Advertisement
২৫ নভেম্বর ২০২৪
crime

আদিবাসী বধূকে ‘গণধর্ষণ’

পূর্বস্থলী ১ ব্লকের নাদনঘাট পঞ্চায়েতের শাঁখরা গ্রামের ওই বধূ জানান, তাঁর স্বামী ডেকরটর্সের কাজকর্ম করেন।

প্রতীকী ছবি

প্রতীকী ছবি

নিজস্ব সংবাদদাতা
নাদনঘাট শেষ আপডেট: ১৫ অক্টোবর ২০২০ ০০:৪৫
Share: Save:

আদিবাসী বধূকে রাতে বাড়ি থেকে টেনে নিয়ে গিয়ে গণধর্ষণের অভিযোগ উঠল পূর্ব বর্ধমানের নাদনঘাটে। বুধবার সকালে বছর কুড়ির ওই তরুণীকে কালনা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। পুলিশ জানায়, ঘটনায় জড়িত সন্দেহে ইতিমধ্যে এক জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

পূর্ব বর্ধমানের পুলিশ সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘হাসপাতালের চিকিৎসককে ওই বধূ ঘটনার কথা জানানো পরেই বিষয়টি আমাদের নজরে আসে। হাসপাতালে গিয়ে জবানবন্দি নেওয়ার পরে, গণধর্ষণের মামলা রুজু করা হয়েছে। এক জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আর এক জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।’’

পূর্বস্থলী ১ ব্লকের নাদনঘাট পঞ্চায়েতের শাঁখরা গ্রামের ওই বধূ জানান, তাঁর স্বামী ডেকরটর্সের কাজকর্ম করেন। মঙ্গলবার রাতে তিনি কাজ করতে অন্যত্র গিয়েছিলেন। তরুণীর অভিযোগ, রাতে শৌচাগারে বেরনোর জন্য ঘর থেকে বেরিয়ে টর্চের আলো পড়তে দেখে উঠোনে নামেন তিনি। তখনই কয়েকজন এসে তাঁর মুখে কাপড় বেঁধে কিছুটা টেনেহিঁচড়ে ও তার পরে চ্যাংদোলা করে ধানের জমিতে নিয়ে যায়। দুষ্কৃতীদের দলে এক মহিলা-সহ চার জন ছিল। নির্যাতিতার অভিযোগ, দু’জন তাঁকে ধর্ষণ করে। কোনওমতে তাদের হাত থেকে ছাড়া পেয়ে তিনি বাড়ি আসেন।

অ্যাসবেস্টসের ছাউনি দেওয়া তিন কামরার বাড়িতে বাস তরুণীর পরিবারের। তাঁর শ্বশুর এ দিন বলেন, ‘‘রাত ১১টা নাগাদ আমরা খেয়াল করি, বৌমা বাড়িতে নেই। আশপাশে খোঁজ করেও দেখা যায়নি। কিছুক্ষণ পরে বাড়ির পিছনে জমির দিক থেকে বৌমাকে আসতে দেখা যায়। কাঁদতে কাঁদতে এসে জানায়, ওকে তুলে নিয়ে গিয়ে নির্যাতন করা হয়েছে।’’ পরিবার জানায়, অসুস্থ বোধ করছে জানানোয় বধূকে এ দিন সকালে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তরুণীর স্বামী বলেন, ‘‘আমি বাড়িতে ছিলাম না। খবর পেয়ে সকালে সোজা হাসপাতালে আসি। আমি চাই, দোষীরা শাস্তি পাক।’’

পুলিশ জানায়, ঘটনায় জড়িত সন্দেহে পাশের মুন্ডুমালা গ্রামের ডাক্তার হেমব্রম নামে এক যুবককে গ্রেফতার করা হয়েছে। তরুণীর পরিজনের দাবি, ওই যুবককে তাঁরা চেনেন না। প্রতিবেশী নবকুমার বন্দ্যোপাধ্যায়, আনন্দ ঘোড়ুইদের প্রতিক্রিয়া, ‘‘গ্রামে এ রকম ঘটনা আগে ঘটেনি। আমরা চাই, প্রকৃত সত্য সামনে আসুক।’’

এ দিন বিকেলে নির্যাতিতার বাড়িতে যায় তৃণমূলের এক প্রতিনিধিদল। দলের রাজ্যের অন্যতম মুখপাত্র দেবু টুডু, জেলা পরিষদ সদস্য মিঠু মাঝি, পূর্বস্থলী ১ ব্লক তৃণমূল সভাপতি নবকুমার রায়, পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি দিলীপ মল্লিক, কর্মাধ্যক্ষ পরিমল দেবনাথ, নাদনঘাটের প্রধান খয়রাত সাহানারা বধূর পরিবারের সঙ্গে কথা বলেন। পরে দেবুবাবু দাবি করেন, ‘‘যারা এই ঘটনায় জড়িত, তারা উত্তরপ্রদেশের মতো কাণ্ড ঘটানোর চেষ্টা করেছে। পুলিশ কড়া ব্যবস্থা নিচ্ছে। আমরা পরিবারটির পাশে আছি।’’ বিজেপির রাজ্য কমিটির সদস্য রাজীব ভৌমিকের পাল্টা বক্তব্য, ‘‘শাসকদল ও পুলিশ এই ঘটনায় সত্য চাপা দেওয়ার চেষ্টা করছে, নিরপরাধদের ধরার চেষ্টা করছে। আমরাও চাইব, প্রকৃত ঘটনা সামনে আসুক।’’

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন বিকেলে হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাওয়ার পরে বধূ নান্দাই এলাকায় বাপের বাড়িতে গিয়েছেন। তদন্তে সব দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

অন্য বিষয়গুলি:

crime rape
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy