ব্যারাকপুরে বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্মারক ভবন ঘুরে দেখছেন পুর আধিকারিকেরা। বৃহস্পতিবার। ছবি: মাসুম আখতার
অপুর স্রষ্টার স্মারক ভবনটিকে বাঁচাতে অবশেষে পদক্ষেপ করার আশ্বাস দিল ব্যারাকপুর পুরসভা। পুরসভার নির্মাণকাজের জন্যই ব্যারাকপুরে কথাসাহিত্যিক বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছেলের বসতবাড়িটি ভেঙে পড়ার উপক্রম। নিকাশি নালা বুজে যাওয়ায় সাহিত্যিকের নামাঙ্কিত মিউজ়িয়ামে জল ঢুকে নষ্ট হয়ে গিয়েছে ‘পথের পাঁচালী’র পাণ্ডুলিপি এবং প্রথম সংস্করণের প্রতিলিপি। অভিযোগ ছিল, পুরসভাকে বার বার জানানো সত্ত্বেও কর্তৃপক্ষ সদর্থক কোনও পদক্ষেপ করেননি।
ওই বাড়িতে বর্তমানে থাকেন সাহিত্যিকের পৌত্র তথাগত বন্দ্যোপাধ্যায় ও তাঁর স্ত্রী মিত্রা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার ওই বাড়িতে গিয়ে ক্ষোভের মুখে পড়েন পুরসভার প্রশাসকমণ্ডলীর চেয়ারম্যান উত্তম দাস। উত্তমবাবু আশ্বাস দেন, মিত্রাদেবীদের দাবি অবিলম্বে পূরণ করা হবে। তবে পাণ্ডুলিপির ক্ষতিপূরণ যে সম্ভব নয়, তা জানিয়ে দিয়েছেন তথাগতবাবু।
বছর দুয়েক আগে ব্যারাকপুর স্টেশন লাগোয়া সুকান্ত সদন চত্বরে পুরসভা ওই নির্মাণকাজ শুরু করে। সেখানে একটি সভাঘর ও শপিং কমপ্লেক্স তৈরি হওয়ার কথা। সুকান্ত সদনের পিছনেই বাড়ি মিত্রাদেবীদের। অভিযোগ, প্রকল্পের শুরু থেকে বেআইনি কাজ করছে পুরসভা। অনুমতি না নিয়েই তাঁদের পাঁচিল ভাঙা হয়। পাড়ার একমাত্র নিকাশি নালাটি বুজিয়ে দেওয়া হয়। বঙ্গবাসী কলেজের শিক্ষক তথাগতবাবু জানান, তাঁদের বাড়ি ‘আরণ্যক’-এর একতলায় রয়েছে ছোট্ট মিউজ়িয়াম। অভিযোগ, নিকাশি নালা বুজিয়ে দেওয়ায় ওই স্মারক ভবনে জল ঢুকে ‘পথের পাঁচালী’র পাণ্ডুলিপি নষ্ট হয় ২০১৯-এর বর্ষায়। গত বর্ষায় নষ্ট হয় বিভূতিভূষণের পোশাক ও অন্যান্য জিনিস।
মিত্রাদেবীর অভিযোগ, নির্মাণকাজে ব্যবহৃত যন্ত্রপাতির কম্পনে বাড়িতে ফাটল ধরেছে। একটি বারান্দা প্রায় ভেঙে পড়ছে। বার বার বলায় সেখানে কয়েকটি লোহার খুঁটি বসানো ছাড়া পুরসভা আর কিছু করেনি। সোমবার এই খবর জানাজানি হওয়ার পরে প্রশাসনের উপরমহল থেকে পুরসভাকে পদক্ষেপ করতে বলা হয়। তার পরেই এ দিন উত্তমবাবু ওই বাড়িতে যান। তাঁকে দেখে ক্ষোভ উগরে মিত্রাদেবী বলেন, “আমাকে তুমি ফোনে বলেছিলে, যা পার কর। এখন আবার বাড়িতে এসেছ?” উত্তমবাবু বলেন, “তর্কে যেতে চাই না। আপনাদের দাবি মতো ব্যবস্থা করা হবে।”
পরে তথাগতবাবুর সঙ্গে বাড়ির ক্ষয়ক্ষতি ঘুরে দেখেন উত্তমবাবু। অবিলম্বে পাঁচিল ও নিকাশি নালা তৈরির আশ্বাস দেন। পরে উত্তমবাবু বলেন, “যাঁদের ক্ষতি হয়েছে, তাঁদের ক্ষোভ সঙ্গত। বিভূতিভূষণ আমাদের গর্ব। পুরসভার স্টেডিয়ামও তাঁর নামেই করেছি। এই পরিবারের যা দাবি, তা অবিলম্বে করা হবে। ক্ষতিপূরণের যে আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল, তা-ও পাবেন ওঁরা।” তথাগতবাবু বলেন, “উনি আশ্বাস দিয়েছেন। এখন দেখা যাক, তা কতটা মানা হয়।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy