মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও পরিবহ মুখোপাধ্যায়।
জুনিয়র ডাক্তারেরা কর্মবিরতি তুলে নিলেই তিনি আহত তরুণ চিকিৎসক পরিবহ মুখোপাধ্যায়কে দেখতে যাবেন বলে জানিয়েছিলেন। তবে সোমবার সেই কর্মবিরতি আন্দোলন প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত ঘোষণার আগেই পরিবহকে দেখতে হাসপাতালে পৌঁছে গেলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
রাজ্যের সরকারি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালগুলির জুনিয়র ডাক্তারদের প্রতিনিধিরা এ দিন দুপুরে নবান্নে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে বসেন। আলোচনার পরে তাঁরা নবান্ন ছেড়ে চলে যেতেই মুখ্যমন্ত্রী সেখান থেকে বেরিয়ে পড়েন। নবান্ন থেকে তিনি সরাসরি চলে যান মল্লিকবাজারের ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেসে। ওই ইনস্টিটিউট সূত্রের খবর, সন্ধ্যা ৬টা ৪০ মিনিটে মুখ্যমন্ত্রী সেখানে পৌঁছেই সোজা ছ’তলায় পরিবহের কেবিনে যান। সেখানে পরিবহের বন্ধুরা আগে থেকেই উপস্থিত ছিলেন।
ইনস্টিটিউটের চেয়ারম্যান তথা শিক্ষক-চিকিৎসক রবীন সেনগুপ্ত জানান, মুখ্যমন্ত্রী তাঁদের সামনেই পরিবহের সঙ্গে কথা বলেন। তিনি ওই জুনিয়র ডাক্তারের শারীরিক অবস্থার কথা জানতে চান। তাঁর কোনও রকম অসুবিধা হচ্ছে কি না কিংবা ভবিষ্যতে কোনও অসুবিধা হতে পারে কি না— সবই জেনে নেন মুখ্যমন্ত্রী। পরিবহের কোনও প্লাস্টিক সার্জারির প্রয়োজন রয়েছে কি না, চিকিৎসক-চেয়ারম্যানের সঙ্গে কাছে সেটা খুঁটিয়ে জানতে চান তিনি। পরিবহ এবং প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা বলে মুখ্যমন্ত্রী ৬টা ৫০ মিনিটে হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে যান। বেরোনোর মুখে তিনি সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘‘পরিবহকে দেখে এসেছি। কথা হল। ও ভাল আছে।’’
এ দিন সকাল ও সন্ধ্যায় ইনস্টিটিউট থেকে প্রেস বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানানো হয়, পরিবহ ভাল আছেন। অস্ত্রোপচারের পরে ট্রমা আর সামান্য উদ্বেগ ছাড়া কোনও শারীরিক সমস্যা নেই। আগামী চার-পাঁচ দিনের মধ্যেই পরিবহকে ছেড়ে দেওয়া যাবে বলে আশা করছেন হাসপাতাল-কর্তৃপক্ষ।
আরও পড়ুন: ফের কাজে ডাক্তারেরা, সঙ্কট কাটিয়ে সকাল থেকেই আউটডোর হবে স্বাভাবিক
১০ জুন রাতে নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে এক বৃদ্ধের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে গোলমাল বাধে। অভিযোগ, সেই সময় রোগীর সঙ্গীদের ছোড়া পাথরের আঘাতে গুরুতর আহত হন পরিবহ। তাঁর মাথার সামনের দিকের ডান অংশের করোটি ভেঙে ভিতরে ঢুকে যায়। পরের দিন দুপুরে প্রায় দু’ঘণ্টার অস্ত্রোপচারে করোটির ভেঙে যাওয়া টুকরোগুলি বার করেন চিকিৎসকেরা। তার পরেই হাসপাতালে হামলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে এনআরএসের জুনিয়র ডাক্তারেরা কর্মবিরতি শুরু করেন। রোগীদের পরিবার ও বন্ধুবান্ধবের হাতে ডাক্তারেরা বারবার মার খাবেন কেন, এই প্রশ্ন তুলে তাঁদের সমর্থনে কর্মবিরতি শুরু হয়ে যায় অন্যান্য সরকারি হাসপাতালেও। রাজ্যের সীমানা ছাড়িয়ে সারা দেশে সেই আন্দোলনের ধাক্কা লাগে। চিকিৎসকদের নিরাপত্তার দাবিতে পথে নামেন বিশিষ্টজনেরাও।
আরও পড়ুন: মানুষের চাপেই গোঁ ছাড়লেন ‘বিপ্লবীরা’
জুনিয়র ডাক্তারেরা দাবি তোলেন, এনআরএসে গিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রীকে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে কথা বলে নিরাপত্তার আশ্বাস দিতে হবে। তার পাশাপাশি দেখতে যেতে হবে আহত পরিবহকে। আন্দোলন চলাকালীন মুখ্যমন্ত্রী গত শনিবার পরিবহকে দেখতে যাবেন বলেও শেষ পর্যন্ত যাননি। তবে রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠী তার আগের দিন, শুক্রবার ওই ডাক্তারকে দেখতে মল্লিকবাজারের হাসপাতালে যান।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy