খাসতালুকে: সাড়ে তিন বছর পরে পাতলেবাসের দফতরে বিমল গুরুং। মঙ্গলবার। নিজস্ব চিত্র।
সাড়ে তিন বছর আগে, ২০১৭ সালের জুন মাসের এক দুপুরে রাজ্য পুলিশের অভিযানের সময় তিনি পালিয়েছিলেন পাতলেবাসের বাড়ি ও লাগোয়া পার্টি অফিস ছেড়ে। পিছনে যে পাকদণ্ডী রয়েছে, সেই পথ দিয়ে নেমে গিয়েছিলেন বলেই পরে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছিল। এবং তার পরে পুলিশ তাঁর পার্টি অফিস থেকে উদ্ধার করেছিল কয়েক লক্ষ টাকা ও নানা অস্ত্র। তার পরে তিস্তা দিয়ে অনেক জল বয়ে গিয়েছে। মঙ্গলবার দার্জিলিঙে এসে সেই পার্টি অফিসেই বসলেন বিমল গুরুং।
রাজ্য সরকারের শাসকদলের সঙ্গে হাত মিলিয়েই এ বারে পাহাড়ে ফিরেছেন গুরুং। এবং পুরনো পার্টি অফিস চালু করার পরেই তিনি আন্দোলনে পোড়া, ভাঙচুর হওয়া কর্মী-সমর্থকদের বাড়িঘর তৈরি করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিলেন। নতুন করে সংগঠন বাড়ানোর কথা ঘোষণা করে এত দিন তাঁর সঙ্গে থাকা শতাধিক ঘরছাড়াদেরও ঘরে ফেরালেন। বাজি ফাটল, পুজোও হল দলীয় দফতরে। এত দিন ধরে সুনসান রাস্তা ফের জমজমাট হয়ে উঠল।
গুরুং বললেন, ‘‘পাহাড়বাসীর প্রার্থনা, মহাকালের আর্শীবাদ না থাকলে আবার এখানে হয়তো বসতে পারতাম না। কয়েক বছর নিজের বাড়িটাকে দেখতে পাইনি, অফিসের উনুনের চা বানিয়ে খেতে পারিনি। বিজেপিকে সঙ্গে নিয়ে ভুল করছি। এ বার এখান থেকে ওদের শেষ করার পালা।’’
২০০৭ সালে মোর্চা তৈরির পর সিংমারির দফতর ছাড়াও নিয়মিত পাতলেবাসের দফতরে বসতেন বিমল। তাঁর বিরোধিরা বলতেন, সকাল থেকে পাতলেবাসে দরবার বসাতেন বিমল। সমাজের বিভিন্ন স্তরের লোকজন সমস্যা ও কাজকর্ম নিয়ে সেখানে আসতেন। বাকি নেতারাও পালা করে তাঁর সঙ্গে দফতরে বসতেন। বাড়ির পাশের এই অফিস থেকেই তাঁর রাজনীতি শুরু। পুলিশ পাহাড়ের গোলমাল শুরুর পর এই অফিসেই প্রথম হানা দিয়েছিল। তার পরে গত সাড়ে তিন বছর দলীয় দফতর তালা বন্ধ হয়ে পড়ে ছিল। একসময় লোকজন পোকামাকড়ের ভয়ে সেখানে যেত না। অক্টোবরে কলকাতায় প্রকাশ্যে আসার পর ফের সিল বন্ধ দরজাটি খোলে। তাঁর সমর্থকেরা নতুন করে অফিসটির মেরামত শুরু করেন। গুরুংয়ের একটি ছবি, পতাকা নতুন করে ঝোলানো হয়।
পাতলেবাস, সিংমারি, তাকভর, মালিধুরা— এই এলাকা বরাবর গুরুংয়ের খাসতালুক বলে পরিচিত ছিল। গত কয়েক বছরে অবশ্য বিনয় তামাং, অনীত থাপারা ছাড়াও মন ঘিসিংয়ের নেতৃত্বে জিএনএলএফ কিছু কিছু এলাকায় সংগঠন গড়েছে। তবে গুরুং এলাকায় পৌঁছে যাওয়ায় তাঁরা আর কত দিন বিপক্ষে শিবিরে থাকবেন, তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। এ দিন পুজো করে দফতর খুলে প্রথমেই গরুবাথান এবং মিরিকে সাড়ে তিন বছর ঘরছাড়াদের বাড়ি ফেরার ব্যবস্থা করেন গুরুং। পাশাপাশি গিয়ে দেখে আসেন, কেমন আছে তাঁর ইংরেজি মাধ্যম কাঞ্চনজঙ্ঘা স্কুল। আদালতের নির্দেশ না থাকায় নিজের বাড়িটিকে বাইরে থেকে দেখে এলেও সেখানে ঢোকেননি বিমল। তবে এ সব নিয়ে পুলিশ-প্রশাসন বা রাজ্য সরকারকে বিরুদ্ধে একটাও কথা বলেননি। গুরুং-র কথায়, ‘‘তৃণমূলকে ১৭-১৮টা আসন জিতিয়ে দিতেই হবে। সেটা ছাড়া এখন আর কিছু বলছি না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy