ঈশ্বরচন্দ্র দাস। —ফাইল চিত্র।
নিজের ফেসবুক প্রোফাইলে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিকৃত ছবি পোস্ট করার অভিযোগে জেলা নির্বাচন আধিকারিকের তরফে শো-কজ করা হলে সিপিএমের বর্ধমান পূর্ব লোকসভা কেন্দ্রের প্রার্থী ঈশ্বরচন্দ্র দাসকে। তবে ঈশ্বরবাবুর দাবি, “ওই ছবি আমি আমার ফেসবুক প্রোফাইলে কোনও ভাবেই পোস্ট করিনি। কেউ আমার ফেসবুকে ঢুকে ওই ছবি লাগিয়েছে। আমি শো-কজের জবাবে ঘটনাটি বিস্তারিত প্রমাণ সহ জেলাশাসককে জানাব।”
বুধবার সারা দিনই ঈশ্বরবাবুর ফেসবুক প্রোফাইলে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বৃদ্ধাবস্থার এক ছবি দেখা যায়। সঙ্গের ক্যাপশন, ২০১৬ সালের বিধানসভার নির্বাচনের পরে এই অবস্থাই হবে। ওই ছবিটি কেন্দ্র করেই জেলা তৃণমূলের নেতা ও কর্মীদের মধ্যে তীব্র আলোড়ন তৈরি হয়। বুধবার সন্ধ্যায় দলের বর্ধমানের অন্যতম পর্যবেক্ষক অলোক দাস জেলাশাসকের কাছে অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগে তিনি বলেন, “নির্বাচন কমিশনের স্পষ্ট নির্দেশ রয়েছে, প্রচারে বা অন্য কোনও ভাবে কেউ কোনও রাজনৈতিক নেতা নেত্রীর বিরুদ্ধে ব্যক্তি কুৎসা ও ব্যক্তিগত আক্রমণ করতে পারবেন না। সেখানে ঈশ্বরচন্দ্র দাস কীভাবে ওই ধরনের কাজ করলেন তা তদন্তের অনুরোধ করছি এবং নির্বাচনী বিধি মেনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আবেদন করছি।”
বৃহস্পতিবার জেলাশাসক সৌমিত্র মোহন বলেন, “ঈশ্বরবাবুর বিরুদ্ধে করা তৃণমূলের অভিযোগ আমাদের হাতে এসেছে। বর্ধমান পূর্ব কেন্দ্রের ওই সিপিএম প্রার্থীকে শোকজ করা হয়েছে।” জেলা নির্বাচনী বিধিভঙ্গ রক্ষা দফতরের আধিকারিক, অতিরিক্ত জেলাশাসক উৎপল বিশ্বাস বলেন, “বৃহস্পতিবার সকালে ঈশ্বরবাবুকে শো-কজ করা হয়েছে। শুক্রবারের মধ্যেই তাঁকে জবাব দিতে বলা হয়েছে।”
ঈশ্বরবাবুর জবাব, “আপনারা আমার ফেসবুক খুলে দেখুন। তাহলেই বুঝতে পারবেন, কেউ আমার ফেসবুকে ওই বিশেষ ছবিটি পোস্ট করেছে। আমি কখনও এভাবে কাউকে আক্রমণ করিনি। করবোও না। আমি পুরো ফেসবুকের প্রিন্ট আউট সঙ্গে দিয়ে ওই শো-কজের জবাব দেব।” ঈশ্বরবাবুর এই ফেসবুক কান্ডের পরে জেলার একাধিক ফেসবুক ব্যবহারকারীর সঙ্গে কথা বলে দেখা গিয়েছে, বেশিরভাগই মনে করছেন, তাঁর কৈফিয়ত যথেষ্ট যুক্তযুক্ত।
উৎপলবাবুরা অবশ্য ঈশ্বরবাবু যুক্তি শুনে বলেন, “যদি উনি এমন দাবি করে শোকজের উত্তর দেন, তাহলে সমস্ত কিছু আইটি বিশেষজ্ঞদের কাছে পাঠানো হবে। ওঁরাই বিচার করে সিদ্ধান্ত নেবেন, ঠিক কী ঘটেছে।” তবে অলোকবাবুর আরও দাবি, এই ঘটনার সঙ্গে আরও যাঁরা জড়িত তাঁদের বিরুদ্ধেও জেলাশাসক তথা নির্বাচন আধিকারিককে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।
এ দিকে, পুরো ঘটনার পরে তৃণমূলের এক কর্মীর সকৌতুক বক্তব্য, “ভোটারদের কাছে পৌঁছতে যে ফেসবুক অ্যাকাউন্ট খুলেছিলেন ঈশ্বরবাবু, ভোটের ভরা বাজারে সেটাই তাঁকে বিড়ম্বনায় ফেলল।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy