Advertisement
২৩ জানুয়ারি ২০২৫

স্ত্রীকে ‘খুন’ করে আত্মঘাতী যুবক

মাটির তৈরি ওই বাড়িতে গিয়ে দেখা গেল, অঝোরে কাঁদছেন অচিন্ত্যের মা ঊর্মিলাদেবী। ঘটনার কথা তিনিই জানান।

শোকার্ত নিহত বধূর মা। মঙ্গলবার মন্তেশ্বরে। নিজস্ব চিত্র

শোকার্ত নিহত বধূর মা। মঙ্গলবার মন্তেশ্বরে। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১১ ডিসেম্বর ২০১৯ ০১:৪২
Share: Save:

প্রৌঢ়া কাজে বেরিয়েছিলেন। ফিরে দেখেন, এক ঘরে পড়ে বৌমার দেহ। পাশেই, পড়ে রয়েছে আট মাসের নাতনি। অন্য ঘরে, ঝুলছেন ছেলে। মঙ্গলবার সকালে পূর্ব বর্ধমানের মন্তেশ্বরের উত্তরপাড়ার ঘটনা। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, স্ত্রী জবা সাঁতরাকে (২০) খুন করে আত্মঘাতী হন অচিন্ত্য সাঁতরা (২৬) নামে ওই যুবক। সম্ভবত, অচিন্ত্যই একরত্তির শিশুটিকেও আছাড় মারেন।

মাটির তৈরি ওই বাড়িতে গিয়ে দেখা গেল, অঝোরে কাঁদছেন অচিন্ত্যের মা ঊর্মিলাদেবী। ঘটনার কথা তিনিই জানান। তিনি জানান, বাড়িতে অচিন্ত্য, জবা, তাঁদের আট মাসের মেয়ে এবং বড় বৌমা বন্দনাদেবী থাকেন। এ দিন সকালে বাড়িতে ছিলেন না বন্দনাদেবী ও ঊর্মিলাদেবী। ঊর্মিলাদেবীর কথায়, ‘‘কয়েক ঘণ্টা পরে বাড়ি ফিরে দেখি, ঘরের মেঝেয় পড়ে রয়েছে জবার রক্তাক্ত দেহ। অদূরেই পড়ে কাতরাচ্ছে নাতনি। পাশেই চালাঘরের কাঠামো থেকে দড়িতে ঝুলছে ছেলে।’’ শিশুটিকে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ভর্তি করান পড়শিরা।

পরিবার সূত্রে জানা যায়, বছর দু’য়েক আগে অচিন্ত্যের সঙ্গে গ্রামেরই ধাওড়াপাড়ার বাসিন্দা জবার বিয়ে হয়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পড়শিদের একাংশ জানান, প্রায়ই ওই দম্পতির মধ্যে ঝগড়া হত। সোমবার সন্ধ্যাতেও দু’জনের অশান্তি হয়। মেয়ের জন্মের পরে বাপের বাড়ি চলে যান জবা। দিন পনেরো আগে মেয়েকে নিয়ে শ্বশুরবাড়ি ফেরেন জবা।

এ দিনের ঘটনার পরে নিহত বধূর বাবা টোটোন রায় পুলিশের কাছে দাবি করেন, বিয়ের পর থেকেই তাঁর মেয়ের উপরে অত্যাচার করতেন অচিন্ত্য। নিহত বধূর মা মিঠুদেবী বলেন, ‘‘সব শেষ হয়ে গেল! জামাই এসেছিল বলে মেয়েটাকে শ্বশুরবাড়িতে পাঠিয়েছিলাম। মেয়েটাকে রেয়াত করল না। নাতনিটাকেও আছাড় মেরেছে।’’

কিন্তু কেন এই ঘটনা, তা নিয়ে ধন্দ রয়েছে। পড়শিদের একাংশের দাবি, বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক রয়েছে স্ত্রীর, এমন ‘সন্দেহের’ বশেই এই ঘটনা ঘটিয়ে থাকতে পারেন অচিন্ত্য। প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশের অনুমান, প্রথমে বাঁশ জাতীয় কিছু দিয়ে ওই মহিলাকে মাথায় আঘাত করেন অচিন্ত্য। তার জেরেই মৃত্যু কি না, ময়না-তদন্তের রিপোর্ট পেলে তা স্পষ্ট হবে। দেহ দু’টি ময়না-তদন্তের কালনা মহকুমা হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ধ্রুব দাস বলেন, ‘‘ঘটনাটি নিয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Crime Murder Police
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy