জিবি বৈঠকের পর ফের আন্দোলনে বসেছেন জুনিয়র ডাক্তাররা। —নিজস্ব চিত্র।
নবান্নে যাচ্ছেন না আন্দোলনকারীদের কোনও প্রতিনিধি। শনিবার দুপুরে জিবি বৈঠকের পর এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে দিলেন আন্দোলনরত জুনিয়র চিকিৎসকরা। গত কয়েক দিনে মুখ্যমন্ত্রী যে ভাষায় কথা বলেছেন এবং রাজ্যের বিভিন্ন হাসপাতালে যে ভাবে তাঁদের আক্রমণের শিকার হতে হয়েছে, তাতে নবান্নে গিয়ে আলোচনা করা কতটা নিরপেক্ষ এবং নিরাপদ সে প্রশ্ন তুলেছেন আন্দোলনকারীরা। স্পষ্ট ভাবে তাঁরা জানিয়ে দিয়েছেন, নবান্নে তাঁদের কোনও প্রতিনিধিই যাচ্ছেন না।
এ দিন দুপুরে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে কথা বলতে এনআরএসে গিয়েছিলেন আইএমএ সভাপতি তথা তৃণমূল সাংসদ শান্তনু সেন। তার প্রস্তাব ছিল, নবান্নে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনায় বসুন জুনিয়র ডাক্তাররা। শুক্রবার রাতে একই প্রস্তাব নিয়ে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে কথা বলেন রাজ্যের স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিকর্তা প্রদীপ মিত্র। গভীর রাত পর্যন্ত নবান্নে যাওয়ার ব্যাপারে অনড় থাকার পর এ দিন আন্দোলনকারীরা শান্তনুকে জানান, যা সিদ্ধান্ত নেওয়ার জিবি বৈঠকে নেওয়া হবে।
শান্তনু যদিও তাঁদের সঙ্গে দেখা করে বাইরে এসে জানান, জিবি বৈঠকে অনেক বহিরাগত রয়েছেন। স্বাস্থ্য পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত নন এমন মানুষও অসৎ উদ্দেশ্যে জোর করে এই ঝামেলা জিইয়ে রাখার চেষ্টা করছেন। জুনিয়র ডাক্তারদের আবেগকে নিয়ে খেলা করছেন। তিনি মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনায় বসার প্রস্তাব দিয়ে আ্দোলনকারীদের বলেন, ‘‘আলোচনা করলে নিশ্চয় সমাধান সূত্র বেরবে। মুখ্যমন্ত্রী সময় দিয়েছেন। দেখা করা উচিত।’’ কিন্তু শান্তনুর ‘বহিরাগত’ মন্তব্যকে মোটেও ভাল চোখে দেখেননি আন্দোলনকারীরা। জিবি বৈঠক শেষে আন্দোলনকারীরা বাইরে বেরিয়ে জোরদার স্লোগান দেওয়া শুরু করেন, ‘আমরা কারা, বহিরাগত’।
আরও পড়ুন: ‘অসত্ উদ্দেশ্যে ডাক্তার আন্দোলনে বাইরের লোক’, বহিরাগত বিতর্কে এ বার শান্তনু সেন
আরও পড়ুন: আহত পরিবহকে দেখতে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েও মত পাল্টালেন মমতা! গেলেন চন্দ্রিমা ও স্বাস্থ্যসচিব
এর পর আন্দোলনকারীদের তরফে এরআরএসের জুনিয়র চিকিৎসক অভিষেক সরকার বিবৃতি দিয়ে তাঁদের সিদ্ধান্তের কথা জানান। সেই বিবৃতি শোনানোর আগে সাংবাদিকদের জানিয়ে দেওয়া হয়, কোনও প্রশ্ন নেওয়া হবে না। শুধুমাত্র বিবৃতিটি পড়ে শোনানো হবে। এর পর অভিষেক যা বলেন, ‘‘গতকাল ডিএমই স্যর জানিয়েছেন প্রতিনিধিকে নবান্নে ডেকে পাঠিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। দু’দিন ধরে প্রকাশ্যে মুখ্যমন্ত্রী যে সব ভাষা প্রয়োগ করেছেন এবং তার পরে পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালে আমাদের উপর আক্রমণ ঘটেছে তাতে আমরা উদ্বিগ্ন ও আশাহত। এই পরিস্থিতিতে মুষ্টিমেয় প্রতিনিধিকে নবান্নে পাঠিয়ে বন্ধ দরজার পিছনে আলোচনা করাটা কতটা নিরাপদ এবং নিরপেক্ষ হবে তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দিহান আমরা। তাই আমরা নবান্নে কোনও প্রতিনিধি পাঠাচ্ছি না।’’
আন্দোলনকারীদের এই সিদ্ধান্তের কথা প্রকাশ্যে আসার পর আপাতত রাজ্যের স্বাস্থ্য পরিষেবায় অচলাবস্থা কাটার কোনও লক্ষণই দেখা যাচ্ছে না।
আন্দোলনকারীদের এই সিদ্ধান্তের পর এ দিন বিকেলে নবান্ন-বৈঠক বাতিল করা হয়েছে বলে প্রশাসনিক সূত্রে খবর। বিকেল সোয়া তিনটে নাগাদ নবান্নে পৌঁছেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এ বিষয়ে যদিও তাঁর কোনও মন্তব্য পাওয়া যায়নি।অন্য দিকে, এ দিন দিল্লির এমস-এর চিকিৎসকেরা যে প্রতিবাদ কর্মসূচির ডাক দিয়েছিলেন, রোগীদের কথা ভেবে আপাতত তা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তবে পাশাপাশি তাঁরা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ৪৮ ঘণ্টার সময় দিয়েছেন। এর মধ্যে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী আন্দোলনকারীদের সঙ্গে গিয়ে দেখা করে এই সমস্যার সমাধান না করলে এমস-এর রেসিডেন্ট ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশনের ডাক্তাররা অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতিতে যাবেন।
এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও। সাবস্ক্রাইব করুন আমাদেরYouTube Channel - এ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy