Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪

সামনে অধীর, পিছনে সোমেন, নয়া অঙ্কে জোটও

লোকসভার নেতা হওয়ায় অধীরবাবুর গুরুত্ব এখন জাতীয় স্তরে ঢের বেশি। তাঁর পদ মর্যাদাকে কাজে লাগিয়ে বাংলায় কংগ্রেস সক্রিয়তা বাড়াতে চায় ঠিকই।

সন্দীপন চক্রবর্তী
কলকাতা শেষ আপডেট: ২০ জুন ২০১৯ ০২:১৮
Share: Save:

রাজ্য কংগ্রেসের জন্য দীর্ঘ দিন সর্বোচ্চ পদ প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতিরই। অতীতে কেন্দ্রীয় সরকারে গুরুদায়িত্ব সামলানোর সময়ে প্রণব মুখোপাধ্যায় বা প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সি প্রদেশ সভাপতি থেকেছেন। নিজেদের মতো ‘টিম’ তৈরি করে কাজ চালিয়েছেন। অধীর চৌধুরীকে লোকসভায় বিরোধী দল কংগ্রেসের নেতার আসন দিয়ে সনিয়া ও রাহুল গাঁধীরা এ বারই প্রথম প্রদেশ সভাপতির চেয়ে উচ্চতর মর্যাদার পদ দিলেন বাংলাকে! এই অভিনব পরিস্থিতিকে কী ভাবে কাজে লাগানো যাবে, তা নিয়ে এখন ভাবতে হচ্ছে বঙ্গ কংগ্রেসকে!

লোকসভার নেতা হওয়ায় অধীরবাবুর গুরুত্ব এখন জাতীয় স্তরে ঢের বেশি। তাঁর পদ মর্যাদাকে কাজে লাগিয়ে বাংলায় কংগ্রেস সক্রিয়তা বাড়াতে চায় ঠিকই। কিন্তু অধীরবাবুর নতুন পদের দায়িত্ব ও সময়ের সঙ্গে সমন্বয় করা খুব সহজ নয়। আবার প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্রের পক্ষে এখন অধীরবাবুকে একেবারে এড়িয়ে সব সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলা কঠিন। এমতাবস্থায় প্রদেশ কংগ্রেসের কর্মপদ্ধতি নিয়েই নতুন করে চর্চা শুরু হয়েছে দলের অন্দরে। তবে সিপিএমের সঙ্গে ফের জোট করে এগোনোর প্রশ্নে অধীরবাবু ও সোমেনবাবুর অবস্থান একই। দিল্লিতে অধীরবাবুর গুরুত্ব বাড়ায় সিপিএম নেতৃত্বও উৎসাহিত। ঘরোয়া ভাবে দু’দলের নেতারা তাই কথা শুরু করে দিয়েছেন। আনুষ্ঠানিক আলোচনাও শুরু হবে দ্রুত।

প্রদীপ ভট্টাচার্যকে সরিয়ে ২০১৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে অধীরবাবুকে প্রদেশ সভাপতির দায়িত্ব দিয়েছিলেন সনিয়া। গত বছর সেপ্টেম্বরে অধীরবাবুকে আচমকাই সরিয়ে সোমেনবাবুকে ওই পদে নিয়ে এসেছিলেন রাহুল। আর সে খবর অধীর পেয়েছিলেন সংবাদমাধ্যম থেকে। প্রদেশ সভাপতি হিসেবে অধীরবাবু পূর্ণাঙ্গ না হলেও বামেদের সঙ্গে আসন সমঝোতা করতে পেরেছিলেন, কংগ্রেস বিধানসভায় প্রধান বিরোধী দলের মর্যাদা পেয়েছিল বহু দিন পরে। সোমেনবাবু চেষ্টা করেও লোকসভায় সমঝোতা করতে পারেননি, অধীরবাবুর আমলে জেতা দু’টি আসনও হারিয়েছেন। এক সময়ে যাঁরা অধীরবাবুকে প্রদেশ সভাপতি পদ থেকে সরাতে সক্রিয় ছিলেন, দিল্লির দৌলতে বহরমপুরের সাংসদের দিন ফিরতেই তাঁদের অনেকে আবার দ্রুত তাঁর পাশে দাঁড়িয়ে পড়ছেন। ক্ষমতাকেন্দ্রিক কংগ্রেস রাজনীতিতে যেমন দস্তুর!

প্রদেশ সভাপতি বদলে ভূমিকা ছিল বাংলায় এআইসিসি-র ভারপ্রাপ্ত নেতা গৌরব গগৈয়েরও। তিনি এখন বলছেন, ‘‘অধীরদা’র সঙ্গে কথা বলে নিয়েছি। কংগ্রেসের অবস্থান এবং বক্তব্য স্পষ্ট ভাবে তুলে ধরতে পারবেন তিনিই।’’ বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান তাঁর ‘পুরনো বন্ধু’ অধীরের সঙ্গে যোগাযোগ বাড়িয়েছেন। আবার সোমেনবাবু বুধবার অধীরবাবুরই জেলা মুর্শিদাবাদের ভগবানগোলায় ভোটের দিন নিহত কংগ্রেস কর্মী টিয়ারুল শেখের বাড়িতে অর্থ সাহায্য পাঠিয়েছেন অমিতাভ চক্রবর্তী, রোহন মিত্রদের মারফত। অমিতাভবাবুদের বক্তব্য, রাহুলের জন্মদিন তাঁরা অসহায় একটি পরিবারের পাশে দাঁড়িয়ে পালন করলেন। কিন্তু ২৩ এপ্রিল নিহত কর্মীর পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর জন্য এমন একটি ‘দিন’ বেছে নেওয়া অনেকেরই নজর এড়ায়নি!

অধীরবাবু বলছেন, ‘‘বাংলার কংগ্রেস নিয়ে কিছু বলার কথা আমার নয়। দিল্লির দায়িত্ব পালনে এখন বেশি সময় দিতে হবে। কিন্তু বাংলার কংগ্রেসের জন্যই আমি এই জায়গায়। বাংলার কংগ্রেস কর্মীদের জন্য নিশ্চয়ই কাজ করব, রাজ্য নেতৃত্ব চাইলে।’’ আর সোমেনবাবুর বক্তব্য, ‘‘অধীরকে লোকসভার নেতার পদ দিয়ে বাংলার কংগ্রেসকে সম্মান দিয়েছেন সনিয়া ও রাহুল গাঁধী। আমরা ২০২১ সালে বিধানসভা ভোটে সর্বশক্তি দিয়ে লড়াইয়ের অনুপ্রেরণা পেয়েছি।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Adhir Chowdhury Somen Mitra Alliance
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy