পুরসভার রাখা নির্দিষ্ট জায়গাতেই ফেলতে হবে আবর্জনা। তা না হলে নির্দিষ্ট টাকার বিনিময়ে পুরসভার সাফাইকর্মীরা বাড়ি ও দোকানে গিয়ে আবর্জনা সংগ্রহ করবেন। পুর এলাকাকে আবর্জনামুক্ত করতে জামুড়িয়া পুরসভার এই সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ পুরবাসী। তাঁদের দাবি, নির্দিষ্ট পরিকাঠামো তৈরি না করেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে পুরসভা। যদিও পুর কর্তৃপক্ষের দাবি, সব দিক বিবেচনা করেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। জানুয়ারিতেই এই ব্যবস্থা চালু হবে।
বছর কুড়ি আগে ১০টি পঞ্চায়েত এলাকা নিয়ে তৈরি হয়েছিল জামুড়িয়া পুরসভা। কিন্তু পানীয় জল, নিকাশি, দূষণের সমস্যা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই জেরবার পুর এলাকা। পাড়ার গলি তো বটেই, বড় রাস্তার পাশেও ইতিউতি ছড়িয়ে থাকে আবর্জনা। দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ হন বাসিন্দারা। তাঁদের দাবি, নিয়মিত সাফাই না হওয়ার কারণেই এই সমস্যা। পুরসভার আর্বজনা ফেলার জায়গাগুলি নিয়মিত পরিষ্কার হয় না বলেও অভিযোগ। পুরসভা সূত্রে খবর, এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতেই বাড়ি-বাড়ি গিয়ে আবর্জনা সংগ্রহের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। পুরসভা কর্তৃপক্ষ জানান, নির্দিষ্ট জায়গায় বাড়ি ও দোকানের আবর্জনা ফেলতে হবে। এ ছাড়া পুরসভার সাফাই কর্মীরা নিয়মিত বাড়ি ও দোকানে গিয়ে আবর্জনা সংগ্রহ করবেন। তার জন্য মাসে বাড়ি পিছু ২০ টাকা ও দোকান পিছু ২৫ টাকা নেওয়া হবে। যদিও জামুড়িয়া পুরসভায় পর্যাপ্ত সাফাইকর্মী সংখ্যা বেশ কম। ফলে, এই কাজ কী ভাবে হবে, সে নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
স্থানীয় ব্যবসায়ী অশোক সান্থালিয়া বলেন, “আবর্জনা ফেলার জায়গাগুলি প্রায় উপচে পড়ছে। পুরসভার উচিত জনবসতির কাছাকাছি কয়েকটি নতুন আবর্জনা ফেলার জায়গা তৈরি করা।” তাঁর প্রস্তাব, সবার আগে জোর দিতে হবে নিয়মিত নর্দমা সাফাইয়ে।
সিপিএম পরিচালিত জামুড়িয়া পুরসভার বিরুদ্ধে কাজ না করার অভিযোগ তুলে তৃণমূলের জামুড়িয়া ১ ব্লকের সভাপতি পূর্ণশশী রায়ের দাবি, “জামুড়িয়া হাটে ঢোকার সময় দুর্গন্ধে নাক ঢাকতে হয়। এলাকার অনেক বাড়িতে এখনও শৌচাগার নেই। সাফাইয়ের জন্য টাকা নেওয়ার আগে সেগুলিতে নজর দিক পুরসভা।” কিন্তু পুরসভা কাজ না করলে জেলা প্রশাসন ব্যবস্থা নিচ্ছে না কেন? ওই তৃণমূল নেতার দাবি, শহর সাফাইয়ের জন্য পুর কর্তৃপক্ষ প্রশাসনের কাছে নির্দিষ্ট আবেদন করলে নিশ্চয় সহযোগিতা করা হবে। ব্লক কংগ্রেস নেতা বিশ্বনাথ যাদবের আবার দাবি, দিন কয়েক আগে শহরের বেহাল পুর পরিষেবার খবর প্রকাশ হওয়ার পরেই বাধ্য হয়ে পুরসভা টাকার বিনিময়ে আবর্জনা সংগ্রহের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
পুরপ্রধান রাজশেখর মুখোপাধ্যায় অবশ্য বলেন, “বাড়ি ও দোকানগুলিতে গিয়ে আবর্জনা সংগ্রহের পরিকল্পনা বছর চারেক আগেও চালু ছিল। সেটি নতুন করে চালুর সিদ্ধান্ত হয়েছে। তা নিয়ে অযথা জলঘোলা করা হচ্ছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy