মোটরবাইক , গাড়িতে প্রচার তৃণমূলের। ছবি: উদিত সিংহ।
দেশ জুড়ে পদ্ম ফোটার আশা নিয়ে এ রাজ্যেও পদ্ম ফুটিয়ে ‘অকাল বোধন’ চাইছে বিজেপি।
সভায়, প্রচারে সর্বত্রই কেন্দ্র দখলের ভরসা দিয়েই কর্মীদের মনোবল বাড়াতে চাইছে তারা। গোটা জেলার সঙ্গে বর্ধমান-দুর্গাপুর কেন্দ্রেও বিজেপি প্রার্থী দেবশ্রী চৌধুরী কর্মীদের তাই বলছেন, “সিপিএম বা কংগ্রেস নয়, আমাদের লড়াই তৃণমূলের সঙ্গে।” তাঁর অভিযোগ, “ওরা জায়গায় জায়গায় আমাদের পোস্টার, ব্যানার ছিঁড়ছে, মারধর করছে, ভয় দেখাচ্ছে। তবে আপানারা মনে রাখবেন, লোকসভা ভোটের পরে দিল্লিতে গিয়ে ওই নেত্রীকেই মোদীর পায়ে ধরে সরকার বাঁচাতে হবে।”
বর্ধমান গ্রামীন বিজেপির সভাপতি দেবীপ্রসাদ মল্লিক ইতিমধ্যে জেলাশাসক সৌমিত্র মোহনের সঙ্গে দেখা করে দলীয় কর্মীদের ভয় দেখানো ও প্রচারে বাধা দেওয়ার অভিযোগ জানিয়েছেন। তাঁর দাবি, জেলাশাসক তথা বর্ধমানের নির্বাচন আধিকারিক তাঁকে ঘটনাগুলি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন। কর্মীদের তিনি বলছেন, “মনে রাখবেন, আমরাও ক্যাডারভিত্তিক দল। এভাবে মারধর করে আমাদের ঠেকানো সম্ভব নয়। আমরাও প্রতিরোধের রাস্তা নিতে জানি। কিন্তু শান্তি বজায় রাখতে আমরা গোলমালে যাব না। আর যাবই বা কেন? ভারতের ভবিষ্যত তো আমাদেরই।”
শনিবার জেলাশাসকের সঙ্গে সমস্ত রাজনৈতিক দলগুলির বৈঠক ছিল। জেলাশাসক বলেন, “আমরা রাজনৈতিক দলগুলিকে কেমন করে তাদের প্রার্থীদের মনোনয়ন জমা দেবেন, প্রচার সভাগুলিতে কী করে মাইকের অনুমতি নিতে হবে, সে ধরনের অনেক কিছু বুঝিয়ে বলেছি।” বৈঠকে দলগুলি পরস্পরের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানাল না? জেলাশাসক বলেন, “না, বৈঠকে কোনও দল আলাদা করে অভিযোগ করেনি। তবে শ’য়ে শ’য়ে অভিযোগ তো এমনিই জমা পড়ছে। বিজেপি ঠিক কী ধরনের অভিযোগ করেছে, তা না দেখে বলতে পারব না।”
দেশ গড়ার স্বপ্ন নিয়ে কর্মীদের সঙ্গে নিয়ে দেবশ্রীদেবী ঘুরছেনও খুব। শুধু, সারাদিনে ১০-১৫ কিলোমিটার হেঁটে পায়ে ফোস্কা পড়ে যাওয়া এড়াতে সঙ্গী করে নিয়েছেন স্নিকার্সকে। জিজ্ঞেস করাতে বললেন, “কি আর করব! এতটা হাঁটার অভ্যেস তো ছিল না। তবে এখন অভ্যেস হয়ে গিয়েছে। পায়েও আর কোনও সমস্যা নেই।” শনিবারও বর্ধমান শহরে উত্তর ফটক থেকে বীরহাটা পযর্ন্ত যে বাইক মিছিল করেছে বিজেপি তাতে গাড়িতে কম পায়ে হেঁটেই তিনি বেশি ঘুরেছেন। বললেন, “ভোট মানেই প্রচুর পরিশ্রম। আর তা না করতে পারলে জেতার আশা করব কী করে? তৃণমূলের সুবিধা রয়েছে, ওরা এ রাজ্যে ক্ষমতায় কী না! আমাদের তো ওদেরই সরিয়ে জিততে হবে লোকসভায়’’
রাজ্যেও কী এ বার তাহলে বিজেপি জয়ের আশা করছে? প্রশ্ন শুনেই কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে দেবশ্রীদেবী বলেন, “আমরা তো কোথাও আমাদের জেতানোর কথা বলছি না! সকলকে বলছি, দেশ জুড়ে পদ্মফুল ফুটতে চলেছে। পদ্ম তো এ রাজ্যে দুর্গাপুজোর আগে ফোটে। আমরা অকাল বোধন চাইছি। গোটা দেশে পদ্ম ফুটবে আর এখানে ফুটবে না এমনটা তো হওয়ার নয়। তাই বলছি সিপিএম বা তৃণমূলের মতো আঞ্চলিক দলকে ভোট না দিয়ে আমাদের দিন। দেশ গড়ার সুযোগ দিন।” বড় মাপের নেতা, তারকা প্রচারে আসবেন কি না তা জানতে চাওয়া হলে প্রার্থী বলেন, “ইন্টারনেট ঘাঁটুন, টুইটার দেখুন তাহলেই বুঝতে পারবেন, আমাদের প্রতি দেশের যুবসমাজের কত সমর্থন।”
কিন্তু সবের উত্তরেই দেশ কেন? দেবশ্রীদেবীর স্পষ্ট জবাব, “বর্ধমান-দুর্গাপুর কী দেশের বাইরে? মোদী লহরের বাইরে?” কথা বলতে বলতেই রবিবার সন্ধ্যায় তিনি ঢুকে গেলেন দলের কর্মিসভায়। সেখানে সাতটি বিধানসভার বিজেপি কর্মীরা জড়ো হয়েছেন ওই আসনে দলের প্রচারের কৌশল ঠিক করতে। ওই বৈঠক থেকেই স্থির হবে তৃণমূলের বিরুদ্ধে জমিয়ে লড়াই দেবার কৌশলও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy