বউবাজারে ঘরছাড়াদের ফেরাতে উদ্যোগী হচ্ছে মেট্রো কর্তৃপক্ষ। নিজস্ব চিত্র।
কলকাতার পুরভোট আসতেই ফের উঠল বউবাজারে মেট্রো প্রকল্পের প্রসঙ্গ। ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো প্রকল্পের কাজে্র কারণে ২০১৯ সালে বউবাজার এলাকার স্যাঁকরা পাড়া লেন ও দুর্গা পিতুরি লেনের একাধিক বাড়িতে ফাটল দেখা দেয়। ফলে মেট্রো রেলের নির্মাণকারী সংস্থা কেএমআরসিএল-এর বিরুদ্ধে আন্দোলনে নামেন স্থানীয় বাসিন্দারা। 'স্যাঁকরা পাড়া লেন বাঁচাও কমিটি' নাম দিয়ে মেট্রোর বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু হয়। এই ঘটনার জেরে কিছু দিনের জন্য বাড়ি ছাড়তে হয়েছিল তৎকালীন মন্ত্রী তাপস রায়কেও। তাপস নিজের বাড়িতে ফিরতে পারলেও, স্যাঁকরা পাড়ার প্রায় সব বাসিন্দা ও দুর্গা পিতুরি লেনের একাংশের বাসিন্দাদের স্থায়ী ভাবেই এলাকা ছেড়ে অন্যত্র যেতে হয়েছে। তাঁদের প্রত্যেককেই থাকার জন্য অস্থায়ী বন্দোবস্তও করে দিয়েছে মেট্রো কর্তৃপক্ষ।
বসবাসের জন্য অন্যত্র চলে গেলেও, তাঁরা এখনও চৌরঙ্গী বিধানসভার ৪৮ নম্বর ওয়ার্ডের ভোটার। এ বারের পুরভোটে তাঁরা সেখানেই ভোট দিতে আগ্রহী বলে জানিয়েছেন। সুব্রত মহাপাত্র স্যাঁকরা পাড়া এলাকায় ৩৮ বছর ধরে রয়েছেন। কিন্তু মেট্রোর ব্যবস্থাপনায় তাঁকে থাকতে হচ্ছে জোড়াসাঁকো এলাকার বলরাম বসু রোডে। তিনি বলছেন, ‘‘ভোট আমাদের অধিকার। মেট্রো আমাদের ঘরবাড়ি তৈরি করে দেবে। যেদিন সেই ঘরবাড়ি তৈরি হবে, তখন আমরা আবার বউবাজারে ফিরে আসব। এখন অন্য জায়গায় আছি বলে ভোটার কার্ড বদল করিনি। এ বারও ৪৮ নম্বর ওয়ার্ডেই এসে ভোট দেব।’’ শনিবার স্যাঁকরাপাড়া এলাকার ভোটাররা বৈঠক করে গিয়েছেন ৪৮ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল প্রার্থী বিশ্বরূপ দে-র সঙ্গে। প্রায় ৬০টি পরিবারের সদস্য এই বৈঠকে অংশ নিয়েছেন বলে জানিয়েছেন তৃণমূল প্রার্থী। বিশ্বরূপ বলেন, ‘‘যাঁরা এখান থেকে বাড়ি ভাঙার কারণে চলে গিয়েছেন, তাঁরা আমার কাছে এসেছিলেন। তাঁরা এখনও এই এলাকার ভোটার। এখানেই ভোট দিতে চান। তাঁদের কিছু দাবিদাওয়া আছে। আমি কাউন্সিলর নির্বাচিত হলে যেন তাঁদের দাবির স্বপক্ষে থাকি, সে ব্যাপারে বৈঠক করে গিয়েছেন। আমিও প্রতিশ্রুতি দিয়েছি, এলাকার মানুষ যদি আমায় আশীর্বাদ করেন তা হলে তাঁদের পাশে থাকতে পারব।’’
ঘরছাড়া ওই ভোটারদের হয়ে মেট্রো কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথাও বলেছেন সদ্য রাজনীতিতে আসা বাংলার ক্রিকেট প্রশাসনের এই প্রাক্তন কর্তা। প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বর মাসে মেট্রোর কাজের কারণে বউবাজার এলাকার স্যাঁকরা পাড়া এলাকায় দু'টি টানেল বোরিং মেশিন (টিএমবি) মাটির তলায় গিয়ে আটকে পড়েছিল। একটি মেশিনের নাম 'চণ্ডী' ও অন্যটির নাম 'ঊর্বী'। মাটির প্রায় ১৯ মিটার নীচে দু’বছরের বেশি সময় ধরে আটকে রয়েছে টিএমবি দু'টি। মেট্রো সূত্রে খবর, আগামী বছর ফেব্রুয়ারি মাসের মধ্যে টিএমবি দু'টিকে মাটির তলা থেকে বার করে নেওয়া যাবে। তার পরেই ওই এলাকায় নতুন বাড়ি নির্মাণের কাজ শুরু করে দেবে কেএমআরসিএল। এবং বাড়িগুলি তৈরি হয়ে গেলেই তা তুলে দেওয়া হবে বাসিন্দাদের হাতে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy