Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪

সংসার টানতে পুণেতে, দেহ ফিরল যুবকের

কুইঠা গ্রামের মৃত যুবকের নাম আকেবর আলি (২৫)। পুণেতে এক ঠিকাদার সংস্থার হয়ে দিনমজুরির কাজ করতে গিয়েই মৃত্যু হয়েছে তাঁর।

আকেবর আলি

আকেবর আলি

দয়াল সেনগুপ্ত
সদাইপুর শেষ আপডেট: ০৪ নভেম্বর ২০১৯ ০৪:১৫
Share: Save:

কিছু বাড়তি আয়ের আশায় গ্রাম ছেড়ে মহারাষ্ট্রের পুণেতে কাজ করতে গিয়েছিলেন তিনি। সেই যুবকের মৃতদেহ বীরভূমের সদাইপুর থানার কুইঠা গ্রামে পৌঁছল রবিবার সন্ধ্যায়। ঠিক কী ভাবে মারা গিয়েছেন ওই যুবক, তা অজানা। মাস খানেক আগেই পাশের গ্রাম সাহাপুরে থেকে দিনমজুরির কাজে উত্তরপ্রদেশে যাওয়া এক যুবকের দেহ পৌঁছেছিল। এক মাসের মধ্যে এমন দু’টি ঘটনায় উদ্বেগ ছড়িয়েছে অন্য রাজ্যে কাজে যাওয়া আরও অনেক যুবকের পরিবারে।

কুইঠা গ্রামের মৃত যুবকের নাম আকেবর আলি (২৫)। পুণেতে এক ঠিকাদার সংস্থার হয়ে দিনমজুরির কাজ করতে গিয়েই মৃত্যু হয়েছে তাঁর। পরিবারকে সেখান থেকে বলা হয়েছে, ওই যুবকের মৃত্যু হয়েছে দুর্ঘটনায়। কিন্তু ঠিক কী ভাবে মৃত্যু, সেই কারণটাই অজানা আকেবরের মা আসুরা বিবির কাছে। স্বামী হারিয়েছেন আগেই। এ বার সন্তান হারানোর শোক সইতে হচ্ছে প্রত্যন্ত গ্রামের এই মহিলাকে। আকেবরের পরিবারের অভিযোগ, দেহ পাঠিয়েই দায়িত্ব সেরেছে ঠিকাদার সংস্থা। ক্ষতিপূরণ তো দূরের কথা। বাড়ির এক মাত্র রোজগেরে সদস্য চলে যাওয়ায় সঙ্কটে পড়েছে গোটা পরিবার।

আকেবরের বাবা আব্দুল বারিক ছিলেন সেচ দফতরের কর্মী। বছর কয়েক আগে তিনি মারা যান। অভিযোগ, সরকারি সুযোগ-সুবিধা না পাওয়ায় দুই বিবাহযোগ্যা মেয়ে এবং এক ছেলেকে নিয়ে অর্থকষ্টে পড়েন আসুরা বিবি। একটু বড় হওয়ার পরে সংসাসের হাল ধরেন ছেলে আকেবর। ভিন্ রাজ্য শ্রমিকের কাজ করছিলেন বেশ কয়েক বছর। শেষবার ২৯ দিন আগে বাড়ি থেকে পুণেতে গিয়েছিলেন। গ্রামে দেহ আনার দায়িত্ব নিজেদের কাঁধে নিয়েছিলেন কুইঠা গ্রাম থেকে পুণেতে শ্রমিকের কাজে যাওয়া অন্য তিন যুবক।

আরও পড়ুন: রাসমেলায় আসছেন মুখ্যমন্ত্রী, জানালেন বিনয়কৃষ্ণ

আসুরা বিবিকে শনিবার ঠিকা সংস্থার তরফে ফোন করে জানানো হয়, ছেলে মারা গিয়েছে বৃহস্পতিবার। কিন্তু সুস্থ সবল ছেলে কী করে মারা গেল, কেন তাঁকে মৃত্যুসংবাদ জানাতে দেরি হল— এ সব প্রশ্নের উত্তর নেই প্রৌঢ়ার কাছে। আকেবরের জেঠুতুতো দাদা সাধু জামাল বলছেন, ‘‘মৃত্যুর সঙ্গে সঙ্গেই তো বাড়িতে খবর দেওয়া উচিত ছিল। ফলে, কিছু লুকোনো হচ্ছে কি না, তা আমরা বুঝতে পারছি না। আমাদের বলা বয়েছে, দুর্ঘটনায় ভাইয়ের মৃত্যু হয়েছে।’’

গ্রামবাসীর বক্তব্য, চাকরি করতে ভিন্ রাজ্যে যান এলাকার অনেক যুবকই। সেখানে মজুরি বেশ খানিকটা বেশি। স্থানীয় খিলাফত হোসেন, শেখ নাজির কুদ্দুস মণ্ডল, শেখ জামসুররা বলছেন, ‘‘গরিব এলাকা। সাহাপুর, রেঙ্গুনি, কুইঠা, বড়গুণসীমা-সহ পাঁচ-ছ’টি গ্রাম থেকে এই মুহূর্তে ৭০ থেকে ৭৫ জন যুবক ভিন্ রাজ্যে আছেন। কেউ কেউ রাজমিস্ত্রি, কেউ কাঠমিস্ত্রি, রং মিস্ত্রি বা ঠিকা শ্রমিক হিসেবে কাজ করেন। উদ্দেশ্য, কিছু বেশি টাকা কামিয়ে সংসার চালানো।’’

এমন অবস্থায় মাস খানেকের মধ্যে দুই মৃত্যু ভয় ধরিয়েছে এলাকায়।

অন্য বিষয়গুলি:

Pune Death
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy