কলকাতার গড়িয়াহাট বাজারে শনিবার ৪০-৫০ টাকায় এক-একটি ফুলকপি বিক্রি হয়েছে। ফাইল ছবি
দাম বেড়েছিল দুর্গাপুজোর সময়েই। লক্ষ্মীপুজোর আগে আনাজ, ফল, ফুল—সব কিছুই কার্যত অগ্নিমূল্য! কেউ কেউ এ-ও বলছেন, লক্ষ্মীপুজোর আগে কোনও বছরই বাজারে দাম কম থাকে না। কিন্তু এ বার যেন জিনিসপত্রে হাত দিলেই ছ্যাঁকা লাগছে!
কলকাতার গড়িয়াহাট বাজারে শনিবার ৪০-৫০ টাকায় এক-একটি ফুলকপি বিক্রি হয়েছে। আকারে একটু বড় হলে ফুলকপির দাম ৬০ টাকাও ছুঁয়েছে। বাঁধাকপিও ৫০ টাকা কিলোদরে বিকিয়েছে। বেগুনের দাম কিলোপ্রতি ৬০-৭০ টাকা। গাজরের দাম কিলো প্রতি ৮০ টাকা ছিল। যদিও গড়িয়াহাট বাজারের মার্কেট কমিটির সেক্রেটারি দিলীপ কুমার মণ্ডলের দাবি, “লক্ষ্মীপুজো উপলক্ষে বাজারে আনাজের দাম সে ভাবে বাড়েনি। আনাজের জোগানও ভাল।’’ বাঘাযতীন বাজারে এ দিন চন্দ্রমুখী আলু ৪০-৪৫ টাকা প্রতি কিলো দরে বিক্রি হয়েছে। জ্যোতি আলুর দাম ছিল কিলো প্রতি ৩০ টাকা। বেগুন ৬০ টাকা, ঢেঁড়স ৪০ টাকা, পটল ৪০ টাকা কিলো দরে বিক্রি হয়েছে। ওই বাজারেই আপেল ১৫০-২০০ টাকা, পেয়ারা ১০০ টাকা, ন্যাসপাতি ১০০ টাকা কিলোদরে বিক্রি হয়েছে। উত্তর শহরতলির নিউ ব্যারাকপুর বাজারে কুচো আকারের ফুলকপি ৩৫ টাকায় বিক্রি হয়েছে। বরবটি ৬০ টাকা, কুমড়ো ৪০ টাকা, মুলো ৬০ টাকা কিলোদরে বিক্রি হয়েছে।
জেলাগুলিতেও আনাজের দাম বেড়েছে বলে ক্রেতারা জানান। দুই বর্ধমানের নানা বাজারে বিট, গাজর, টোম্যাটো ৭০-৮০ টাকা কেজি, কুমড়ো ৩০-৩৫ টাকা, ক্যাপসিকাম, বিনস ২০০-২৫০ টাকা কেজি, প্রতিটি ফুলকপি ৩০-৪০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। পূর্ব মেদিনীপুরে কোনও বাজারে ফুলকপি এক-একটার দাম চাওয়া হয়েছে ৬০-৭০ টাকা। বাঁকুড়ার কিছু বাজারে বাঁধাকপি ৫০ টাকা, বেগুন ৪০ টাকা, শশা ৫০ টাকা কেজি। নদিয়ার কিছু বাজারে বাঁধাকপি, বেগুন সামান্য দামি। মুলো কমবেশি ৪০ টাকা। ডাঁটা ৩০-৪০ টাকা প্রতি কেজি। চন্দ্রমুখী আলু ৪০, জ্যোতি আলু ২৮ টাকা কেজিতে বিক্রি হয়েছে। দুই চব্বিশ পরগনার বিভিন্ন জায়গায় ঢেঁড়স, পটল, ঝিঙেও ৫০ টাকা কেজি।
রাজ্যের বিভিন্ন শহরে এক-একটা নারকেল ৫০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। মুর্শিদাবাদে আপেল ১০০-১২০ টাকা কেজি দরে বিকিয়েছে। কাঁঠালি কলা ৬০-৬৫ টাকা ডজন দরে বিক্রি হয়েছে। দুই বর্ধমানে বেদানা ২০০ টাকা, কলা প্রতি ডজন ৬০ টাকা ছিল। নদিয়ায় বড় আকারের আখ ৫০ টাকা, মাঝারি আখ ৪০ টাকা দামে বিকিয়েছে। ঘটের ডাব ৪০-৫০ টাকা পর্যন্ত উঠেছে। পূর্ব মেদিনীপুরের বিভিন্ন বাজারেও বেশির ভাগ ফলের দাম ১০০ টাকা ছাড়িয়েছে। উত্তরবঙ্গ জুড়ে নানা বাজারে আপেল, ডালিম, নাসপাতির দাম গত প্রায় এক মাসের তুলনায় কেজি প্রতি ২০-৪০ টাকা বেড়েছে। হাওড়া, হুগলির ফল ব্যবসায়ীদের অবশ্য দাবি, ফলের দাম এ বছর বিশেষ বাড়েনি।
উত্তরবঙ্গে পদ্মের একটি কুঁড়ি ২০-৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। মুর্শিদাবাদের রঘুনাথগঞ্জের বাজারে ১৫-২০ টাকায় পদ্মফুল বিক্রি হলেও গাঁদাফুলের মালা বিক্রি হয়েছে ৩০-৩৫ টাকা দরে। গড়িয়াহাট বাজারে ছোট মাপের পদ্মফুল প্রতিটি ২০-২৫ টাকায় বিক্রি হয়েছে। গাঁদার মালার দাম ২৫ টাকা ছুঁয়েছে। মানিকতলা বাজারে এক-একটি রজনীগন্ধার মালার দর ১৫০ টাকা। আজ, রবিবার পুজোর দিনে দাম আরও বাড়তে পারে। তবে সারা বাংলা ফুল চাষি ও ফুল ব্যবসায়ী সমিতির রাজ্য সম্পাদক নারায়ণ নায়েক বলেন, “এ বার কলকাতার মল্লিকঘাট ফুল বাজারে পাইকারি ফুলের দাম অন্য বছরের তুলনায় কম। কারণ, পুজোর আগে দুর্যোগ হয়নি।’’ ধর্মতলার ফুল ব্যবসায়ী ভারত হান্ডা বলেন, “অন্য বছরের থেকে দাম এ বার কম। পদ্মের দাম অবশ্য চড়া।’’
দাম বেড়েছে প্রতিমারও। বাঁকুড়া শহরের নবীন সরকার বলেন, ‘‘গত বছর যে প্রতিমা পাঁচশো টাকায় কিনেছি, এ বার তার দাম ৯০০ থেকে ১ হাজার টাকা!’’ টাকি, হাসনাবাদের বায়লানি বাজার, হিঙ্গলগঞ্জের বাজারে ২ ফুটের প্রতিমার দাম ৬০০-৭০০ টাকা। ৬ ফুটের প্রতিমার দাম ৬০০০ টাকা, যা আগের বছরের তুলনায় প্রায় ১০০০ টাকা বেশি। ভাঙড়ের বাজারে তিন ফুট উচ্চতার প্রতিমার দর ৫০০-১০০০ টাকা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy