Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪

তপ্ত ভোটে আইসক্রিম আড্ডায় মশগুল দুই বিরোধী

এলাকার ভোটকেন্দ্রের পাশেই রয়েছে মন্দির। আর তার পাশেই আটচালায় আড্ডা দিচ্ছেন সকলে। ভোটের আগে পর্যন্ত আলাপ ছিল না শাসক-বিরোধী প্রার্থীর।

গল্পে-মশগুল: পাপিয়া দাসপাত্র (বাঁ দিকে) ও সুলেরি খাতুন। নিজস্ব চিত্র

গল্পে-মশগুল: পাপিয়া দাসপাত্র (বাঁ দিকে) ও সুলেরি খাতুন। নিজস্ব চিত্র

আরিফ ইকবাল খান
মহিষাদল শেষ আপডেট: ১৫ মে ২০১৮ ০০:৪১
Share: Save:

পঞ্চায়েত নির্বাচনে সোমবার বিরোধী, বিক্ষুদ্ধ তৃণমূলের সঙ্গে শাসকদলের সংঘর্ষের অভিযোগ উঠেছে জেলার বিভিন্ন জায়গায়। তবে ব্যতিক্রমী মহিষাদল। সেখানের মসলন্দপুরের একটি বুথে দেখা গেল, বিরোধীদের সঙ্গে বসে আড্ডা জুড়েছেন শাসকদলের প্রার্থী। ভোটও চলেছে শান্তিপূর্ণভাবে।

এলাকার ভোটকেন্দ্রের পাশেই রয়েছে মন্দির। আর তার পাশেই আটচালায় আড্ডা দিচ্ছেন সকলে। ভোটের আগে পর্যন্ত আলাপ ছিল না শাসক-বিরোধী প্রার্থীর। এ দিন আটচলায় বসেই খোশগল্প চলল তাঁদের। একে অপরের প্রশংসাও করলেন দরাজ গলায়।

ওই বুথে তৃণমূলের হয়ে দাঁড়িয়েছেন পাপিয়া দাসপাত্র আর নির্দলের হয়ে লড়ছেন সুলেরি খাতুন। সুলেরির প্রতীক ই–রিক্সা। পাপিয়া এদিন বলেন, ‘‘আমরা ভোট নিয়ে কথাই বলিনি। ঘর সংসার, ছেলে মেয়েদের গল্প করছিলাম।’’ সুলেরির কথায়, ‘‘আমাদের মধ্যে কোনও সমস্যা নেই। ১,১০০ ভোটার রয়েছেন। সবাই এলাকার মানুষ। যাঁকে পছন্দ তাঁকেই তাঁরা ভোট দেবেন।’’ আবার শাসকদল তৃণমূলের নেতা বুদ্ধদেব ভৌমিক এলে তাঁকে ঘিরেও এ দিন আড্ডা দিলেন বিরোধীরা।

উল্লেখ্য, মহিষাদল ব্লকের ১১টি গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যে গতবার তিনটি হাত ছাড়া হয়েছিল তৃণমূলের। এবার মহিষাদলে শাসকদলের বিরুদ্ধে কোথাও লড়ছে নির্দল, আবার কোথাও বিজেপি, কংগ্রেস এবং সিপিএম। তবে এই লড়াইয়ে কোথাও হিংসার ছোঁয়া নেই, তা স্বীকার করছেন বিরোধী নেতারাও। সিপিএমের নেতৃত্বের একাংশের সাফ বক্তব্য, ‘‘আমাদের এখানে কোনও সমস্যা নেই।’’ সমস্যা যে নেই, তা মানছেন মহিষাদলের তৃণমূল নেতা তিলক চক্রবর্তীও। জোর করে বিরোধী শূন্য করার তিনি পক্ষপাতী নন বলেও মন্তব্য তাঁর। তিলকবাবুর কথায়, ‘‘মানুষ ভোট না দিলে আমাদের কাজের মূল্যায়ণ করব কী করে?’’

দল নয়, বন্ধুত্ব ও সম্পর্ক মহিষাদলে গুরুত্ব পায় বলেই মনে করছেন রাজনীতিকদের একাংশ। আর তারই প্রতিফল পড়েছে মসলন্দপুরের ওই বুথে। সুলেরি আর পাপিয়াদেবীর আড্ডার মাঝেই এ দিন এক তৃণমূল কর্মীকে দেখা গিয়েছে, ছুটে গিয়ে তাঁদের জন্য আইসক্রিম নিয়ে আসতে। যা দেখে নির্দল প্রার্থী সুলেরি কথায়, ‘‘জিতব কি না জানি না। কিন্তু তৃণমূলের লোকজনও আমাকে যা সম্মান দিচ্ছেন তা অভাবনীয়!’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE