Advertisement
০৬ নভেম্বর ২০২৪
Ram Mandir Inaguration

মোদীর কাছে ক্ষমা চেয়ে অযোধ্যায় গিয়ে রামলালা দর্শন করে এলেন বিজেপি বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ মাইতি

রামমন্দির উদ্বোধনের কথা জানতে পেরেই কলকাতা-অযোধ্যা বিমানের টিকিট কাটেন বিজেপি বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ মাইতি। ১৯ জানুয়ারির অযোধ্যাযাত্রায় তাঁর সঙ্গী হন স্ত্রী প্রিয়াঙ্কা।

Bengal BJP MLA Rabindranath Maity visits Ram Mandir in Ayodhya

বুধবার অযোধ্যা থেকে ফিরে বিজেপি বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ মাইতি। (পিছনে) তাঁর মোবাইলে তোলা সন্ধ্যায় রামমন্দিরের ছবি। —নিজস্ব চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৫ জানুয়ারি ২০২৪ ১৫:১৩
Share: Save:

রামমন্দির উদ্বোধনের দিন বিজেপি নেতা-কর্মীদের অযোধ্যায় না এসে নিজেদের জায়গায় দিনটি উদ্‌যাপন করতে বলেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সেই কথা ‘নির্দেশ’ হিসাবে মেনে নিয়ে দেশ জুড়ে গেরুয়া শিবিরের কোনও নেতাই আর অযোধ্যামুখী হননি। বাংলার নেতারাও সেই তালিকাতেই ছিলেন। ব্যতিক্রম শুধু এ রাজ্যের এক বিধায়ক। ২২ জানুয়ারি রামমন্দির উদ্বোধনের দিনই অযোধ্যায় গিয়ে ওই বিজেপি বিধায়ক রামলালা দর্শন করে এসেছেন। পূর্ব মেদিনীপুরের ভগবানপুরের বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ মাইতি বুধবার বিকেলেই রামমন্দির দর্শন সেরে অযোধ্যা থেকে কলকাতায় ফিরেছেন।

২২ জানুয়ারি মন্দির উদ্বোধন হবে, এ কথা জানতে পেরেই কলকাতা থেকে অযোধ্যা যাওয়ার ১৯ জানুয়ারির টিকিট কাটেন রবীন্দ্রনাথ। এ যাত্রায় তাঁর সঙ্গী হন স্ত্রী প্রিয়াঙ্কা মাইতি। রবীন্দ্রনাথ জানিয়েছেন, অযোধ্যা পৌঁছেই জানতে পারেন, এত বছর যে অস্থায়ী তাঁবুতে রামলালার পুজো হয়ে আসছে, তা ২০ তারিখ থেকে পুরোপুরি বন্ধ করে দেওয়া হবে। তাই স্ত্রীকে একটি নিরাপদ আস্তানায় পৌঁছে দিয়েই চলে যান সরযূ নদীতে স্নান করতে। স্নান সেরে অস্থায়ী তাঁবুতে থাকা রামলালার দর্শন করেন। পর দিন স্ত্রীকে সঙ্গী করে দশরথ ভবন, কনক ভবন, হনুমানগড়ির মন্দির ঘুরে দেখেন তিনি। ২২ তারিখ যে মন্দিরে ঢোকা যাবে না তা জেনেই নতুন করে সেজে ওঠা অযোধ্যা শহরে ঘুরে দেখেন সস্ত্রীক বিধায়ক।

২৩ জানুয়ারি ভোরে মন্দিরে প্রবেশের জন্য লাইনে দাঁড়ান মাইতি দম্পতি। সকাল ৭টা নাগাদ প্রথম বার মন্দিরে প্রবেশ করেন তাঁরা। এক বার মন্দির ও রামলালা দর্শন করে মন ভরেনি বিধায়কের। তাই বেলা ১১টা নাগাদ আবারও সস্ত্রীক মন্দিরে যান তিনি। দুপুরে মন্দির থেকে ফিরে আবারও সন্ধ্যায় যাবেন বলে ঠিক করেন। সন্ধ্যায় অবশ্য তিনি একা গিয়েই দু’দফায় রামলালা দর্শন করেন। এক দিনে চার বার রামমন্দিরে গিয়েও তাঁর অন্তরাত্মা অতৃপ্ত রয়েছে বলেই জানান রবীন্দ্রনাথ। অযোধ্যা থেকে প্রসাদও এনেছেন তিনি। সেই প্রসাদ বিধানসভায় এনে সকলকে দিয়েওছেন রবীন্দ্রনাথ।

বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর নেতৃত্বে বিজেপি পরিষদীয় দল আগামী ১০ ফেব্রুয়ারি অযোধ্যা যাচ্ছে রামমন্দির ঘুরে দেখতে। কিন্তু বিধায়কদলের সঙ্গে আর অযোধ্যা যেতে চান না রবীন্দ্রনাথ। তাঁর কথায়, ‘‘আমি একা গিয়ে ভাল করেই দেখে এসেছি। তাই বিধায়কদের সঙ্গে আর যাব না। পরিকল্পনা করেই এসেছি, দু’মাস পর আবার যাব। চেষ্টা করব যাতে দু’মাস অন্তর অযোধ্যা আসতে পারি।’’

কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ আমান্য করে তাঁর এ হেন রামমন্দির দেখতে যাওয়া কি ঠিক হয়েছে? বিজেপি বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ বলেন, ‘‘আমি জানি প্রধানমন্ত্রী আমাদের সুবিধার জন্যই উদ্বোধনের দিন অযোধ্যা যেতে নিষেধ করেছিলেন। কিন্তু ৫০০ বছর পর রামলালা তার নিজের ঘরে ফিরছেন, এক জন ধর্মপ্রাণ হিন্দু হিসাবে সেই দৃশ্য দেখার লোভ সামলাতে পারিনি।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘আমি প্রধানমন্ত্রীর কাছে ক্ষমা চাইছি। কিন্তু আমি এটাও জানি যে, তিনি আমার মনের অবস্থার কথা বুঝে ক্ষমা করে দেবেন। কারণ, রামমন্দির ঘিরে আমাদের আবেগের কথা তিনি নিশ্চয়ই বুঝবেন।’’

তবে অযোধ্যা যাওয়ার আগে বিরোধী দলনেতাকে নিজের সফরসূচির বিষয়ে জানিয়েছিলেন বলেই জানান রবীন্দ্রনাথ। তাঁর অনুপস্থিতিতে ভগবানপুরের সাধারণ মানুষ-সহ বিজেপিকর্মীরা যাতে রামপুজো করার পাশাপাশি, রামমন্দির উদ্বোধন দেখতে পারেন, সেই সব বন্দোবস্তও তিনি করে গিয়েছিলেন বলে জানান রবীন্দ্রনাথ।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE