দোকান ‘সিল’ করে দেওয়া হচ্ছে লছিপুরে। নিজস্ব চিত্র।
রাজ্যের প্রত্যন্ত এলাকা, এমনকি ভিন্-দেশ থেকেও পশ্চিম বর্ধমানের লছিপুরের যৌনপল্লিতে নাবালিকা ও মহিলাদের আনা হয় বলে অভিযোগ করেছেন যৌনকর্মীদের একাংশ। এই পরিস্থিতিতে এই মহিলাদের অনেক সময়েই প্যান, আধার এবং ভোটার কার্ডও তৈরি করে দিচ্ছে ‘দালালেরা’— এমনই অভিযোগ করেছেন কুলটির বিজেপি বিধায়ক অজয় পোদ্দার। তাঁর কথায়, ‘‘দীর্ঘদিন ধরেই এই বিষয়টি নিয়ে আমরা সরব। শাসক দলের মদত ছাড়া, এটা সম্ভব নয়। বিষয়টি বিধানসভার প্রশ্নোত্তর পর্বেও তুলব।’’ অভিযোগ অস্বীকার করেছে তৃণমূল।
ঘটনাচক্রে, ২০১৮-য় প্রশাসন লছিপুরে অভিযান চালিয়েছিল। সে সময়ে তিন জন বাংলাদেশি পুরুষকে পাকড়াও করেছিল পুলিশ। তবে তাঁদের কাছে বৈধ পাসপোর্ট ছিল। পুলিশ জানিয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে নাবালিকা পাচারের মামলা দায়ের হয়। এর পরে, ওই বছরেই একই যৌনপল্লি থেকে ধরা পড়েন এক বাংলাদেশি মহিলা। অন্য আরও এক জন বাংলাদেশি মহিলার খোঁজ মেলেনি। ধৃত মহিলা এখনও আসানসোল সংশোধানাগারে বিচারাধীন বন্দি হিসেবে রয়েছেন বলে পুলিশ জানিয়েছে।
কুলটি পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান, তৃণমূল নেতা বাচ্চু রায় সংবাদমাধ্যমের একাংশের কাছে জানান, দালালেরা ওই পাচার হয়ে আসা নাবালিকা ও মহিলাদের স্ত্রী বা নিকটাত্মীয় পরিচয় দিয়ে তাদের জন্য ‘রেসিডেন্সিয়াল সার্টিফিকেট’ জোগাড় করে। এই শংসাপত্র থাকলে বিভিন্ন ধরনের পরিচয়পত্র ও কার্ডগুলি বানাতে অসুবিধা হয় না।
কিন্তু কী ভাবে মেলে এই শংসাপত্র? যৌনপল্লির কয়েকজনের সূত্রেই জানা গেল, পাঁচ থেকে দশ হাজার টাকার বিনিময়ে শংসাপত্র কেনে দালালেরা। ঘটনাচক্রে, পুর-এলাকায় সাধারণত কাউন্সিলরেরাই ‘স্থানীয় বাসিন্দা’, এই শংসাপত্র দিয়ে থাকেন। পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, শংসাপত্র দেওয়ার আগে সংশ্লিষ্ট আবেদনকারী তাঁর পরিচিত কি না, কার সঙ্গে কোন ঠিকানায় আবেদনকারী বাস করেন, তা ভাল ভাবে যাচাই করতে হয় কাউন্সিলরকে। বিজেপির অভিযোগ, এই যাচাই অনেক ক্ষেত্রেই করা হয় না।
বিধায়ক অজয়বাবু বলেন, ‘‘এই এলাকাটি পুরসভার ৫৯ নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্গত। দীর্ঘদিন ধরে এখানে জিতেছে তৃণমূল। অর্থাৎ, বোঝাই যাচ্ছে, গোটা প্রক্রিয়াটির সঙ্গে তৃণমূলের লোকজন জড়িত।’’ যদিও ওই ওয়ার্ডের বিদায়ী তৃণমূল কাউন্সিলর মীর হাসিম বলেন, ‘‘রেসিডেন্সিয়াল শংসাপত্র দেওয়ার ক্ষেত্রে আমি অত্যন্ত সাবধানতা অবলম্বন করি। বারবার যাচাই করি। বিজেপি ভিত্তিহীন অভিযোগ করছে।’’
অভিযোগ প্রসঙ্গে আসানসোল-দুর্গাপুরের পুলিশ কমিশনার অজয়কুমার ঠাকুর বলেন, ‘‘সামগ্রিক ভাবেই বিষয়টি নিয়ে খোঁজখবর করা হচ্ছে।’’
এ দিকে, সম্প্রতি লছিপুরে অভিযান চালানোর সময় দেখা যায়, রাজ্যের কোভিড-বিধি ভেঙে রাত ৯টার পরেও দোকানপাট খোলা রয়েছে। পুলিশ কমিশনার বলেন, ‘‘শনিবার শতাধিক দোকান ‘সিল’ করে দেওয়া হয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy