কাজী নজরুল ইসলামের ১১৫তম জন্মদিবস উপলক্ষে সেজে উঠেছে তাঁর জন্মভিটে চুরুলিয়া। আজ, সোমবার থেকে সেখানে চুরুলিয়া নজরুল অ্যাকাডেমির উদ্যোগে শুরু হচ্ছে সাত দিনের উৎসব। দেশ-বিদেশের নানা প্রান্ত থেকে শিল্পী, গবেষকেরা তাতে যোগ দেবেন বলে জানা গিয়েছে।
জামুড়িয়ার চুরুলিয়ায় যে বাড়িতে কবি জন্মেছিলেন, আজ, সোমবার ভোরে সেখান থেকে একটি পদযাত্রা বেরোবে। এলাকা ঘুরে পদযাত্রাটি কবিপত্নীর সমাধিস্থলে শেষ হবে। বিকেলে ৩৫তম উৎসবের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হবে। বীরভূমের বাসিন্দা, নজরুল গবেষক অধ্যাপক যুধিষ্ঠির পাল উদ্বোধন করবেন। রাজ্যের একাধিক মন্ত্রীরও সেখানে থাকার কথা রয়েছে বলে অ্যাকাডেমি সূত্রে জানা গিয়েছে। অ্যাকাডেমির তরফে আরও জানানো হয়, এ বার এই উৎসবে বাংলাদেশ থেকে ১১ জন শিল্পী ও নজরুল গবেষক আসছেন। অসমের শিলচর থেকেও কয়েক জন শিল্পী, গবেষক আসছেন। থাকছেন মুম্বই, দিল্লি ও অন্য প্রদেশের অতিথিরা। এ বার বাংলাদেশ থেকে আগত চার জনের হাতে নজরুল পুরস্কার তুলে দেওয়া হবে।
কবির জন্মদিন উপলক্ষে চুরুলিয়ায় এই উৎসব ঘিরে শিল্পাঞ্চলবাসীর উৎসাহের অন্ত নেই। কিন্তু উৎসবের আয়োজন করতে নাভিশ্বাস উঠে যায় বলে দাবি করেছেন নজরুল অ্যাকাডেমির সম্পাদক তথা কবির ভাইপো কাজী মাজাহার হোসেন। তাঁর অভিযোগ, “৩৫ বছর ধরে উৎসব করা হচ্ছে। কয়েক লক্ষ টাকা খরচ হয়। সরকারি অনুদান মেলে সামান্য। এলাকার মানুষের আর্থিক সহায়তাতেই চলছে এই উৎসব।” তিনি আরও বলেন, “যৎসামান্য যে অনুদান মিলত, তা-ও ২০১২ থেকে বন্ধ হয়ে গিয়েছে। এ বছরও আবেদন করে পাইনি।”
যে সব অতিথিরা আসেন, তাঁদের রাখা নিয়েই বেশি দুশ্চিন্তা অ্যাকাডেমি কর্তাদের। বেসরকারি অতিথিশালার ভাড়া মেটাতে তাঁদের অনেক খরচ হয়ে যায়। নজরুলের জন্মভিটের খুব কাছেই রয়েছে রাজ্য যুব কল্যাণ দফতরের একটি যুব আবাস। মাজাহার হোসেন বলেন, “আমরা রাজ্য সরকারের কাছে এই আবাসটি অতিথিদের রাখার জন্য চেয়েছিলাম। কিন্তু সরকার চিঠি দিয়ে আমাদের জানিয়েছে, আবাসটি দিতে পারবে না।” কেন আবাসটি দেওয়া হয়নি, তা খোঁজ নিতে গিয়ে জানা যায়, সম্প্রতি সেটি সংস্কার হয়েছে। তাই সেটির আবার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন সংশ্লিষ্ট দফতরের মন্ত্রী।
কাজী মাজাহার হোসেনের আরও দাবি, অ্যাকাডেমির সংগ্রহশালায় নজরুলের ব্যবহার্য জিনিসপত্র, তাঁর হস্তলিপি, পদ্মশ্রী পুরস্কার আরও যত্নে সংরক্ষণ করা উচিত। কিন্তু সে জন্য যে অর্থের দরকার, অ্যাকাডেমির একার পক্ষে তা ব্যয় করা সম্ভব নয়। মাজাহার হোসেন জানান, তাঁরা এর আগে বহু বার সরকারের কাছে এই আবেদন জানিয়েছেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে রাজ্যের মন্ত্রী এলে ফের সেই আবেদন করা হবে বলে জানান তিনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy