Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪

ভোটবাক্স পাহারা আদিবাসী মঞ্চের

ভোটের সময় মাটি কামড়ে পড়ে থাকা। ভোট ব্যালট বাক্স পাহারা দিয়ে ‘রিসিভিং সেন্টার’ পর্যন্ত পৌঁছে দেওয়া। সোমবার রাতে ভোট মিটতে দেখা গেল, ভোটকর্মীদের গাড়িগুলির পিছনে আদিবাসী সমন্বয় মঞ্চের লোকজনের বাইকের ‘কনভয়’। বেলপাহাড়ির রিসিভিং সেন্টার পর্যন্ত গেল সেই ‘কনভয়’।

কিংশুক গুপ্ত
বেলপাহাড়ি শেষ আপডেট: ১৬ মে ২০১৮ ০৪:৫৬
Share: Save:

এ যেন জান কবুল লড়াই!

ভোটের সময় মাটি কামড়ে পড়ে থাকা। ভোট ব্যালট বাক্স পাহারা দিয়ে ‘রিসিভিং সেন্টার’ পর্যন্ত পৌঁছে দেওয়া। সোমবার রাতে ভোট মিটতে দেখা গেল, ভোটকর্মীদের গাড়িগুলির পিছনে আদিবাসী সমন্বয় মঞ্চের লোকজনের বাইকের ‘কনভয়’। বেলপাহাড়ির রিসিভিং সেন্টার পর্যন্ত গেল সেই ‘কনভয়’। ব্যালট বাক্সগুলি স্ট্রং রুমে ঢোকানো পর্যন্ত ঠায় দাঁড়িয়ে রইলেন মঞ্চের লোকজন। এক সেক্টর অফিসারের কথা।, “এতদিন ভোটের ডিউটি করছি, এমন কাণ্ড আগে কখনও দেখিনি।”

কেন এই নজরদারি? আদিবাসী সমন্বয় মঞ্চের নেতা ধর্মাল মান্ডি বলেন, “বঞ্চনা আর দুর্নীতির বিরুদ্ধে ভোটাররা এ বার সমাজের ডাকে তৃণমূলের বিরুদ্ধে ভোট দিয়েছেন। আমাদের আশঙ্কা ছিল, প্রশাসনের সহযোগিতায় মাঝপথে ব্যালট বাক্স বদলে দেওয়া হতে পারে। তাই এই বন্দোবস্ত।” তৃণমূলের বেলপাহাড়ি ব্লক কার্যকরী সভাপতি বিকাশ সিংহের কটাক্ষ, ‘‘ওরা (আদিবাসী সমন্বয় মঞ্চের সদস্যেরা) স্ট্রং রুমের বাইরে হাস্যকর ভাবে নজরদারি চালাচ্ছে। মঞ্চের মধ্যে সিপিএমের লোকজনও আছে। বাম আমলে ওরা মাঝ রাস্তায় ব্যালট বাক্স বদলে দিত। আমরা ওদের মতো নই।’’

ভোটের দিনই ধর্মালবাবুর দাবি ছিল, ব্যালট বাক্স বদলে না দেওয়া হলে বেলপাহাড়ি থেকেই বদলের সূচনা হবে। নিজের দাবিতে অনড় তিনি। তাই শুধু নজরদারি নয়, কারচুপি রুখতে অন্য কৌশলও নিয়েছে আদিবাসী মঞ্চ। ধর্মালবাবু জানান, ভোটদানের সময় প্রতিটি ব্যালট বাক্সে সংকেতযুক্ত দশটাকা ও পাঁচটাকার নোটও ঢোকানো হয়েছে। গণনার সময় সেগুলি পাওয়া গেলে বোঝা যাবে ব্যালট বাক্স ‘অক্ষত’ আছে কি না।

শিমূলপাল অঞ্চলের বুড়িঝোর, বাঁশপাহাড়ি অঞ্চলের চাকাডোবা ও কাশমারের মতো বেশ কিছু বুথে ভোট হয়েছে কোথাও রাত দশটা কোথাও রাত ১১ টা পর্যন্ত। ভুলাভেদা অঞ্চলের শিয়াড়বিঁধা বুথে রাত পৌনে বারোটা পর্যন্ত ভোট হয়েছে। বাঁশপাহাড়ির এক ভোটকর্মী বলেন, “রাতে ফেরার সময় আমাদের গাড়ির পিছনে অন্তত গোটা দশেক বাইকে সওয়ার আদিবাসী সমাজের লোকজন ছিলেন।”

বুথ থেকে ‘রিসিভিং সেন্টার’ পর্যন্ত নজরদারির প্রসঙ্গে ঝাড়গ্রামের জেলাশাসক আর অর্জুন বলেন, “যাঁরা ভোট কর্মীদের গাড়িগুলিকে অনুসরণ করছিলেন, তাঁরা ঠিক কাজ করেননি। ব্যালট বাক্স সুরক্ষিত অবস্থায় রাখার সব রকম বন্দোবস্ত রয়েছে। আশঙ্কিত হওয়ার কোনও কারণ নেই।”

আদিবাসী সমন্বয় মঞ্চকে আশায় রেখেছে ভোটদানের হার। এক সময়ের মাওবাদী প্রভাবিত এলাকার এক একটি বুথে নব্বই থেকে ৯৫ শতাংশ ভোট পড়েছে। মঞ্চের দাবি, বেশি ভোট দানের হার থেকেই স্পষ্ট পরিবর্তন হচ্ছে। তবে আশা হারাতে নারাজ শাসকও। বিকাশবাবুর কথায়, ‘‘কয়েকটি বুথে সমস‍্যা আছে। তবে অধিকাংশ আসনে আমরা ভাল ফল করব।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy