতঙ্গ, রুখবে কে

পরিবেশকর্মী এবং পরিবেশবিদদের একাংশ বলছেন, বাজির ধোঁয়া-শব্দ থেকে ক্ষতিকর দূষণ হয়, উৎসবের অনিয়ন্ত্রিত আলোকসজ্জার দূষণও বিপজ্জনক।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০১ নভেম্বর ২০২১ ০৬:০৯
Share: Save:

গত বছরের মতো কলকাতা হাই কোর্ট এ বারেও দূষণ ঠেকাতে কালীপুজো, দীপাবলি-সহ বিভিন্ন উৎসবে সব ধরনের বাজি বিক্রি ও পোড়ানো নিষিদ্ধ করায় পরিবেশ-সচেতন মানুষ আপাতত স্বস্তি পেয়েছেন ঠিকই। কিন্তু তাঁদের উদ্বেগে রাখছে আলো নিয়ে যথেচ্ছাচার। প্রশ্ন উঠছে, আদালতের নির্দেশে বাজি যদি নিয়ন্ত্রণে থাকেও, আলোর উপদ্রব রুখবে কে?

বাজির বিরুদ্ধে বিভিন্ন এলাকায় প্রচারে শামিল পরিবেশকর্মী এবং পরিবেশবিদদের একাংশ বলছেন, বাজির ধোঁয়া-শব্দ থেকে ক্ষতিকর দূষণ হয়, উৎসবের অনিয়ন্ত্রিত আলোকসজ্জার দূষণও বিপজ্জনক। উৎসবে সৌন্দর্যায়ন করতে গিয়ে যে-ভাবে গাছের আগাপাশতলা আলোয় মুড়ে দেওয়া হয়, তা নিয়ে শঙ্কিত পরিবেশ ও জীববিজ্ঞানীরা। তাঁদের বক্তব্য, আলোর এই বিচিত্র বাহার থেকে গাছে বসবাসকারী পাখি ও কীটপতঙ্গের ভীষণ ক্ষতি হয়। এবং তাদের সেই ক্ষতির পরিণামে সার্বিক ভাবে বিপন্ন হয়ে পড়ে জীববৈচিত্র।

কালীপুজো ও দীপাবলির কয়েক দিন আগেই কলকাতা, শহরতলি এবং বিভিন্ন জেলায় আলোকসজ্জা শুরু হয়ে গিয়েছে। ছোট-বড় সব রাস্তার পাশের গাছ আলো দিয়ে মুড়ে দেওয়া হয়েছে। বিভিন্ন জেলায় তো বটেই, খাস কলকাতা এবং নিউ টাউনেও সমানে ঘটছে এই ঘটনা। জীববিজ্ঞানী অশোককান্তি সান্যাল রাজ্য জীববৈচিত্র পর্ষদের চেয়ারম্যান থাকাকালীন গাছে অনিয়ন্ত্রিত ভাবে আলো লাগানোর বিরুদ্ধে নির্দেশিকা প্রকাশ করেছিলেন। গাছের কোথায় এবং কী ভাবে, কী ধরনের কতটুকু আলো লাগানো যাবে, তা-ও নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সরকারি নির্দেশিকার তোয়াক্কা না-করেই উৎসবের আলোকসজ্জার বিষময় ভার গাছগাছালির ঘাড়ে চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ। নিউ টাউনেও দেখা যাচ্ছে, ঝলমলে, শক্তিশালী আলো দিয়ে বিভিন্ন রাস্তার পাশের গাছ মুড়ে দেওয়া হয়েছে। উত্তর ২৪ পরগনা, হাওড়া-সহ বিভিন্ন জেলায় গাছে গাছে প্রবল শক্তিশালী হ্যালোজেন আলো ঝোলানো হচ্ছে।

তীব্র আলোয় পাখি-কীটপতঙ্গ কেন প্রমাদ গুনছে, তা ব্যাখ্যা করতে গিয়ে পরিবেশবিজ্ঞানী স্বাতী নন্দী চক্রবর্তী জানান, সন্ধ্যা নামলেই পাখিরা গাছে বাসায় ফেরে। রাতের আঁধারে তারা বিশ্রাম নেয়, নানান শারীরবৃত্তীয় ক্রিয়াকলাপও সম্পন্ন করে। কিন্তু শক্তিশালী আলোয় গাছ ঢেকে দিলে পাখিরা বিভ্রান্ত হয়ে যায়। তাদের বিশ্রাম নেওয়া তো হয়ই না, পাখিদের শারীরবৃত্তীয় ক্রিয়াকলাপও ব্যাহত হয়। স্বাতীদেবী বলেন, “এটা শুধু পাখিদের সমস্যা ভাবলে হবে না। পাখিরা বাস্তুতন্ত্রের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। তাই তাদের ক্ষতি হলে সেটা বাস্তুতন্ত্র এবং জীববৈচিত্রের উপরে সার্বিক কুপ্রভাব ফেলবে।’’ রাজ্য জীববৈচিত্র পর্ষদ সূত্রের বক্তব্য, শক্তিশালী আলো থেকে তাপও নির্গত হয়। তা পাখি এবং গাছে বসবাসকারী কীটপতঙ্গের ক্ষতি করে। অর্থাৎ উৎসবের নামে আলোর এই বিশৃঙ্খলা মানুষ-সহ সারা জীবজগতের পক্ষেই বিপজ্জনক।

এই অনিয়ন্ত্রিত আলোর ব্যবহার রুখবে কে? জীববৈচিত্র পর্ষদ সূত্রের বক্তব্য, তাদের নির্দেশিকা অনুযায়ী স্থানীয় পুলিশ-প্রশাসনকেই এই কাজ করতে হবে। কিন্তু বাজির বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করলেও অনিয়ন্ত্রিত আলোর বিরুদ্ধে প্রশাসনকে ব্যবস্থা নিতে দেখা যায় না, অভিযোগ পরিবেশকর্মীদের।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy