বিকাশ মণ্ডলের বাড়িতে ভাঙচুর। মৃত গৌতম সিংহ (ইনসেটে)। নিজস্ব চিত্র
ভরসন্ধ্যায় রাস্তায় দু’দল যুবকের হাতাহাতি, মারপিটের জেরে এক জনের মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। বুধবার সন্ধ্যায় জিটি রোডের উপরে বর্ধমান শহরের কাঁটাপুকুর মোড়ের ওই ঘটনায় আহত হন গৌতম সিংহ (২২)। বাদশাহি রোডের ওই বাসিন্দাকে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে সঙ্গে সঙ্গেই মারা যান তিনি। এর পরেই শহরের ১ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল নেতা বিকাশ মণ্ডল-সহ তিন জনের বাড়ি ভাঙচুর হয়। বিকাশবাবুও জখম হয়ে ওই হাসপাতালে ভর্তি।
বিরোধীদের অভিযোগ, এলাকা দখলকে ঘিরে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরেই এই খুন। যদিও এই ঘটনা অরাজনৈতিক বলে দাবি করেছে তৃণমূল। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় পুলিশ। ডিএসপি (হেড কোর্য়াটার) শৌভিক পাত্রের নেতৃত্বে এলাকায় টহল দেওয়া হয়। কয়েকজনকে আটকও করা হয়েছে। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কল্যাণ সিংহ রায় বলেন, ‘‘ঘটনাস্থলে পুলিশ গিয়েছে। তদন্ত চলছে।’’
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃত গৌতম সিংহ অনুষ্ঠানবাড়িতে ভিডিয়ো ক্যামেরার কাজ করতেন। তাঁর ঘনিষ্ঠদের দাবি, গৌতম ও তাঁর বন্ধু সোনু সিংহের সঙ্গে মোটরবাইকে ধাক্কা লাগা নিয়ে বচসা বাধে কয়েকজনের। মিটেও যায়। তাঁরা চলে আসেন কাঁটাপুকুর মোড়ে। অভিযোগ, ১৬ থেকে ২৫ বছর বয়সী অন্তত ৪০-৫০ জন মিলে সেখানে তাঁদের রাস্তায় ফেলে মারধর করতে শুরু করে। ছটফট করতে থাকা অবস্থায় স্থানীয় কয়েকজন গৌতমকে হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানেই চিকিৎসকেরা মৃত বলে জানান তাঁকে। ঘটনার পরেই বিকাশ মণ্ডলের বাড়ি ভাঙচুর করা হয় বলে অভিযোগ। লাঠির ঘায়ে মাথা ফাটে তাঁর। তাঁকে বাঁচাতে গিয়ে বৃদ্ধ মা সরস্বতী মণ্ডলও আহত হন বলে পরিজনেদের দাবি।
বিকাশবাবুর বৌদি মহুয়া মণ্ডলের দাবি, ‘‘ভাই (বিকাশ) বাড়ির দোতলায় বসে চা খাচ্ছিল, টিভি দেখছিল। সন্ধ্যা ৭টা নাগাদ প্রচুর ছেলে বাড়ির সামনে এসে ওর নাম ধরে চেঁচাতে থাকে। হাতে বাঁশ, রড ছিল। হঠাৎ ইট ছোড়া শুরু হয়। বাড়ির গেট ও দুই দরজা ভেঙে হুড়মুড় করে লোক ঢুকে ভাঙচুর শুরু করে।’’ বিকাশবাবুর দাবি, ‘‘ঘটনার বিন্দুবিসর্গ জানতাম না। বাড়িতে ছিলাম। হঠাৎ মুখ ঢাকা দুষ্কৃতীরা এসে ভাঙচুর চালায়। কিছুই বুঝতে পারছি না।’’
এলাকার তৃণমূল শ্রমিক ইউনিয়নের নেতা সুরেন্দ্র শর্মার যদিও দাবি, ‘‘রাজনৈতিক গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব থেকেই পরিকল্পিত ভাবে এই ঘটনা ঘটানো হয়েছে।’’ তিনি বলেন, ‘‘ক্ষোভের জেরে বিকাশের বাড়ি ভাঙচুর হয়েছে ঠিকই, বাড়ির আসবাবপত্রও ফেরত পাওয়া যাবে। কিন্তু মায়ের কোলে ছেলে কি ফিরবে!’’
বিজেপির জেলা সভাপতি সন্দীপ নন্দীর কটাক্ষ, ‘‘প্রকাশ্য রাস্তায় তৃণমূলের এক গোষ্ঠী আর এক গোষ্ঠীর লোকেদের মারধর করছে। খুবই দুঃখজনক ঘটনা।’’ ঘটনার সঙ্গে রাজনীতির যোগ নেই, দাবি করেছেন তৃণমূলের জেলা সাধারণ সম্পাদক নেতা খোকন দাস।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy