মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। —ফাইল চিত্র
নতুন দণ্ড সংহিতা আইন নিয়ে আগেই নিজেদের আপত্তির কথা জানিয়েছিল রাজ্য সরকার। পুনর্বিবেচনার আর্জি জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠিও দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু সেই সব আপত্তি উড়িয়ে গত ১ জুলাই থেকে কার্যকর হয়েছে তিন ফৌজদারি আইন। কার্যকর হওয়া ওই তিন আইন খতিয়ে দেখতে বুধবার সাত সদস্যের একটি কমিটি গড়েছে রাজ্য সরকার। তার কিছু ক্ষণের মধ্যেই পাল্টা পদক্ষেপ করল রাজভবনও। রাজভবন সূত্রে খবর, ঠিক কী কারণে এই কমিটি গঠন করা হয়েছে, কমিটির কাজ কী হবে, তা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতার কাছে বিস্তারিত রিপোর্ট চেয়ে পাঠিয়েছেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস।
‘ভারতীয় দণ্ডবিধি’, ‘ফৌজদারি কার্যবিধি’ এবং ‘ভারতীয় সাক্ষ্য আইন’ বাতিল হয়ে দেশে গত ১ জুলাই থেকে কার্যকর হয়েছে ‘ভারতীয় নাগরিক সুরক্ষা সংহিতা’ (বিএনএসএস), ‘ভারতীয় ন্যায় সংহিতা’ (বিএনএস) এবং ‘ভারতীয় সাক্ষ্য অধিনিয়ম’ (বিএসএ) আইন। তার আগে থেকেই এই তিন আইন নিয়ে কেন্দ্রকে বিঁধছে বিরোধীরা। তাদের আপত্তি মূলত দেশদ্রোহিতা সংক্রান্ত বিধি নিয়ে। মুখ্যমন্ত্রী প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি নিজের আপত্তির কথা জানিয়েছিলেন। তাঁর বক্তব্য ছিল, বিদায়ী লোকসভায় যে ভাবে কোনও আলোচনা ছাড়াই দ্রুত বিল তিনটি পাশ করানো হয়েছিল, তা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া এবং মূল্যবোধের পরিপন্থী। যে ভাবে বিভিন্ন রাজ্য সরকারের মতামত উপেক্ষা করে একতরফা ভাবে বিলের খসড়া তৈরি করে তা সংসদে পাশ করানো হয়েছে, তা যুক্তরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয় বলেও অভিযোগ করেছিলেন মমতা। কিন্তু বঙ্গের আপত্তিতে কান দেয়নি কেন্দ্র। নির্ধারিত দিনেই আইন কার্যকর হয় দেশে।
এ বার এই তিন আইন খতিয়ে দেখতেই সাত সদস্যের কমিটি গড়েছে রাজ্য সরকার। কমিটির শীর্ষে রয়েছেন প্রাক্তন বিচারপতি অসীমকুমার রায়। এ ছাড়াও রয়েছেন— আইনমন্ত্রী মলয় ঘটক, মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, রাজ্য সরকারের অ্যাডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্ত, রাজ্য পুলিশের ডিজি, কলকাতার পুলিশ কমিশনার এবং আইনজীবী সঞ্জয় বসু।
রাজভবন সূত্রে খবর, এই সিদ্ধান্তের পরেই রাজ্যের কাছে কমিটি সম্পর্কে তথ্য তলব করেছেন রাজ্যপাল বোস। শুধু তা-ই নয়, কেন্দ্রের প্রস্তাবে রাজ্য সরকার সময়ে জবাব দিয়েছিল কি না, তা-ও জানতে চেয়েছেন তিনি। রাজভবন সূত্রে জানা গিয়েছে, রাজ্যপালের বক্তব্য, ‘‘দেশের মধ্যে আলাদা দেশ হয়ে উঠতে পারে না পশ্চিমবঙ্গ। বানানা রিপাবলিকও হয়ে উঠতে পারে না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy