বিভিন্ন মহলে এত দিন যা বলা হচ্ছিল, সম্ভবত সেটাই হতে চলেছে। পঞ্চায়েত নির্বাচনের জনমত সমীক্ষায় তৃণমূলের আধিপত্যের আভাসই স্পষ্ট। সব জেলা পরিষদই দখল করতে পারে তারা। পাশাপাশি, প্রধান বিরোধী দল হিসাবে প্রতিষ্ঠিত হতে পারে বিজেপি। অনেকটা দূরে থাকতে পারে বাম। তারও পিছনে কংগ্রেস। সমীক্ষার মতে, ভোট প্রধানত ভাগ হচ্ছে তৃণমূল এবং বিজেপির মধ্যেই।
জেলা পরিষদের মোট ৮২৫টি আসনের উপর এই জনমত সমীক্ষা করেছে এবিপি আনন্দ-সি ভোটার। এই সমীক্ষা অনুযায়ী তৃণমূল জেলা পরিষদে ৫৩৮টি আসন পেতে পারে। বিজেপি পেতে পারে ১৬৭টি। বামেদের হাতে থাকতে পারে ৭৩টি আসন। কংগ্রেস পেতে পারে ৪৩টি।
সমীক্ষা করা হয়েছে ১০ থেকে ২৪ এপ্রিলের মধ্যে। সেই সময়ের মধ্যেই ভোট নিয়ে হাইকোর্টে মামলা হয়েছে। কোর্টের নির্দেশে মনোনয়নের জন্য বেড়েছে আরও এক দিন। তার পরে যে পরিস্থিতি দাঁড়িয়েছে, তার ভিত্তিতে করা এই সমীক্ষায় তৃণমূলের ভোটপ্রাপ্তির হার দাঁড়াতে পারে ৩৪%, বিজেপির ২৬%, বামের ১৩% এবং কংগ্রেসের ৭%।
গত ৯ তারিখ প্রথম দফায় যে সমীক্ষা প্রকাশিত হয়, তার তুলনায় বুধবার প্রকাশিত দ্বিতীয় দফায় সমীক্ষায় জেলা পরিষদে তৃণমূলের ভোটপ্রাপ্তির হার ১% কমলেও আসন বেড়েছে ৬টি। বিজেপির ভোট বেড়েছে ২%, আসন বেড়েছে ২৩টি। বামেদের ভোট কমেছে ১%, আসন কমেছে ১৭টি। কংগ্রেসেরও ভোট ১% কমেছে, আসন কমেছে ৬টি।
এই ধরনের জনমত সমীক্ষা একটি নির্দিষ্ট সময়কালে নমুনা ভোটারদের মতামতের ভিত্তিতে করা হয়ে থাকে। সব সময় যে তা প্রকৃত ফলের সঙ্গে মিলে যায়, তা নয়। সমীক্ষা আর বাস্তবে বিস্তর ফারাক হয়ে যায়। তবে সাধারণ ভাবে এই ধরনের সমীক্ষা নির্বাচনী ফলের ইঙ্গিত হিসাবে স্বীকৃত।
রাজনৈতিক দলগুলি অবশ্য এই সমীক্ষাকে গুরুত্ব দিতে রাজি নয়। তৃণমূল এ নিয়ে একটি কথাও বলেনি। বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের দাবি, ‘‘আমরা আরও ভাল করব। জেলা পরিষদে ২০০ থেকে ২৫০ আসন পাব। ৩০% ভোটও পাব।’’ বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসুর বক্তব্য, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী তো বলেই দিয়েছেন ১০০% আসন জিতবেন। এর পরে যা হওয়ার তা-ই হবে। অন্য কিছু বলার নেই।’’ প্রদেশ কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক মনোজ চক্রবর্তীর মতে, ‘‘এই সমীক্ষা নিয়ে মাথা ঘামিয়ে লাভ নেই। মনোনয়নেই এত কাণ্ড। তার উপর আবার ভোট ও তার ফল!’’
আরও পড়ুন: পুলিশ জটেই আটকে নির্ঘণ্ট
পঞ্চায়েতে ভাল কাজকর্মই যে তৃণমূলকে এগিয়ে রাখছে, জনমত সমীক্ষায় সেই তথ্যও উঠে এসেছে। তবে তৃণমূলে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব এই নির্বাচনে ছাপ ফেলতে পারে বলে সমীক্ষায় অনুমান। কারণ, ৬১% ভোটার সে কথা বলেছেন। ৫২% ভোটার এ-ও বলেছেন যে, পশ্চিমবঙ্গে কোনও দিন শান্তিতে ভোট হবে না। পাশাপাশি এলাকায় কর্মসংস্থানের হাল খারাপ হয়েছে, বলেছেন ৪৫% মানুষ।
সমীক্ষার তথ্য অনুযায়ী মনোনয়ন জমার জন্য বাড়তি এক দিন পাওয়ায় বিরোধীদের লাভ হবে বলে মনে করেছেন ৫০% মানুষ। আর মনোনয়ন পর্ব ঘিরে রাজ্য নির্বাচন কমিশনের ভাবমূর্তিতে কালি লাগল বলে মনে করেন ৬৭% মতদাতা।
সমীক্ষা অনুযায়ী, জেলা পরিষদে তৃণমূলের উল্লেখযোগ্য ভাল ফলের পূর্বাভাস রয়েছে হুগলি, হাওড়া, বীরভূম, আলিপুরদুয়ার প্রভৃতি জেলায়। তৃণমূলের থেকে পিছিয়ে থাকলেও তুলনামূলক ভাবে বিজেপি ভাল করতে পারে, উত্তর ২৪ পরগনা, নদিয়া, কোচবিহার, পশ্চিম মেদিনীপুর প্রভৃতি জেলায়। হুগলিতে ৫০টি আসনের মধ্যে তৃণমূল ৪৪টি পেতে পারে। হাওড়ায় ৪০টির মধ্যে ৩২টি। বীরভূমে ৪২টির মধ্যে বিনা ভোটে ৩২টি আসন জিতে নিয়েছে তৃণমূল। বাকি ১০টিতে ভোট হতে পারে। সমীক্ষা বলছে, সব মিলিয়ে তৃণমূল পাবে ৩৫টি আসন, বিজেপি ৬।
আসন সংখ্যায় তৃণমূলের অনেক পিছনে থেকেও বিজেপি উত্তর ২৪ পরগনায় ৫৭টির মধ্যে ২২টি, নদিয়ায় ৪৭টির মধ্যে ১৫টি, এবং কোচবিহারে ৩৩টির মধ্যে ১১টি আসন পেতে পারে বলে সমীক্ষার অভিমত।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy