মহম্মদ সেলিম। —ফাইল চিত্র।
আরও একটি নির্বাচনী বিপর্যয়ের পর রাজ্য কমিটির বর্ধিত অধিবেশনের পথে যাচ্ছে বঙ্গ সিপিএম। আগামী জুলাই-অগস্ট মাসে কলকাতা থেকে দূরবর্তী কোনও জেলায় তা করার পরিকল্পনা নিয়েছে আলিমুদ্দিন স্ট্রিট। বাঁকুড়া বা পুরুলিয়ায় সেই অধিবেশন বসতে পারে বলে খবর। তবে স্থান, কাল এখনও চূড়ান্ত হয়নি। গত নভেম্বরেও তিন দিনের বর্ধিত অধিবেশন করেছিল রাজ্য সিপিএম। হয়েছিল হাওড়ায় সিপিএম জেলা দফতর অনিল বিশ্বাস ভবনে। সিপিএম রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম বলেন, “এ বার পরিকল্পনা রয়েছে কলকাতা থেকে দূরে গিয়ে অধিবেশন করার।”
আগামী বুধ এবং বৃহস্পতিবার (১৯-২০ জুন) রাজ্য কমিটির বৈঠক রয়েছে সিপিএমের। সেই বৈঠকেই ভোটের ফল নিয়ে প্রাথমিক পর্যালোচনা হবে। তার পর বর্ধিত অধিবেশনের পরিকল্পনা সিপিএমের ক্ষেত্রে খানিকটা নজিরবিহীনই। কেননা, চলতি বছরের অক্টোবর মাস থেকেই সারা দেশে সিপিএমের সাংগঠনিক সম্মেলন প্রক্রিয়া শুরু হবে। শাখা, অঞ্চল, জেলা, রাজ্য সম্মেলন হয়ে আগামী বছর এপ্রিলে পার্টি কংগ্রেসের নির্ধারিত সূচি রয়েছে। ভোট পর্যালোচনার পরে এবং সম্মেলন প্রক্রিয়া শুরুর আগে বঙ্গ সিপিএমের এই বর্ধিত অধিবেশনের পরিকল্পনা নিয়ে দলের মধ্যেই আলোচনা শুরু হয়েছে।
গত নভেম্বরের বর্ধিত অধিবেশন থেকে সিপিএম বেশ কতগুলি সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। যার অন্যতম ছিল মধ্য-মেয়াদে দলের প্রভাতী দৈনিকের সম্পাদক বদল করা। সম্পাদক পদে বসানো হয় প্রাক্তন সাংসদ তথা দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য শমীক লাহিড়ীকে। এ বার কৌতূহলের বিষয় হল, আগামী বর্ধিত অধিবেশনে কী নিয়ে আলোচনা করবে সিপিএম?
দলের এক প্রবীণ নেতার কথায়, “সম্মেলন পর্বের আগে আমাদের দেখে নিতে হবে সংগঠনের বাস্তব চিত্রটা কী। সেই কারণেই বর্ধিত অধিবেশনের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।” দক্ষিণবঙ্গের এক নেতার বক্তব্য, “শহরাঞ্চলে সাংগঠনিক অবস্থার একটা চাকচিক্যের ছবি রয়েছে। সমাজমাধ্যমে যার অস্তিত্ব। বুথ স্তরে কোনও প্রভাব নেই। গ্রামাঞ্চলের অবস্থা আরওই তথৈবচ। সেটাই ময়নাতদন্ত প্রয়োজন।”
সব জেলায় দলের সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য, গণসংগঠনের রাজ্য নেতৃত্বকে নিয়ে হবে বর্ধিত অধিবেশন। ক্ষমতা থেকে চলে গেলেও সিপিএমের বড় অংশের মধ্যে কমিটি আঁকড়ে থাকার ঝোঁক রয়েছে বলে দলের অনেকের দাবি। সম্মেলনের আগে তা বেশি বেশি করে চাগাড় দেয় বলে অনেকেরই অভিজ্ঞতা। প্রাক্-সম্মেলন পর্বে এই বর্ধিত অধিবেশন থেকে সংগঠনে বড় কোনও রদবদল হওয়ার সম্ভাবনা নেই। তবে সম্মেলন সংক্রান্ত নির্দেশিকা তৈরি করতে পারে রাজ্য সিপিএম।
ইতিমধ্যেই নিচুতলায় ভোটের পর্যালোচনা শুরু হয়েছে সিপিএমে। তা থেকে বিবিধ মত উঠে আসছে। এখনও পর্যন্ত যে নির্যাস আলিমুদ্দিনের নেতারা পাচ্ছেন, তা খুব একটা আশাব্যঞ্জক নয়। বিষয়টি রেষারেষির পর্যায়ে চলে যাচ্ছে। জেলা বা রাজ্য স্তরের নেতারা জানতে চাইছেন, বুথ স্তরে সংগঠনের ছবিটা কেমন ছিল? আর নিচুতলা থেকে বলা হচ্ছে, নির্বাচনী কৌশল, জোট-ঘোঁটের কারণেই খরা কাটছে না। সিপিএমের অনেকের বক্তব্য, বিজেপিরও বুথ স্তরে সব জায়গায় সংগঠন নেই। কিন্তু তারা ভোট পাচ্ছে। অথচ সিপিএম পাচ্ছে না। এই প্রেক্ষাপটেই রাজ্য সিপিএম বর্ধিত অধিবেশনের পথে যাচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy