দুর্গাপুরের এমএএমসি মোড়ের কাছে ২ নম্বর জাতীয় সড়কে আটকে দেওয়া হয়েছে লরি। সোমবার সব্যসাচী ইসলামের তোলা ছবি।
তৃণমূলের শহিদ দিবস উপলক্ষে ধর্মতলার উদ্দেশে যাচ্ছিল বহু গাড়ি। রাস্তায় এত গাড়ি সামলা দিতে হিমসিম পুলিশ। শেষ পর্যন্ত যাতায়াতের সুবিধা করে দিতে দুর্গাপুরে ২ নম্বর জাতীয় সড়কের বিভিন্ন মোড়ে লরি ও ট্রাক আটকে দিল পুলিশ। লরি ও ট্রাক চালকদের অভিযোগ, এর ফলে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে পণ্য পৌঁছতে না দিতে পারার জন্য গুণাগার দিতে হবে তাঁদের। পুলিশ অবশ্য জানায়, সাধারণ মানুষের দুর্ভোগের কথা ভেবেই এমন নিয়ন্ত্রনের ব্যবস্থা করতে হয়েছিল।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন সকাল থেকেই কলকাতাগামী যানবাহনের ভিড় লেগে যায় রাস্তায়। যানজট এড়াতে লরি ও ট্রাকের উপরে নিয়ন্ত্রণ জারি করা শুরু করে পুলিশ। ফলে, এবিএল মোড়, ইন্দো-আমেরিকান মোড় এলাকায় লরির লম্বা লাইন পড়ে যায়। দুপুরের পরে আবার লরিগুলিকে আটকে দেওয়া হয়। অভিযোগ, কলকাতা ফেরত তৃণমূল কর্মী-সমর্থকদের গাড়িগুলি যাতে সহজে গন্তব্যে ফিরতে পারে, সে জন্যই এই ব্যবস্থা করে পুলিশ। তার জেরে দুর্গাপুরের বিভিন্ন মোড়ে কোনও কোনও লরি বা ট্রাককে তিন-চার ঘণ্টা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয় বলে অভিযোগ।
অন্ধ্রপ্রদেশ থেকে মাছবোঝাই লরি নিয়ে অসম যাচ্ছিলেন গোবিন্দ রেড্ডি। তিনি বলেন, “আর মাত্র ১০-১২ কিলোমিটার যেতে পারলেই পানাগড়-মোড়গ্রাম রাজ্য সড়কে গিয়ে পড়তাম। কিন্তু পুলিশ আটকে দেওয়ায় দুর্ভোগে পড়ে গেলাম।” তিনি জানান, মাছ পৌঁছে দেওয়ার নির্দিষ্ট সময় রয়েছে। কিন্তু এখানে এ ভাবে কয়েক ঘণ্টা নষ্ট হয়ে যাওয়ায় তা আর সম্ভব হবে না। ফলে, গুণাগার দিতে হবে বলে দাবি করেন তিনি।
মিলন দাস লরি বোঝাই আম নিয়ে যাচ্ছিলেন কলকাতায়। তিনি জানান, বিকেলে আম পৌঁছে দেওয়ার কথা। কিন্তু এখানে আটকে যাওয়ায় তা আর সম্ভব হবে না। রাতে ফলপট্টি বন্ধ হয়ে যাবে। পর দিন সকালের আগে ফল নির্দিষ্ট জায়গায় পৌঁছে দেওয়া যাবে না। তিনি বলেন, “অহেতুক দুর্ভোগে পড়ে গেলাম। আগাম খবর পেলে অন্য রাস্তা ধরে যাওয়ার চেষ্টা করতাম।” লরি চালকদের অভিযোগ, আটকে রাখার প্রতিবাদ করলে তাঁদের অন্য রাস্তা ধরে ঘুরপথে যেতে বলা হয়েছে।
এমন ঘটনায় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে সিপিএম। দলের প্রাক্তন বিধায়ক বিপ্রেন্দু চক্রবর্তীর দাবি, “এ ভাবে বিশেষ একটি রাজনৈতিক দলের সভায় যাতায়াতকারীদের সুবিধা করে দেওয়ার নজির বিরল।” তিনি জানান, লরি ও ট্রাকগুলি দূর দূরান্ত থেকে আসে। হয়তো বেশ কয়েক দিন ধরে তারা চলছে। হঠাৎ এখানে কয়েক ঘণ্টা আটকে দিলে চালকেরা সমস্যায় তো পড়বেনই।
ট্রাফিক পুলিশের এক আধিকারিকের অবশ্য বক্তব্য, “কোনও রাজনৈতিক দলের সুবিধার জন্য নয়, সাধারণ মানুষ যাতে অসুবিধায় না পড়েন সে জন্যই এমন পদক্ষেপ করতে হয়েছে। হয়তো লরি বা ট্রাক চালকদের সাময়িক অসুবিধায় পড়তে হয়েছে। তবে এমন সিদ্ধান্তে হাজার হাজার সাধারণ মানুষ উপকৃত হয়েছেন।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy