আন্দোলনরত শিক্ষকেরা ভুল স্বীকার না করলে তাঁদের চাকরিতে ফিরিয়ে নেওয়া হবে না বলে জানিয়ে দিলেন দুর্গাপুরের বিধাননগরের বেসরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং ও ম্যানেজমেন্ট কলেজ কর্তৃপক্ষ। বুধবার মহকুমা শাসকের কার্যালয়ে আয়োজিত বৈঠকে এই কথা জানান তাঁরা। ফলে এই কলেজের বিষয়ে আপাতত কোনও সমাধানসূত্র মিলল না। দুর্গাপুরের মহকুমাশাসক কস্তুরী সেনগুপ্ত জানান, তিনি জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে সমস্যার কথা রাজ্য স্তরে জানাবেন।
বুধবার প্রশাসনিক বৈঠকের আগে কলেজে অনুষ্ঠিত এক সাংবাদিক সম্মেলনে কলেজের চেয়ারম্যান এস কে শর্মা জানান, প্রথম ধাপে বরখাস্ত হওয়া ৩৫ জনকে কোনও ভাবেই ফিরিয়ে নেওয়া সম্ভব নয়। কারণ তাঁদের জায়গায় নতুন নিয়োগ হয়ে গিয়েছে। তবে দ্বিতীয় ধাপে বরখাস্ত হওয়া ৫০ জন শিক্ষক যদি ভুল স্বীকার করেন তাহলে তাঁদের আর্জি বিবেচনা করা হবে। যদিও আন্দোলনকারী শিক্ষকদের পক্ষে সুদীপ মজুমদার বলেন, “বিনা শর্তে ফেরাতে হবে। সেটা না হলে আন্দোলন চলবে।” বুধবার সন্ধ্যা থেকে ২৪ ঘণ্টা রিলে অনশন শুরু করেছেন তাঁরা।
শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার, ছুটির দিনে ক্লাস নিতে বাধ্য করা, আগাম নোটিশ ছাড়া চাকরি ছাড়তে বাধ্য করা, নির্দিষ্ট সময়ে বেতন না দেওয়া-সহ বিভিন্ন অভিযোগে গত ১২ অগস্ট থেকে আন্দোলনে নেমেছিলেন দুর্গাপুরের এই ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের শিক্ষকদের একাংশ। তার পরেই কলেজ কর্তৃপক্ষ দু’দফায় ৩৫ জন শিক্ষককে বরখাস্ত করেন। বরখাস্ত হওয়া শিক্ষকদের বিনা শর্তে ফিরিয়ে নেওয়ার দাবি তুলে আন্দোলন চলতে থাকে। কর্তৃপক্ষ জানান আন্দোলনকারী শিক্ষকরা ২০ অগস্টের মধ্যে কাজে যোগ না দিলে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আন্দোলনকারী শিক্ষকেরা জানান, বরখাস্ত শিক্ষকদের পুনর্বহাল করা না হলে তাঁরা কাজে যোগ দেবেন না। এর পর কাজে যোগ দেওয়ার সময়সীমা পেরিয়ে যাওয়ার পরে কলেজ কর্তৃপক্ষ ৫০ জন শিক্ষককে বরখাস্ত করেন। সমস্যা জটিল হয়।
এ দিন মহকুমাশাসকের দফতরের বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বিধাননগরের তৃণমূল নেতা নিখিল মুখোপাধ্যায় এবং দলের জেলা (শিল্পাঞ্চল) যুগ্ম সম্পাদক শঙ্করলাল চট্টোপাধ্যায় ও তৃণমূল প্রভাবিত অধ্যাপক সংগঠন ওয়েবকুপার জেলা (শিল্পাঞ্চল) সভাপতি সোমনাথ মুখোপাধ্যায়। কলেজ চেয়ারম্যান এস কে শর্মার অভিযোগ, “সোমনাথবাবু ফুলঝোড়ের একটি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের শিক্ষক। কিন্তু অযথা আমাদের কলেজে এসে অশান্তি পাকাচ্ছেন।” যদিও সোমনাথবাবুর দাবি, “আমি ওয়েবকুপার পক্ষ নিয়ে আন্দোলনরত শিক্ষকদের পাশে রয়েছি।” কিন্তু শিক্ষকদের সঙ্গে মহকুমা শাসকের বৈঠকে তৃণমূল নেতারা উপস্থিত ছিলেন কেন? ওই তৃণমূল নেতাদের দাবি, কলেজে অচলাবস্থা কাটানোর জন্য সমাধানসূত্র বের করার জন্য ত্রিপাক্ষিক বৈঠক ডাকার আর্জি নিয়েই তাঁরা সেখানে গিয়েছিলেন।
ফুলঝোড়ের ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজটি কবে খুলবে তা-ও এখনও পরিষ্কার নয়। অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে অন্যায় আচরণের অভিযোগে পড়ুয়ারা তাঁর অপসারণ দাবি করেন। তিন দিন ধরে বিক্ষোভ চলে। অশান্তি এড়াতে কলেজ কর্তৃপক্ষ অনির্দিষ্ট কালের জন্য পঠন-পাঠন বন্ধের কথা ঘোষণা করেন। সোমবার বৈঠক করেন মহকুমাশাসক। কলেজ কর্তৃপক্ষ, ছাত্র প্রতিনিধি, পুলিশ ও এক জন ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেটকে নিয়ে কমিটি গঠনের পরামর্শ দেন তিনি। মঙ্গলবার সেই কমিটি বৈঠক করে। বুধবার কলেজ কর্তৃপক্ষ জানা, পড়ুয়ারা কয়েক দিন সময় চেয়েছেন। কলেজের চেয়ারম্যান দুলাল মিত্র বলেন, “কলেজ খোলার পরে যেন ফের অশান্তি না হয় তা নিশ্চিত করতে হবে। তার জন্য দু’এক দিন সময় নেওয়া হচ্ছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy