এখানেই খুন হন মণীশ শুক্ল (ডান দিকে)। নিজস্ব চিত্র।
ভিড়ে ঠাসা বিটি রোডের উপর গুলি করে খুন করা হল ব্যারাকপুরের বিজেপি স্ট্রংম্যান মণীশ শুক্লকে। রবিবার রাত সাড়ে ৮টা নাগাদ যখন তিনি টিটাগড় থানার কাছে দাঁড়িয়ে ছিলেন তখন ঘটনাটি ঘটে। মোটর সাইকেলে চেপে আসা দুষ্কৃতীরা খুব কাছ থেকে পর পর গুলি করে মণীশকে লক্ষ্য করে। তাঁকে বাঁচাতে গিয়ে গুলিবিদ্ধ হয়েছেন তাঁর সঙ্গী গোবিন্দ। গুলিবিদ্ধ মণীশকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় বাইপাসের ধারে একটি হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীদের কথায়, মণীশ বিটি রোডের ধারে যে জায়গায় দাঁড়িয়ে ছিলেন, সেই জায়গাটি টিটাগড় থানা এবং পুরসভার মাঝামাঝি। স্থানীয়ভাবে এলাকাটি ‘বড়া মস্তান’ বলে পরিচিত।
পুলিশকে ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে প্রত্যক্ষদর্শীদের কয়েকজন জানিয়েছেন, ঘটনার ঠিক আগেই রাস্তা দিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের একটি ধিক্কার মিছিল যাচ্ছিল। সেই মিছিল চলে যাওয়ার পরই পিছন থেকে বেশ কয়েকটি মোটরবাইক আসে। বাইক চালক এবং সওয়ারিদের মুখ ঢাকা ছিল হেলমেট দিয়ে। খুব কাছ থেকে বাইক আরোহী দুষ্কৃতীরা গুলি করে মণীশকে লক্ষ্য করে। প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, একাধিক গুলি লাগে মণীশের শরীরে। ঘটনাস্থলেই লুটিয়ে পড়েন তিনি। তাঁকে বাঁচাতে গিয়ে ওই সময় গুলি লাগে তাঁর সঙ্গী গোবিন্দের।
বাইপাসের বেসরকারি হাসপাতাল সূত্রে খবর, রাস্তাতেই মৃত্যু হয়েছে মণীশের। তাঁকে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা মৃত বলে ঘোষণা করেন।
ঘটনাস্থলে মোতায়েন করা হয়েছে বিশাল পুলিশ বাহিনী।
ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলের রাজনীতিতে ‘স্ট্রংম্যান’ হিসাবে দীর্ঘদিন ধরে পরিচিত খড়দহের বাসিন্দা মণীশ। বাম জমানার শেষ দিকে যখন তড়িৎ তোপদার ছিলেন ব্যারাকপুরের সাংসদ, সেই সময়ে ব্যারাকপুর রাষ্ট্রগুরু সুরেন্দ্রনাথ কলেজেক ছাত্র সংসদের নির্বাচন ঘিরে প্রবল হিংসার ঘটনা ঘটে। সেই সময় থেকেই এলাকায় যুবনেতা হিসাবে পরিচিতি হয় মণীশের। কারণ ওই কলেজ নির্বাচনে মণীশ উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করেছিলেন। এর পর তৃণণূল যুব কংগ্রেসের নেতা হিসাবে গোটা শিল্পাঞ্চলেই তিনি সক্রিয় হন এবং পরবর্তীতে ভাটপাড়ার তখনকার তৃণমূল বিধায়ক অর্জুন সিংহের ‘কাছের লোক’ বলে পরিচিত হন। তিনি এলাকায় কাউন্সিলরও ছিলেন। অর্জুন বিজেপিতে যোগ দেওয়ার কয়েক মাস পরেই পদ্ম শিবিরে যোগ দেন মণীশ।
আরও পড়ুন: ভুয়ো মেলের ফাঁদে খোদ রাজ্যপাল! অভিযোগ জানালেন কলকাতা পুলিশকে
এ দিন মণীশের উপর হামলার পরেই গোটা এলাকা অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে। ঘটনার পিছনে শাসক দলের মদত রয়েছে অভিযোগ তুলে টিটাগড় থানা ঘেরাও করেন বিজেপি কর্মী সদস্যরা। বেশ খানিক সময় বিটি রোড অবরোধও করেন তাঁরা। টুইট করে মণীশের খুনের পিছনে তৃণমূল কংগ্রেসকেই দায়ী করেছেন বিজেপি নেতা কৈলাশ বিজয়বর্গীয়। তিনি একটি ভিডিয়ো বার্তায় অভিযোগ করেন,‘‘গোটা ঘটনাটি ঘটেছে টিটাগড় থানার সামনে। অর্জুন সিংহ অনেক দিন ধরেই ওই এলাকার পুলিশ কমিশনার মনোজ বর্মা এবং যুগ্ম কমিশনার অজয় ঠাকুরের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। আজকের ঘটনার পর আমি এই ঘটনায় সিবিআই তদন্ত দাবি করছি। সেই সঙ্গে পুলিশের ভূমিকারও তদন্ত হওয়া প্রয়োজন।”
আরও পড়ুন: ফের রাজ্যে করোনায় সর্বাধিক আক্রান্ত ও মৃত, সমান তালে বাড়ছে সুস্থতাও
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy