বজবজে ডুবে যায় ফ্লাই অ্যাশ ভর্তি বার্জ। নিজস্ব চিত্র।
শহরের রাস্তার মতোই ট্রাফিক জ্যাম নদীতেও! সেই জ্যামের মধ্যেই ওভারটেক করতে গিয়ে দুর্ঘটনা। তার জেরে প্রায় সাড়ে ৬০০ টন ফ্লাই অ্যাশ ভর্তি বাংলাদেশি বার্জহুগলি নদীর মাঝখানে ডুবে গেল।
বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ন’টা নাগাদ বজবজে হুগলি নদীতে ডুবতে শুরু করে বাংলাদেশের বার্জ এম ভি মমতাময়ী মা। প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, বন্দর থেকে মোহনার দিকে পর পর তিনটি বার্জ যাচ্ছিল। ডুবে যাওয়া বার্জের ক্যাপ্টেন নজরুল ইসলাম জানান, তাঁর সামনে ছিল বাংলাদেশি বার্জ এম ভি সানি। মাঝখানে তাঁর এম ভি মমতাময়ী মা। পিছনে কলকাতা পোর্ট ট্রাস্টের আর একটি বার্জ। সানি এবং মমতাময়ী মা-তে পণ্য থাকায় তাদের গতি ছিল কম। অন্যদিকে পিছনের বার্জটি ছিল ফাঁকা, ফলে গতিও ছিল বেশি।
নজরুলের দাবি, এ দিন সকাল ন’টা নাগাদ সিইএসসি-র ফ্লাই অ্যাশ বোঝাই করে নেতাজি সুভাষ ডকের টিটি শেড থেকে বাংলাদেশের দিকে রওনা দেয় এম ভি মমতাময়ী মা। ওই ক্যাপ্টেনের কথায়, ‘‘যেখানে দুর্ঘটনাটি ঘটেছে, সেখানে পৌঁছনোর বেশ খানিকটা আগে থেকেই পিছনের বার্জটি রাস্তা চাইছিল। বজবজের কাছে পিছনের বার্জটি আমাকে ওভারটেক করে।” প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, নদীর বুকে বয়া ছিল। তার বাঁদিকে সরে এসে পিছনের বার্জটিকে জায়গা করে দেয় এম ভি মমতাময়ী মা। বয়ার ডানদিক দিয়ে ওভারটেক করে পিছনের বার্জটি। কিন্তু ওভারটেক করতে গিয়েই বিপত্তি। নজরুলের অভিযোগ, ‘‘পাশ কাটিয়ে যেতে গিয়ে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে আমার বার্জের পেটে ধাক্কা মারে পিছনের বার্জটি।” সেই সময় এম ভি মমতাময়ী মা-তে ছিলেন ১৩ জন নাবিক। রাকিব হোসেন নামে এক নাবিক ছিলেন ডেকে। তিনি মাথায় আঘাত পান। এক দিকে হেলে যায় এম ভি মমতাময়ী মা।
আরও পড়ুন: বজবজে মাঝগঙ্গায় তলিয়ে গেল ভিন্দেশি বার্জ, নিরাপদে নাবিকরা
পাড়ে থাকা লোকজন এবং মাঝিরা বার্জটিকে ডুবে যাওয়ার হাত থেকে আটকাতে দড়ি বাঁধেন পাড়ের গাছে। কিন্তু সেই সময়তেই জোয়ার আসে। জলের স্রোতে সরে যায় বার্জ। জলের টান বেশি থাকায় সেই গাছ উপড়ে বার্জ চলে যায় নদীর গর্ভে। তত ক্ষণে অবশ্য ঘটনাস্থলে চলে আসে কলকাতা পুলিশের রিভার ট্রাফিক পুলিশ। পৌঁছন বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর সদস্যরাও। এ দিন বিকেল পর্যন্ত বন্দর এবং কলকাতা পুলিশের ডুবুরিরা চিহ্নিত করার চেষ্টা করেছেন, ঠিক কোন জায়গায় বার্জটি ডুবে গিয়েছে।
আরও পড়ুন: আগামী ২৪ ঘণ্টা কলকাতা-সহ দক্ষিণের জেলাগুলিতে বৃষ্টির সতর্কতা
নাবিকদের প্রাথমিক আশ্রয় দেন পাড়ের বাসিন্দারাই। কিম্তু বার্জের সব নাবিকই বিদেশি নাগরিক। তাঁদের ভারতের ভূখন্ডে থাকার কোনও অনুমতিও নেই। ফলে আপাতত জলেই থাকতে হবে তাঁদের। তাই শেষ পর্যন্ত মমতাময়ী মা-এর সামনে থাকা এম ভি সানির ডেকে জায়গা হয়েছে ওই ১৩ নাবিকের। বাংলাদেশের দূতাবাস থেকে প্রয়োজনীয় নথি পাওয়ার পরেই তাঁরা দেশে ফিরতে পারবেন।
কলকাতা বন্দর কর্তৃপক্ষের তরফে মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক সঞ্জয় মুখোপাধ্যায় বলেন,‘‘আমরা খতিয়ে দেখছি ঠিক কী কারণে দুর্ঘটনা।”
অন্যদিকে বিপুল পরিমাণে ফ্লাই অ্যাশ নদীর জলে মিশে যাওয়ায় তৈরি হয়েছে দূষণের আশঙ্কা। পশ্চিমবঙ্গ দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্যদের এক শীর্ষ আধিকারিক বলেন, ‘‘আমাদের একটি দল পাঠিয়েছি। তাঁরা জলের নমুনা সংগ্রহ করে দেখবেন, কতটা দূষিত হয়েছে জল। সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy