নতুন মেয়রকে মিষ্টি খাওয়াচ্ছেন পড়শিরা। ছবি: শৈলেন সরকার।
এমনটা যে হতে পারে, একেবারেই অপ্রত্যাশিত ছিল। তাই তা উদ্যাপনের কোনও আগাম প্রস্তুতি ছিল না। বুধবার সকাল থেকে ফুল-মিষ্টি হাতে প্রতিবেশীরা বাড়িতে যাতায়াত শুরু করায় তাই খানিকটা অস্বস্তিতে পড়ে যায় আসানসোলের ডামরার তিওয়ারি পরিবার।
মঙ্গলবার দিনটা শুরু হয়েছিল অন্য পাঁচটা দিনের মতোই। কিন্তু চিত্রটা পাল্টে গেল বিকেলে। বাড়ির কর্তা জিতেন্দ্র তিওয়ারি অবশ্য সকালে বেরিয়ে গিয়েছিলেন কলকাতার উদ্দেশে। সেখানে আসানসোল ও বিধাননগর পুরনিগমের সদ্য নির্বাচিত কাউন্সিলরদের বৈঠকে ডেকেছিলেন তৃণমূল নেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিকেলে বৈঠক শেষে তিনি ঘোষণা করলেন, আসানসোলে নতুন মেয়র হবেন জিতেন্দ্রবাবু।
কলকাতা থেকে বাড়ি ফিরতে মঙ্গলবার রাত হয়ে গিয়েছিল। তাই জিতেন্দ্রবাবুকে সে দিন আর শুভেচ্ছা-অভিনন্দন জানানো হয়নি প্রতিবেশী ও দলের ঘনিষ্ঠ নেতা-কর্মীদের। বুধবার সকাল থেকে তাই কার্যত লোকের লাইন পড়ে যায় তাঁর বাড়ির সামনে। তার সঙ্গে শুভেচ্ছার বার্তা নিয়ে ক্রমাগত আসতে থাকা ফোনে ব্যতিব্যস্ত হওয়ার জোগাড় হয় নতুন মেয়রের।
পরিবার ও প্রতিবেশীরা জানান, গত বার আসানসোল পুরসভার চেয়ারম্যান হওয়ার পরেও এ ভাবেই বাড়িতে ভিড় জমেছিল। তবে এ বার তাঁদের আনন্দ অনেক বেড়ে গিয়েছে বলে পড়শিরা জানান। প্রতিবেশী চন্দন মিশ্রের কথায়, ‘‘আমাদের জিতেন্দ্র মেয়র হোক, এটা সব সময় চেয়েছি। কিন্তু সত্যি সত্যি যে হবে, তা ভাবিনি।’’ ভোটের কাজকর্মে জিতেন্দ্রবাবুকে সব সময় সহায়তা করেছেন দলের কর্মী-সদস্যেরা। তবে শুধু তাঁরা নন, তাঁর পাশে ছিলেন এলাকার একটি বড় অংশের মানুষ। এ দিন তাঁর বাড়ির সামনে জড়ো হয়েছিলেন এলাকার কয়েকশো মহিলা। তাঁদের অনেকে জানান, জিতেন্দ্রবাবুর জয় কামনা করে তাঁরা স্থানীয় শিবমন্দিরে ব্রত রেখেছিলেন। তাঁদের এক জন ববিতা দেবী বলেন, ‘‘আমরা এতটা আশা করিনি। জিতেন্দ্রবাবু যেন মান রাখতে পারেন, এখন সেই কামনা করি।’’
বুধবার সকালে যখন জিতেন্দ্রবাবু অভিনন্দন কুড়োচ্ছেন, তখন রান্নঘরে স্বামীর জন্য মাংস রাঁধতে ব্যস্ত ছিলেন তাঁর স্ত্রী চৈতালিদেবী। তিনি নিজে আইনের স্নাতক। আসানসোল আদালতেও যাতায়াত করেছেন। তবে এখন আর সংসারের চাপে সেই কাজ করেন না। রান্না করার ফাঁকে এ দিন তিনি বলেন, ‘‘এ বার উনি আরও ব্যস্ত হয়ে পড়বেন। ঘর-সংসারের কাজে আরও পাওয়া যাবে না।’’ এর পরেই যোগ করেন, ‘‘যাই হোক, শহরের মানুষকে পরিষেবা যেন ঠিক মতো দিতে পারেন, সেটাই প্রার্থনা করি।’’
মঙ্গলবার সারা দিনই টেলিভিশনের পর্দায় চোখ রেখেছিলেন চৈতালিদেবী। জানালেন, মনে একটা ক্ষীণ আশা ছিল। তাই সামান্য উত্তেজনাও ছিল। তবে তা দশম শ্রেণিতে পড়া মেয়ে পল্লবী ছাড়া কাউকে জানাননি। মেয়র হিসেবে নাম ঘোষণা হওয়ার পরে স্বামী অন্য নানা ফোনে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। বাড়ির লোকজন তাঁকে ফোনে পান প্রায় চার ঘণ্টা পরে। সে নিয়ে খানিক অভিমানও রয়েছে চৈতালিদেবীর। তিনি বলেন, ‘‘ভেবেছিলাম সুখবরটা উনি নিজেই ফোনে জানাবেন। কিন্তু তা করেননি। আমিই ফোন করে অভিনন্দন জানাই।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy